কয়েক দিনের ভারী বর্ষায় সাতক্ষীরার নিম্নঞ্চল প্লাবিত, জনজীবন বিপর্যয়, সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত
আবু সাঈদ, সাতক্ষীরা : মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের ফলে গত এক সপ্তাহ টানা ভারী বৃষ্টিতে সাতক্ষীরার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিন্ম আয়ের মানুষগুলো। বিশেষ করে দৈনন্দিন উপার্জনের উপর নির্ভরশীল দরিদ্র পরিবারগুলো নিদারুন কষ্টে পড়েছেন।
বৃষ্টির কারণে উপার্জন বন্ধ থাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। বৃষ্টিতে আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি বিভাগ।
গত সোমবার (২ অক্টোবর) থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। যা আরও দুই এক দিন চলবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।
অপরদিকে, বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়লে আমন ধানের ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। অন্যদিকে, মানুষের উপস্থিতি কম থাকায় বেঁচা বিক্রি কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সাতক্ষীরা পৌরসভাসহ সদর উপজেলার ধুলিহর, ব্রহ্মরাজপুর, লাবসা, ফিংড়ি, বল্লী, ঝাউডাঙ্গাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল বিলগুলোতে সদ্য রোপা আমন ও বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। বেশ কিছু মাছের ঘের ও পুকুর ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে বেশ কিছু এরঅকার ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট।সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব ও জেলা গণফোরামের সভাপতি আলীনুর খান বাবুল জানান, টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে পৌর এলাকার কামালনগর, ইটাগাছা, পলাশপোল, বাঁকাল, খড়িবিলা, বদ্দিপুর কলোনীসহ পৌরসভার বিভিন্ন স্থানের নিম্নাঞ্চল।পানি অপসারণের কোনো পথ না থাকায় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে পৌরসভার এসব নিম্নাঞ্চল। পানিতে ভেসে গেছে বেশ কিছু মাছের ঘের ও পুকুর। নিমজ্জিত হয়েছে নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট।তিনি আরও জানান, নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে পানি অপসারণের দাবিতে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের আহবান জানানো হয়েছে। ভ্যানচালক শহিদুল ইসলাম জানান, রোজগার করতে না পারলে সংসার চলে না। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ভ্যান নিয়ে শহরে বের হলেও কেউ ভ্যানে উঠেনি। ফলে খালি হাতেই বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। বৃষ্টি হলে যাত্রীরা কেউ ভ্যানে উঠতে চান না। সকলেই ইজিবাইকে ওঠেন। বৃষ্টির কারণে আমরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।
দিনমজুর হাফিজুল ইসলাম, আবুল খায়ের বলেন, প্রতিদিন সকালে সাতক্ষীরা শহরের পাকাপুলের মোড়ে গিয়ে কাজের জন্য বসে থাকি। সেখান থেকে কাজের চুক্তিতে কাজ করি জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে গত কয়েক দিন ধরে কেউ কাজে নিতে আসছেন না। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছি আমরা।সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, বৃষ্টির কারণে এবার শীতকালীন ফসল ভালো হবে না। তবে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়লে আমন ধানের বেশ ক্ষতি হবে।সাতক্ষীরা জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন বলেন, গত ৪ দিনে সাতক্ষীরায় ৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার থেকে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলে তিনি আরও জানান।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)