ড্রোন দিয়ে নকশা করে ফসলি জমি দখল করতেন বেনজীর
নিজের জমিতে আর কখনো চাষাবাদ করতে পারবেন না, এমন চিন্তাতেই শত শত কৃষক এখন বেছে নিচ্ছেন অন্য পেশা। হুমকির আতঙ্কও কাটেনি বাসিন্দাদের। সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক নির্মাণের আগে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ উপস্থিত থেকে ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে প্রথমে নকশা করেন। পরে ফসলি জমিতে পিলার দিয়ে দখলে নেন বেনজীরের লোকজন। ভয়ভীতি দেখিয়ে লিখে নেন সম্পত্তি।
হিন্দু অধ্যুষিত গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়ন। এখানকার বৈরাগীর টোল গ্রামের বাসিন্দা জুয়েল বল। আড়াই বছর আগেও তার ছিল দুই বিঘা ফসলি জমি। ধান, সরিষা ও আলু ফসল ফলাতেন তিনি। চাপের মুখে পড়ে এই জমি লিখে দিতে হয়েছে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের পরিবারকে। চোখেমুখে এখনো বিরাজ করছে আতঙ্ক। ফসলি জমি হারিয়ে এখন, বেঁচে থাকার জন্য বাড়ির কাছে নির্মাণ করছেন মুরগির খামার।
দেশজুড়ে যখন আলোচনায় সাবেক পুলিশ প্রধান, ঠিক তখনই একে একে মুখ খুলতে শুরু করেন ভুক্তভোগীরা। তাদের অভিযোগ, প্রথমে বেনজীর আহমেদ পুলিশ ও লোকজন নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে আকাশে ড্রোন উড়িয়ে নকশা করেন, পরে পিলার দিয়ে দখলে নেন জমি। লিখে না দিলে শুরু হয় অত্যাচার নির্যাতন। এভাবেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে লিখে নেন শত শত কৃষকের জমি। আর কোনদিন জমিতে ফসল চাষাবাদ করতে পারবেন না, এতে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।
জানা যায়, জোর করে কৃষকদের সম্পত্তি লিখে নেয়ার ঘটনায় ভুক্তভোগীরা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের জানান, গোপালগঞ্জে ৫০০ বিঘা জমি লিখে নিয়েছেন সাবেক পুলিশ প্রধান। হিন্দুদের জমি জোর করে লিখে নিয়ে পার্ক বানিয়েছেন বেনজীর আহমেদ। এসব ফসলি জমি ফেরতের পাশাপাশি তদন্তপূর্বক দোষীদের বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী জুয়েল বল বলেন, ‘আমাদের জমি দিতে চাই নাই। হিন্দু মানুষ ভয় আর আতঙ্কে দুই বিঘা জমি লিখে দেই। প্রথমে ড্রোন ব্যবহার করে জমি নকশার পর দখলে নেই। বলেছিল, টাকাও দিবে না। তাই সবকিছুই হারানোর ভয়ে জমি লিখে দেই। পরে বাধ্য হয়ে একটি মুরগির খামার বানাচ্ছি। জীবন বাঁচানোর জন্য বিকল্প পথ এটি।’
বৈরাগীর টোল গ্রামের কিরণ বল বলেন, ‘দুই থেকে আড়াই বছর আগে বেনজীর আহমেদ স্বয়ং উপস্থিত থেকে ড্রোন দিয়ে প্রথমে জমি পছন্দ করেন। পরে লাল পতাকা টানিয়ে আস্তে আস্তে দখল করে নেন জমি। অনেকেই টাকা না দিয়েই ভোগ করছেন ফসলি জমি। এতে অসহায় এখানকার কৃষকরা।’
জানা গেছে, স্থানীয় দুইজন প্রভাবশালীদের সমন্বয়ে এই জমি কিনেন বেনজীর। এতে সহায়তা করেন পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা।
সূত্র:সময় সংবাদ
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)