‘জোট-মহাজোট আর করতে চাই না’ : জাপা মহাসচিব
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, আমরা জোট-মহাজোট ইত্যাদি আর করতে চাই না। এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে চাই। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সব প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। সঠিকভাবে ভোট হলে আমরা যদি একটি আসনও না পাই তাতে কোনো আপত্তি নেই। যে দল আসন বেশি পেয়ে সরকার গঠন করবে, আমরা তাদের সহযোগিতা করব।
তিনি আরও বলেন, তফসিল ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের একটি রুটিন কাজ। এর সঙ্গে আমাদের নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়টা নির্ভর করে পরিবেশের ওপর।
রোববার বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে গণমাধ্যকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে মো. মুজিবুল হক চুন্নু এসব কথা বলেন।
ভোটাররা ভোট দিতে পারবে- এরকম আস্থা এখনো নেই জানিয়ে তিনি বলেন, এ আস্থাটা পেলে আমরা নির্বাচনে যাব। আমরা জনগণের দাবিটা প্রাধান্য দিচ্ছি। আর আমাদের দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক (রওশন এরশাদ) কার সঙ্গে আলাপ করলেন, কে কী বলল, সেটা আমরা আমলে নিচ্ছি না।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ জিম্মি অবস্থায় আছে- এমন মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে মানুষ চেষ্টা করছে। সব দল নির্বাচন করতে পারলে এ সমস্যার সৃস্টি হতো না। আমরা সরকারকে বারবার বলেছি একটা পরিবেশ তৈরি করুন। আলোচনায় সবাই আসুক। কিন্তু সরকার আহ্বান করল না, যারা আন্দোলন করছে তারাও ছাড় দিয়ে কথা বলল না।
মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমরা সরকার পদত্যাগ করে চলে যাক এটা চাই না। আবার সরকারকে বাধ্য করবো, এটাও চাই না। আমরা মাঝামাঝি পথে চাই, যে সংবিধানের আলোকে একটা পথ বের করা হোক যাতে সবাই নির্বাচনে আসে। ভোটাররা ভোট দিতে পারবে এ আস্থা আমাদের নেই। আস্থা পেলেই আমরা ভোটে যাব। তিনি বলেন, একারণে এখনো আমরা দ্বিধায় আছি। নির্বাচনে যাবো কি না, যাওয়া ঠিক হবে কি না, জনগণের কী অবস্থা। এ সংশয় থেকে বের হতে পারিনি। যার কারণে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগছে।
তিনি বলেন, আমরা আগেও বলে এসেছি যে, বর্তমানে দেশের যে অবস্থা- সরকারি দল বলছেন তারা নির্বাচন করবেনই ক্ষমতায় থেকে। অন্যদিকে বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দল বলছে সরকার পদত্যাগ না করলে তারা নির্বাচনে আসবে না। তারা বিভিন্ন কর্মসূচিও দিচ্ছে। হরতাল, অবরোধ, অগ্নিসংযোগ, বাস পোড়ানোসহ আইনশৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার মতো কর্মকাণ্ড ঘটছে। সারাদেশের মানুষ জিম্মি অবস্থায় আছে। মানুষ এ ধরনের অনিশ্চিত ও শঙ্কা থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করছে। সব দল ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটা নির্বাচন করতে পারলে এ ধরনের সমস্যা ছিল না।
মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জাতীয় পার্টি তৃতীয় বৃহত্তম দল। আমাদের চেয়ারম্যান বারবার বলেছেন যে, একটা পরিবেশ না হলে নির্বাচনে কিভাবে যাব। নির্বাচনে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে এরকম একটা আস্থা যদি মানুষের না থাকে তাহলে কিভাবে যাব। আমরা চাই দেশে একটা স্থিতিশীল অবস্থা আসুক। এ ধরনের মারামারি কাটাকাটি না হোক।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সাক্ষাতের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা একটা সৌজন্য সাক্ষাৎ। আরপিও অনুযায়ী দলের নামে প্রতীক বরাদ্দ হয়। নির্বাচনে দলের প্রার্থীদের মনোনয়নে চেয়ারম্যান বা মহাসচিব সাইন করেন। আমরাও জানিয়েছি ইসিকে আমাদের মনোনয়নে সাইন করবেন পার্টির চেয়ারম্যান। তাই আইন অনুযায়ী জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতি বরাদ্দের একমাত্র মালিক গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিতে কোনো দ্বদ্ব নেই। সারা দেশের সাংগঠনিক কাঠামোর একটি লোকেরও বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা নেই। আপনারা যাদের (রওশন এরশাদপন্থি) মিন করছেন তারা এ দলের সদস্য না, বহিষ্কৃত। একজন (রওশন এরশাদ) শুধু আমাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তিনি আমাদের শ্রদ্ধার পাত্র। তিনি প্রধান পৃষ্ঠপোষক, তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়ে তার কোনো এখতিয়ার নেই। উনি অসুস্থ। উনার স্বাভাবিক জ্ঞানটা নেই। উনাকে কিছু লোক বিভ্রান্ত করছে। উনি ইসিতে চিঠি দিয়ে বলেছেন যে, মহাজোটের সঙ্গে জোট করে নির্বাচন করবেন। কার সঙ্গে করবেন- আওয়ামী লীগের সঙ্গে। কিন্তু আওয়ামী লীগতো বলে নাই জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট করবে।
মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, চিঠি দেওয়ার পর আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদকে ফোন দিয়েছিলাম। উনি বললেন, আমি বুঝি নাই এমনি দিয়ে দিয়েছি। কয়েকটা লোক ওনার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাকে ব্যবহার করছে ব্যক্তি স্বার্থসিদ্ধির জন্য। উনি কার সঙ্গে আলাপ করলেন, কে কী বললো সেটা আমরা আমলে নিচ্ছি না।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)