মসজিদের জানালার কাচ ভাংচুর
ইসকন নেতা গ্রেপ্তার: যেভাবে ঘটে আইনজীবী সাইফুল হত্যাকাণ্ড
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনা সংঘের (ইসকন) নেতা অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার ও আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে দিনভর সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজনের সংঘর্ষ হয়েছে।
এর এক পর্যায়ে সাইফুল ইসলাম নামের এক আইনজীবীকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
ঘটনাপ্রবাহের শুরু সোমবার রাতে। রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ডিবি পুলিশ চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে। প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল বের করে সনাতনী সম্প্রদায়। এরপর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের আদালতে তোলায় হয় এই ইসকন নেতাকে।
এদিন বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (৬ষ্ঠ) কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে তাকে হাজির করা হয়। এসময় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় আদালত। সনাতনী সম্প্রদায়ের কয়েকশ আইনজীবী ও সমর্থকরা আদালতের ভেতরে ও বাইরে অবস্থান নেন। শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ খবরে আদালত প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ শুরু করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন। চিন্ময় প্রভুকে আদালত থেকে কারাগারের উদ্দেশে প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে তারা প্রিজন ভ্যানের সামনে পেছনে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। স্লোগানের পাশাপাশি এসময় কেউ কেউ ভ্যানের সামনে শুয়েও পড়েন।
বিক্ষোভের এক পর্যায়ে আদালত চত্বরে থাকা প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন ভাংচুর করতে থাকে সেখানে উপস্থিত বিক্ষোভকারীরা। বিকেল ৩টার দিকে চিন্ময়কে বহনকারী প্রিজন ভ্যান কারাগারের উদ্দেশে এগোতে থাকে। এসময় চিন্ময়ের অনুসারীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। জেলা পরিষদের সঙ্গে সড়ক অবরোধ, যানবাহন ভাংচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। ভাংচুর করা হয় আদালত ভবনের মসজিদের জানালার কাচও।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কিছু আইনজীবীরা একত্রিত হয়ে সনাতনীদের ধাওয়া দেয়। এসময় বিক্ষোভকারীরা রঙ্গম সিনেমার গলিতে ঢুকে যায়। সেখানেই আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের ওপর হামলা করে দুর্বৃত্তরা। এসময় তাকে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। পুলিশ ও অন্যান্য আইনজীবীরা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, নিহত ওই আইনজীবীর বাড়ি লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের পানত্রিশা গ্রামে। ২০১৮ সালে তিনি জজ কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০২৩ সালে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকা ভুক্ত হন। আইনজীবী শাপালা ভবনের ৩৩১ নম্বর চেম্বারে বসতেন তিনি।
সাইফুলের মৃত্যুর পর তার মরদেহ ঘিরে চমেক হাসপাতালে বিক্ষোভ শুরু করেন তার সহকর্মীরা। হত্যার জন্য ইসকনকে দায়ী করে তাদের শাস্তি দাবি তোলেন তারা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)