পৃথিবীর সামনে গণহত্যার বিচার নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায় বাংলাদেশ : উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, পৃথিবীর সামনে গণহত্যার বিচার নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায় বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার যে গণহত্যা চালিয়েছে, তা কল্পনাতীত। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ চায় এ গণহত্যার বিচার হোক। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতার মাধ্যমে এই গণহত্যার বিচার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উপদেষ্টা মঙ্গলবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে তার দপ্তরে আন্তর্জাতিক জুরিস্ট ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করতে এলে এসব কথা বলেন।
শুরুতেই প্রতিনিধিদলকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে তৈরি করা ভিডিও ‘জুলাই অনির্বাণ’ দেখানো হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাঁচ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তারপর তিনদিন সরকার না থাকায় অনেক ফ্যাসিস্ট সমর্থক দেশ ছেড়ে পালানোর সুযোগ পেয়েছে। আমরা গণহত্যার বিচারের কাজ শুরু করেছি। প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের কাজ চলছে।
প্রতিনিধিদল জুলাই গণহত্যার বিচারের সময়কাল এবং প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুততম সময়ে অত্যন্ত স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে সম্পন্ন করা হবে। এ বিচার কখনোই প্রতিশোধমূলক হবে না, বিচার মানেই ন্যায়বিচার।
গণহত্যার বিচারের বিষয়ে ফ্যাসিস্ট বিরোধী সকল দলের ঐক্যমত রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন উপদেষ্টা। পাশাপাশি এই বিচার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে দেশ-বিদেশের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, এই বিচার শুধু বাংলাদেশের নির্যাতিত এবং গণহত্যার শিকার হওয়া মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নয়, বরং বিশ্বের মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের পরিণাম হিসেবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা প্রয়োজন। এই বিচার প্রক্রিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর রয়েছে এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে। আন্তর্জাতিক জুরিস্ট ইউনিয়নের পরামর্শ, সহযোগিতা এবং অভিজ্ঞতা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গ্রহণ করবে বলেও উল্লেখ করেন উপদেষ্টা।
অন্যদিকে, প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যে গণহত্যা হয়েছে তা সুস্পষ্ট অপরাধ এবং তার শাস্তি হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন। তারা নৈতিকভাবে জুলাই গণহত্যার বিচারকে সমর্থন করে এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে গণহত্যাকারীদের বিচারের বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলেও উল্লেখ করেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, আইসিটি পলিসি এডভাইজার ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ছাড়াও জুরিস্ট ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলে ছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, তুরস্কের চারটি গণঅভ্যুত্থানে বিচারিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন চিফ প্রসিকিউটর, তুরস্কের একাধিক সাবেক সংসদ সদস্য, তুরস্কের সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাংলাদেশের প্রসিকিউটরবৃন্দ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)