মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউমের প্রথম নামাজে জানাজা শেষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সদর দফতর বলাকায় তার নামাজে জানাজা হয়।
জানাজায় ইমামতি করেন বলাকা মসজিদের ইমাম মুফতি মাওলানা কাইয়ুম।
জানাজায় অংশ নেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। উপস্থিত ছিলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ তার নিকট আত্মীয় ও বন্ধুরা।
বলাকায় জানাজা ও শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শেষে ক্যাপ্টেন নওশাদের মরদেহ বনানী কবরস্থানের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মায়ের কবরের পাশে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
এর আগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইউমের লাশ ভারতের নাগপুর থেকে দেশে পৌঁছায়। সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে দোহা থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে (বিজি-০২৬) লাশ রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
গত সোমবার নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না … রাজিউন) বিমানের এ পাইলট।
গত বৃহস্পতিবার বিমানের বিজি-২২ ফ্লাইটটি ওমান যায়। সেখান থেকে স্থানীয় সময় রাত ২টা ৩০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসার কথা থাকলেও ওই ফ্লাইটটি ভোর সাড়ে ৬টায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। ঢাকা আসার পথে ভারতের আকাশে থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইউম অসুস্থ হয়ে পড়লে ফ্লাইটের জরুরি অবতরণ করানো হয়।
কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বিমানটিকে নাগপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার সিগন্যাল দিলে কো-পাইলটই বিমানটিকে অবতরণ করান। বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানটিতে ১২৪ যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদেই ছিলেন।
নাগপুরের একটি হাসপাতালে লাইফসাপোর্টে ছিলেন তিনি। চিকিৎসাধীন ৩০ আগস্ট মারা যান নওশাদ।
নওশাদ আতাউল কাইউম ১৯৭৭ সালের ১৭ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে পাইলট হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ২০০০ সালের ১৩ নভেম্বর ক্যাডেট পাইলট হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে কাজে যোগদান করেন এবং প্রশিক্ষণ শেষে ২০০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর এফ-২৮ এর ফার্স্ট অফিসার পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
তিনি ২০০৬ সালের ১৪ মে এয়ারবাস-এ-৩১০ উড়োজাহাজের ফার্স্ট অফিসার এবং ২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বোয়িং ৭৭৭ এর ফার্স্ট অফিসার হন।
সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি বোয়িং ৭৩৭-এর ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি পান এবং মৃত্যুর পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত তিনি এ পদেই কর্মরত ছিলেন।
তারা বাবা আব্দুল কাইউমও একসময় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ক্যাপ্টেন ছিলেন।
পাঁচ বছর আগে ১৪৯ যাত্রী আর ৭ ক্রুর জীবন বাঁচিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন নওশাদ। পরে ২০১৭ সালে ক্যাপ্টেন নওশাদকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রশংসাপত্র পাঠিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ক্যাপ্টেন রন অ্যাবেল।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)