রমজানে প্রথম ১০ দিন প্রাথমিক, ১৫ দিন মাধ্যমিক স্কুল খোলা
রমজানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ রাখতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
এর ফলে রমজানে প্রথম ১০ দিন প্রাথমিক ও ১৫ দিন মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
এর আগে সোমবার রমজানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ রাখতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত না করে বিষয়টি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ।
সোমবারের শুনানিতে এ কে এম ফয়েজ বলেন, রমজান মাস পবিত্র। করোনার সময় দুই বছর সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। রমজানে ১০-১৫ দিন স্কুল বন্ধ রাখলে পড়ালেখার কোনো ক্ষতি হবে না। বরং খোলা রাখলে যানজটের সৃষ্টি হবে, অভিভাবকরা সমস্যায় পড়বেন। এ ছাড়া স্কুল বন্ধ রাখতে অভিভাবকরা বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন করে যাচ্ছেন।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, স্কুল খোলা রাখা সরকারের পলিসির বিষয়। হাইকোর্ট এখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
৮ ফেব্রুয়ারি ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জিকা আংশিক সংশোধন করে রমজানে ১৫ দিন মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়েরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালায় জানায়, রমজানে ১০ দিন ক্লাস চলবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
পরে এই বিজ্ঞপ্তি দুটি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক।
রিটের শুনানি নিয়ে রোববার রোজার মাসে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা রাখার সরকারি সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
বছরের শুরুতে প্রাথমিক বিদ্যালয় পবিত্র রমজানে ৩০ দিন ছুটি রেখে বার্ষিক ছুটির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। ৯ ফেব্রুয়ারি ছুটির তালিকায় সংশোধনী এনে রোজার প্রথম ১০ দিন খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে পবিত্র রমজান মাসে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধাস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিসের সময়সূচিও পরিবর্তন করা হয়েছে। এসব দপ্তর চলবে সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। আর জোহরের নামাজের জন্য দুপুর সোয়া ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত বিরতি থাকবে।
অন্যদিকে রমজান মাস উপলক্ষ্যে ব্যাংকে লেনদেনের সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রোজার মাসে ব্যাংকে লেনদেন করা যাবে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত। সেই হিসাবে রমজানে ব্যাংকে বিরতিহীনভাবে লেনদেন চলবে পাঁচ ঘণ্টা।
রোজায় স্কুল খোলা রাখার বিষয়ে যা জানাল দুই মন্ত্রণালয়
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলগুলো ২৫ মার্চ পর্যন্ত খোলা থাকবে। আর সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলো রমজানের প্রথম ১০ দিন, অর্থাৎ ২১ মার্চ পর্যন্ত খোলা থাকবে।
স্কুল খোলা রাখার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের আগের সিদ্ধান্তই আনুষ্ঠানিকভাবে আবার জানানো হলো। দুই মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আজ এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
পবিত্র রমজানে বিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আজ মঙ্গলবার স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এর পর মন্ত্রণালয়গুলো তাদের সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত রোববার হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ রুল দিয়ে পবিত্র রমজানের প্রথম ১০ দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সরকারি-বেসরকারি নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম ১৫ দিন চালু রাখার সিদ্ধান্ত দুই মাসের জন্য স্থগিত করেন।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা গতকাল সোমবার চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। চেম্বার আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি আজ বেলা সাড়ে ১১টায় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। সে অনুসারে আবেদনের ওপর আজ শুনানি হয়।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে রমজানের সময় ১৫ দিন সরকারি-বেসরকারি নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখার কথা বলা হয়।
অন্যদিকে রমজানের প্রথম ১০ দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)