তালায় হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সেবন করে যুবকের দুই চোখ অন্ধ!


সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পল্লীতে নেশা জাতীয় হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সেবন করে পলাশ খান পল্টু (৩৫) নামের এক যুবকের দুই চোখ অন্ধ হয়ে গেছে। তিনি উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের উত্তর শাহাজাতপুর গ্রামের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আহাদ আলী খানের ছেলে। এর আগে একই ঔষধ পান করে মারা যান দক্ষিণ শাহাজাতপুর গ্রামের হরিপদ বাছাড়ের ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী সনৎ কুমার বাছাড় (৩৮)। এদিকে উক্ত ঘটনা জানাজানি হলে দোকান বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছেন শাহাজাতপুর বাজারের হাতুড়ে হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার সুনীল দাশ। তিনি নিজেকে বাঁচাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
পলাশ খান পল্টুর স্ত্রী ময়না বেগম জানান, আমার স্বামী গত সোমবার (২৪ মে) রাত ১০টায় হঠাৎ অসুস্থবোধ করে। এ সময় সে চোখে দেখেতে পাচ্ছিল না। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে তালা হাসপাতালে এবং পরে সেখান থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সেখানকার চিকিৎসারা বলেছেন, তার চোখ দুটি অন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় বাজারের হাতুড়ে ডাক্তার সুনীশ দাশের পরামর্শে নেশা জাতীয় ঔষুধ পান করে তার স্বামীর আজ এমন অবস্থা হয়েছে। এ সময় তিনি হাতুড়ে ডাক্তার সুনীল দাশের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিবেন বলেও জানান।
পলাশ খান পল্টু জানান, সম্প্রতি ঋণে জর্জরিত হয়ে হতাশায় ভূগছিলেন তিনি। হাতাশা দূর করতে শাহাজাতপুর বাজারের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সুনিল দাশের পরামার্শে তার দোকন থেকে তিনি এনটারে ও নাটফোম নামের ঔষধ সেবন করেন। এনটারে নামের একটি বড় ফাইলে প্যাকেটে মূল্য ১০০ টাকা লেখা থাকলেও নিয়েছেন ১৮০ টাকা এবং নাটফোমের মূল্য ৬০ টাকা লেখা থাকলেও ২০০ টাকা করে নিতেন। উক্ত ঔষধ তিনি নিয়মিত সেবন করে যেতেন। নেশা জাতীয় উক্ত ঔষধ সেবন করেই বর্তমানে তার এই অবস্থা। এ সময় পলাশ খান পল্টু হাতুড়ে ডাক্তার সুনিল দাশের বিচার দাবী করেন এবং তার বিরদ্ধে আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানান।
এলাকাবাসী জানান, শাহাজাতপুর বাজারের ওষুধের দোকানদার সুনীল দাশসহ কয়েকজন দীর্ঘদিন নেশা জাতীয় হোমিওপ্যাথিক ওষুধ বিক্রি করে আসছে। দোকানে দোকানে ওই ওষুধ পৌঁছে দেয় একটি চক্র। আর উঠতি বয়সী যুবকরা এটি হরহামেশে খাচ্ছে।
এদিকে শাহাজাতপুর বাজারের হাতুড়ে হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার ঐ গ্রামের দেবেন্দ্র নাথ দাশের ছেলে সুনীল দাশ বেশ কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়েছেন। এমনটি তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে।
এদিকে পলাশ খান পল্টু বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম ও সহকারী অধ্যাপক চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ এমরানুল ইসলাম আবিরের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সহকারী অধ্যাপক চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ মোঃ এমরানুল ইসলাম আবির জানিয়েছেন, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই বিভিন্ন ঔষুধ সেবনের ফলে চোখের কর্নিয়া সাথে শিরা ও উপশিরা সংযোগ গুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য তার দুই চোখ অন্ধ হয়ে গেছে।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
