ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর নেই
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর নেই।
রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় তিনি না ফেরার দেশে পারি জমান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছে ৮১ বছর।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দীর্ঘদিন ধরেই কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন।
কয়েক দিন আগে তার বার্ধক্যজনিত জটিলতাগুলো খারাপের দিকে যায়।
এমন অবস্থায় তাকে গত বুধবার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত রোববার তার চিকিৎসায় একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এর প্রধান সমন্বয়কারী ছিলেন অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মামুন মোস্তাফী।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. মামুন মোস্তাফী জানান, অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানাচ্ছি আমাদের গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ আর নেই। আপনারা তার আত্মার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী
জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন ভাস্কুলার সার্জন। তিনি মূলত জনস্বাস্থ্য চিন্তাবিদ।
১৯৭১ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে ভারতের আগরতলায় গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে তা পরিচালনা করেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর সেই হাসপাতালের নামেই একটি প্রতিষ্ঠান গড়তে চেয়েছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে নাম ঠিক করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
হাসপাতালের পাশাপাশি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানিও গড়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
১৯৮২ সালে দেশে প্রথমবারের মতো ঔষধ নীতি প্রণয়নেও তার ভূমিকা ছিল।
১৯৮২ সালের ওষুধ নীতি দেশকে ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে, ওই নীতি প্রণয়নের অন্যতম কারিগর ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বহির্বিশ্বে তার পরিচয় বিকল্প ধারার স্বাস্থ্য আন্দোলনের সমর্থক ও সংগঠক হিসেবে।
অবিভক্ত ভারতে ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম। তার বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরীর শিক্ষক ছিলেন বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন।
হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী কলকাতা ও ঢাকার কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। মা–বাবার দশ সন্তানের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সবার বড়।
জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর সেনানী ও সংগঠন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী চট্টগ্রামের রাউজানে এক মুসলিম পরিবারে তার জন্ম । ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর জন্ম নেয়া মানুষটি ব্যক্তিগত যশখ্যাতি ও সমৃদ্ধির জীবনকে পেছনে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের সময় মাটির টানে দেশে ফিরে এসে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত লড়াই করে গেছেন। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি নিরব লড়াই চালিয়ে যান।
অন্যদিকে দেশে রাজনীতির সুস্থধারা ফিরিয়ে আনতেও নিজের অবস্থান থেকে আওয়াজ তুলেছেন বার বার। আর এসব কারণে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তার বেশ জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তার অবদানের কথা অজানা ছিল তাদের কাছেও তিনি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
বাংলাদেশের জন্য অন্তপ্রাণ এই মানুষটির বাবা ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। রাজধানী ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেছেন তিনি।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং ১৯৬৭ সালে বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে ভাস্কুলার সার্জারিতে এফআরসিএস প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
জানা যায়, তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর সেনানী ও সংগঠক জাফরুল্লাহ চৌধুরীর লন্ডনে রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়ার সময় শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধ।
৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যার প্রতিবাদে জনসম্মুখে পাকিস্তানের পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলেন। তারপর বৃটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে ‘রাষ্ট্রবিহীন নাগরিকের’ প্রত্যয়নপত্র নিয়ে সংগ্রহ করেন ভারতীয় ভিসা।
দেশের টানে বিলেতের সুখ-সুবিধা ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে লন্ডন থেকে ভারতে এসে আগরতলার মেলাঘরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন।
ভারত থেকে দেশে এসে যোগ দেন সম্মুখ সমরে। গেরিলা যোদ্ধা থেকে হয়ে উঠেন রণাঙ্গনের চিকিৎসক। যুদ্ধাহতদের জন্য খোলেন ফিল্ড হাসপাতাল।
মহান মুক্তিযুদ্ধ শেষে দেশ গড়তে নিজেকে নিয়োজিত করেন বৃটেনে প্রথম বাংলাদেশি সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিডিএমএ)’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের বিষয়ে একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, আমার পাশে আমার মা থাকবে না, সে দেশে থেকে লাভ আছে? আমার মা বাংলাদেশে ছিল, আমি বিলেতে ছিলাম। আমার মায়ের নির্দেশ ছিল দেশ রক্ষা করো। সে নির্দেশ মেনে আমরা তিন ভাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি।
যুদ্ধে আহত মুক্তিকামী মানুষকে সেবা দিতে বন্ধু ডা. এমএ মবিনের সহায়তায় ডা. জাফরুল্লাহর গড়ে তোলা ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট ‘বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পেতেন যুদ্ধে আহতরা।
শুধু তাই নয়, তিনি স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক নারীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য জ্ঞান দান করেন। যা দিয়ে তারা যুদ্ধে আহত রোগীদের সেবা করতেন। ত্রিপুরার ওই ফিল্ড হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে অগণিত মুক্তিযোদ্ধা ফিরেছিলেন যুদ্ধের ময়দানে। তার এই অভূতপূর্ব সেবা পদ্ধতি পরে বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল পেপার ‘ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত হয়।
