২য় বিয়ে নিয়ে লুকোচুরি কেন?
মামুনুল হকের স্টাটাস: ‘একটি মানবিক বিয়ের গল্প’!!
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের একটি রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে তার ‘কথিত’ ২য় স্ত্রীসহ হেনস্তার শিকার হওয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে।
এ ঘটনায় নানা প্রশ্ন তৈরি হওয়ার প্রেক্ষাপটে তিনি কেন দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন, রোববার এক ফেসবুক পোস্টে সেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন। নিজের এই বিয়েকে ‘একটি মানবিক বিয়ে’ বলে আখ্যায়িত করেছেন দেশবরেণ্য এই আলেম।
যদিও ওই ঘটনার পর দ্বিতীয় বিয়ের কথা প্রথম স্ত্রীকে শিখিয়ে দেয়ার একাধিক ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। সেই ফোনালাপে স্পষ্ট হয়েছে প্রথম স্ত্রী দ্বিতীয় বিয়ে কিংবা দ্বিতীয় স্ত্রীর কথা জানতেনই না। তাকে বলতে শোনা গেছে- বিষয়টি কি সত্যি?
তবে শুরু থেকেই ওই নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করে আসছেন মিস্টার মামুনুল হক। ওই নারী নিজেও জানিয়েছেন, তিনি মামুনুল হকের স্ত্রী। স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে এসেছেন। তবে কেন এতো লুকোচুরি?
মামুনুল হকের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু এখানে তুলে দেওয়া হলো—
‘একটি মানবিক বিয়ের গল্প’
‘হাফেজ শহীদুল ইসলাম আমার ঘনিষ্ঠ সহকর্মীদের একজন। সাংগঠনিক কাজে আমার দু-চারজন সহযোগীর অন্যতম। বেশ পুরনো আমাদের সম্পর্ক। সম্পর্কের গভীরতা পারিবারিক পরিধি পর্যন্ত। পরিবারসহ একে অপরের বাসায় যাতায়াত আমাদের দীর্ঘদিনের।
সেই সূত্রে তার পারিবারিক অভিভাবকত্ব করতাম আমি। পারিবারিকভাবে খুঁটিনাটি বিষয়ে পরামর্শের জন্য তারা আমার দ্বারস্থ হতো। দুই সন্তানের ছোট সংসার নিয়ে চলছিল তাদের জীবন। একটা পর্যায়ে এসে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে শুরু হয় মনোমালিন্য।
মনোমালিন্য থেকে বাদানুবাদ এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু। আজ থেকে তিন বছর আগের কথা। তখন তাদের সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি আমি। তাদের উভয়ের সঙ্গে কথা বলি।
কিন্তু কোনোভাবেই আর সেটি সম্ভব হয়নি। ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় তাদের। ছাড়াছাড়ির পর দ্বিতীয় সংসার শুরু করেন হাফেজ শহীদুল ইসলাম। সেই বিবাহ আমি পড়াই। তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে সুখে ও শান্তিতে দিনাতিপাত করছেন। সেই ঘরে জন্ম নিয়েছে ফুটফুটে আরেকটি সন্তান।
অন্যদিকে হাফেজ শহীদ ভাইয়ের স্ত্রী হয়ে যায় অনেকটা অসহায়। এক রকমের কূলকিনারাহীন। রাগের মাথায় সংসার ভেঙে গভীর সংকটে পড়ে যান তিনি। ওই পরিস্থিতিতে তার জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
স্বাভাবিকভাবেই তিনি আমার শরণাপন্ন হন।উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ নেন। আর সেই দুঃসময়ে সহযোগিতা করার মতো আমি ছাড়া আর কেউ ছিল না তার। ইসলামি দৃষ্টিকোণ এবং অভিভাবকত্বের জায়গা থেকে আমি তার অর্থনৈতিক দায়িত্ব গ্রহণ করি। জীবনের করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনার জন্য নিয়মিতই আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয় তাকে।
এমতাবস্থায় একজন বেগানা নারীর সঙ্গে এভাবে সম্পর্ক রাখাকে শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে আমার কাছে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিই, যতদিন তার অভিভাবকত্বের প্রয়োজন হবে আমার, তাকে বেগানা হিসেবে রেখে অভিভাবকত্ব করব না, বরং ইসলামি শরিয়তের আলোকে বৈধ একটা সম্পর্ক তৈরি করে নেব।
বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলি এবং এ বিষয়ে তাদের জানিয়ে শরিয়তের বিধান অনুযায়ী বিবাহের কালেমা পড়ে বিবাহ করে নিই। দুবছর ধরে এভাবেই মানবিক ও ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে আমি তার অভিভাবকত্ব করছি এবং একজন অসহায় নারীর দায়িত্ব গ্রহণ করে একটি পুণ্যের কাজ করেছি বলে বিশ্বাস করি। আমি যা বললাম এটি আল্লাহর নামের হাজার বার শপথ করে বলতে পারব। বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য কুল্লামার শপথও করতে পারি।
বিষয়টি খোলাসা করার পরও যুবলীগ আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা আমার সঙ্গে যে অমানবিক আচরণ করেছে এবং হামলা করেছে, গায়ে হাত তুলেছে, আমি এর বিচার চাই আল্লাহর কাছে, প্রশাসনের কাছে এবং জনগণের কাছে। পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের এ হামলা ও আচরণ প্রমাণ করে বর্তমানে বাংলাদেশে মান-সম্মান কিংবা জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চলাফেরা করা সম্ভব না।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)