মার্কিন যে নির্বাচনের ফল পেতে ৪ মাস লেগেছিল


মঙ্গলবার (০৩ নভেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৫ দিন অতিবাহিত হতে চললেও এখনও ফলাফল আসেনি। জানা যায়নি কে হতে যাচ্ছেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সময় যত গড়াচ্ছে আগ্রহের পারদ ততোই বাড়ছে। যা মাঝে মাঝে বিরক্তির কারণও হচ্ছে।
মাত্র ৫ দিনের অপেক্ষায় যারা অতিষ্ঠ তারা হয়তো জানেন না ২০০২ সালের নির্বাচনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট চূড়ান্ত হতে কতদিন লেগেছিল।
নির্বাচনের ৩৫ দিন পর চূড়ান্ত হয় সেই নির্বাচনে কে জয়ী হয়েছেন। জয়ী হয়েছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। যা নির্ধারণ করেন মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট। একবারই এমন ঘটনা ঘটে মার্কিন রাজনীতি এবং নির্বাচনের দীর্ঘ ইতিহাসে।
৭ নভেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ডেমোক্র্যাট আল গোর জনপ্রিয় ভোটে জয় পান। ইলেকটোরাল ভোট পান ২৬৭টি। রিপাবলিকান বুশ পেয়েছিলেন ২৪৬ ভোট।
শুধুমাত্র ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ২৫টি ভোট বাকি ছিল। সেখানে দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান এত কম ছিল, যে সপ্তাহের পর সপ্তাহ জুড়ে ভোট গণনা চলছিল। সেই সময় ফ্লোরিডার গভর্নর ছিলেন জর্জ বুশের ভাই জেব বুশ। ২৬ নভেম্বর তিনি ঘোষণা দেন, ফ্লোরিডার ইলেকটোরাল ভোট জর্জ বুশের পক্ষে যাচ্ছে।
পুনরায় গণনার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট ৫-৪ বিচারপতির মতামতের ভিত্তিতে ভোট পুনঃগণনা বন্ধের আদেশ দিয়ে বুশকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত করার রায় দেন। চূড়ান্ত ফলাফল পেতে বুশ- গোরের এ অপেক্ষাও কিন্তু দীর্ঘতম নয়।
১৮৭৬ সালের নির্বাচনের ফলাফল পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছিল চার মাস। যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একমাত্র রেকর্ড।
৭ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফল আসে পরের বছরের অর্থাৎ ১৮৭৭ সালের ২ মার্চ। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের কয়েকদিন আগে।
রিপাবলিকান রাদারফোর্ড হেইস ইলেকটোরাল ভোট নিশ্চিত করে বিজয় ঘোষণা করেন। তখন ডেমোক্র্যাট মনোনীতি প্রার্থী ছিলেন স্যামুয়েল টিলডেন। ওই নির্বাচনকে মার্কিন ইতিাহসের সবচেয়ে বিতর্কিত নির্বাচন বলা হয়।
নির্বাচনে টিলডেন প্রতিপক্ষ হেইসের চেয়ে ২ লাখের বেশি ভোট পান। ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পান ১৮৪টি। হেইস পান ১৬৫টি।
নির্বাচিত হওয়ার জন্য টিলডেনের দরকার ছিল এক ভোট। হেইসের দরকার ছিল ২০টি ভোট। তখন ৪ রাজ্যের ২০টি ইলেকটোরাল ভোট ঘোষণা বাকি। দু’দলই দাবি করে বসলো, সবভোট তাদের প্রার্থী পেয়েছে।
সংকট সমাধানের জন্য ১৫ সদস্যের নির্বাচনী কমিশন গঠন হয়। কংগ্রেসের উভয় কক্ষের পাঁচজন করে প্রতিনিধি সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচজন, কমিশনের সদস্য হলেন।
কমিশনে কংগ্রেসের সদস্য আর বিচারপতি মিলিয়ে রিপাবলিকান হয়ে গেছেন আটজন। ডেমোক্র্যাট সাতজন।
শেষ পর্যন্ত কমিশনের ৮-৭ ভোটের ব্যবধানে ২০টি ইলেকটোরাল ভোট হেইসকে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ১৮৫-১৮৪ ভোটের ব্যবধানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন রাদারফোর্ড বি হেইস।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
