নড়াইলের সাম্প্রদায়িক হামলার স্থান পরিদর্শনে ঢাকার সুশীল সমাজের নেতারা
নড়াইলে সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর, দোকান ও মন্দির পরিদর্শন ঢাকার সুশীল সমাজের নেতারা। নড়াইলের দিঘলিয়ার সাহাপাড়ায় সাম্প্রদায়িক হামলা ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর, দোকান ও মন্দির পরিদর্শন করেছেন ঢাকার সুশীল সমাজের নেতারা।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত সাহাপাড়া এলাকা পরিদর্শন করেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. খায়রুল চৌধুরী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, সাংবাদিক নজরুল কবীর, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা এবং দৈনিক জনকণ্ঠের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক মুনতাসির জাহিদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- লোহাগড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি গৌতম কুমার দেওয়ান, দিঘলিয়া রাধা-গোবিন্দ মন্দিরের সভাপতি শিবনাথ সাহা প্রমুখ।
সাহাপাড়া এলাকা পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিরা লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর আলী, লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী আলাউদ্দিনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দেখা করেন এবং সাহাপাড়া সাম্প্রদায়িক হামলার বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন কালে দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, আমরা শুনেছি দিঘলিয়ার সাহাপাড়াতে ৭১-এ পাকিস্তানি হানাদাররা ঢুকতে পারেনি। আজকে এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা কেউ বাইরের নয়, তারা স্থানীয় ও আশপাশের। এরা অনেকেই পরিচিত। আমরা চাই এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁজে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। আর বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটুক তা আমরা চাই না। এটা অত্যন্ত লজ্জার এবং চরম গ্লানিকর। এ ঘটনার দ্রুত অবসান হোক। তিনি এসব ঘটনার বিচারের জন্য রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি কামনা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, এখানকার একটি সামাজিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। কিন্তু দিঘলিয়ায় যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও দুঃখজনক। আমি এর চরম প্রতিবাদ করছি। দেশের সংবিধানের ৪টি মূলনীতির একটি হলো ধর্মনিরাপেক্ষতা। এখানে সবাই সবার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে এবং সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে।
নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন বলেন, আমরা এখানে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সংহতি জানাতে এসেছি। সামনে দুর্গাপূজা। সাহাপাড়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে এখানে উৎসব ও পূর্ণ মনোবল নিয়ে বসবাস করতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ জুলাই লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া সাহাপাড়ার আকাশ সাহা নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করে পোস্ট দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় স্থানীয় বিক্ষুব্ধ লোকজন সাহাপাড়ার ৫টি বাড়ি, ৬টি দোকান ও চারটি পূজামণ্ডপ ভাংচুর করে এবং একটি বাড়ি ও একটি মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় লোহাগড়ায় থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লোহাগড়া থানার এসআই মিজানুর রহমান বলেন, হামলা-মামলায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)