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীকে বহনকারী যে হেলিকপ্টারটি হামলার শিকার হয়েছিল তাতে অন্যদের মধ্যে ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করতেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী নাগরিক অধিকার আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন। অসুস্থ শরীরেও তিনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। তাঁর বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। মা–বাবার দশ সন্তানের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সবার বড়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার ইনস্টিটিউট থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। ঢাকে কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ভর্তি হন। সেই সময় তিনি বাম রাজনীতিতে যুক্ত হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সে সময় হাসপাতালের অনিয়ম–দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৬৪ সালে এমবিবিএম পাস করে যুক্তরাজ্যে চলে যান। সেখানে তিনি সাধারণ সার্জারি ও ভাস্কুলার সার্জারিতে প্রশিক্ষণ নেন।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় ভারতের ত্রিপুরায় বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল গড়ে তোলায় বিশেষ ভূমিকা ছিল জাফরুল্লাহ চৌধুরীর। যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত চিকিৎসকদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সংগঠিত করা, হাসপাতালের জন্য ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ করার ক্ষেত্রেও তাঁর বড় ভূমিকা ছিল। যাদের আগে কোনো প্রশিক্ষণ ছিল না এমন নারীরা কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েই হাসপাতালে সেবার কাজ করেছিলেন।
বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতালের সেই অভিজ্ঞতা জারুল্লাহ চৌধুরী কাজে লাগিয়েছিলেন ১৯৭২ সালে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলার ক্ষেত্রে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা যে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে দেওয়া সম্ভব–তা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রমাণ করে। সেই অভিজ্ঞতার কথা বিশ্বখ্যাত চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটে প্রবন্ধ আকারে প্রকাশিত হয় ১৯৭৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। তারপর থেকে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ধারণাটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পায়। জাফরুল্লাহ চৌধুরী মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ট্রাস্টি হিসেবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান করতে চাইতেন সহজভাবে। তিনি বিশ্বাস করতেন, চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য সেবার জন্য সব ক্ষেত্রে উচ্চতর ডিগ্রিধারী বা মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা চিকিৎসকের দরকার নেই। স্বল্প শিক্ষিত মানুষকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়েও সেবা পাওয়া সম্ভব। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশে প্রথম স্বাস্থ্য বিমা চালু হয়। জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার কোনো উদ্যোগকে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করতে চাননি। তিনি চেয়েছিলেন, গণস্বাস্থ্যের মাধ্যমে গড়ে তোলা সফল স্বাস্থ্য উদ্যোগ সরকারই যেন সারা দেশে প্রয়োগ করে বা ছড়িয়ে দেয়।
স্বাধীনতার পর দেশের ওষুধের বাজারে বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানির একচেটিয়া আধিপত্য ছিল। তখন বাজারে চার হাজার ধরনের ওষুধ ছিল, তার প্রায় সবই বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো। ওষুধ ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের সামরিক শাসনামলের ১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধ নীতি পরিস্থিতি পাল্টে দেয়। জাতীয় ওষুধ নীতি দেশি কোম্পানিগুলোকে ওষুধ উৎপাদনের সুযোগ তৈরি করে দেয়, পাশাপাশি দেশে তৈরি হওয়া ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি করা বন্ধ হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ একটি ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ। দেশের মানুষকে স্বল্প মূল্যে ওষুধ দেওয়ার জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ওষুধ কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করে।
বৈশ্বিকভাবে বিকল্প স্বাস্থ্য আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভূমিকা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতি বছর ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলি আয়োজন করে। এর বিকল্প হিসেবে কয়েক বছর পর পর আয়োজন করা হয় পাবলিক হেলথ অ্যাসেম্বলি বা জনগণের স্বাস্থ্য সম্মেলন। এটা আয়োজন করে পিপলস হেলথ মুভমেন্ট নামের একটি বৈশ্বিক সংগঠন। এই সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে জীবনের নানা পর্বে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার বা সম্মান পেয়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ১৯৭৭ সালে তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয় সরকার। ফিলিপাইনের র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পান ১৯৮৫ সালে। ১৯৯২ সালে সুইডেন থেকে তাঁকে দেওয়া হয় রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড। কানাডার ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অব ন্যাচারাল মেডিসিন ২০০৯ সালে দেয় ডক্টর অব হিউম্যানিটেরিয়ান উপাধি। যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি থেকে ২০১০ সালে দেওয়া হয় ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক হেলথ হিরোজ অ্যাওয়ার্ড। যুক্তরাজ্যের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ ২০২২ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ‘এনআরবি লিবারেশন ওয়ার হিরো ১৯৭১’ পুরস্কার দেয়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ৫০টির বেশি দেশে বিভিন্ন সম্মেলন বা সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে অংশ নেন। একাধিক দেশকে জাতীয় ওষুধ নীতি তৈরিতে পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশনার মধ্যে একটির নাম ‘রিসার্চ: অ্যা মেথড অব কলোনাইজেশন’। এটি ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। এরপর এটি বাংলা ছাড়াও ফরাসি, জার্মান, ইতালি, ডাচ, স্পেনিস ও একাধিক ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ হয়েছে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবনের শেষ বছরগুলোতে রোগ–ব্যধির সঙ্গে লড়তে হয়েছে। জটিল কিডনি রোগে ভুগছিলেন। মানুষ যেন সহজে প্রতিস্থাপনের জন্য কিডনি পেতে পারেন সেজন্য তিনি আইনের পরিবর্তন চেয়েছিলেন। পাশাপাশি তাঁর হাতে গড়ে ওঠা গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ১০০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট তৈরি করেছিলেন। ওই ইউনিটে নিজেই ডায়ালাইসিস করাতেন। ইউনিটটি তিনি করেছিলেন কম মূল্যে সাধারণকে মানুষকে সেবার সুযোগ করে দিতে। একটি ক্যানসার হাসপাতাল করার ইচ্ছাও তাঁর ছিল।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)