শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

উপকূলীয় মানুষের ভোগান্তির শেষ কোথায়?

দেশের সর্ব দক্ষিনে অবস্থিত অতি সম্ভনাময় তিন উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট। বঙ্গোপসাগর এবং সুন্দরনের কোল ঘেঁষে অবস্থিত এই তিন জেলার মুষ্টিমেয় মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস সুন্দরবন কেন্দ্রিক এবং সেই সাথে লোনা পানিতে মৎস্য চাষ করে বা নদীতে মাছ ধরে তাদের অধিকাংশের দিন চলে। বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী হওয়ায় এখানকার জনগণ বাধ্য হয়ে এ ধরনের পেশাকে বেছে নিয়েছে।

অনেকের কৃষি চাষাবাদ যোগ্য জমি থাকার সত্ত্বেও বছরের অধিকাংশ সময়ে মাটি লবনাক্ত থাকায় সেখানে ফসল ফলানো দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই অনেকেই বেছে নেয় লবনাক্ত সহনশীল অভিযোজন ক্ষমতা সম্পন্ন ফসল উৎপাদনের পদ্ধতিকে।

দক্ষিণাঞ্চলের উক্ত জেলাগুলোতে বসবাসকৃত মানুষ জীবিকার তাগিদে নিজের জমিতে বা অন্যের থেকে লিজ নেওয়া জমিতে অক্লান্ত পরিশ্রমে উৎপাদন করে বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়ী, কাঁকড়া, কুঁচিয়া সহ হরেক প্রজাতির সুস্বাদু মাছ। যেগুলো দেশের বাজারে জনগণের খাদ্যের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশের বাজারেও বেশ কদর রয়েছে। রপ্তানি বাণিজ্যে উজ্জ্বল সম্ভবনাময় এসব মৎস্য সম্পদ বিদেশে রপ্তানি করে প্রতি বছর সরকারী কোষাগারে জমা হয় মোটা অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা।

যার ভিতর দেশের ‘হোয়াইট গোল্ড’ খ্যাত চিংড়ী সবার আগে প্রাধান্য পায়। রপ্তানি বাণিজ্যে বৈদেশিক মুদ্রার একটা সিংহ ভাগ আসে বাইরের দেশগুলোতে এই চিংড়ী রপ্তানি করে। এছাড়া সম্প্রতি দেশের কাঁকড়া ও কুঁচিয়া বিদেশীদের কাছে অনেক বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। যেগুলো অদূর ভবিষ্যেৎ দেশের রপ্তানি বাণিজ্য খাতে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।

কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, দেশের মানুষের মৎস্য চাহিদা মিটিয়ে সরকারী কোষাগারে বৈদেশিক অর্থ যোগানে যে এলাকার মানুষগুলোর ভূমিকা অপরিসীম তাদের জীবনের বেশীরভাগই সময় কাটে গৃহহীন, অনাহারে ও অর্ধাহারে। বানের জলে ভেসে যায় চিংড়ী ঘের, আবাদী জমি, সহ তিল তিল করে গড়ে তোলা সকল ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা। গলা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে, দিন রাত একাকার করে, গবাদি পশু, ছাগল, ভেড়া সহ সকল সহায় সম্বল বানের জলে ছেড়ে দিয়ে নিজেরা খুঁজতে থাকে নিরাপদ জীবনের আশ্রয়।

কিন্তু সেই আশ্রয়টুকুও তাদের কাছে অপ্রতুল। এমনকি বছরের প্রায় ছয়মাসের ও বেশি সময় তাদের ঠাই হয় নিজেদের বসত ভিটা ছেড়ে রাস্তার উপরে কোন রকমে টঙ বেঁধে। পরিবারের সবাইকে দিনের পর দিন তারা পার করে না খেয়ে। সমুদ্রের ন্যায় সীমাহীন জলরাশির জোয়ার ভাটায় তাদের সব কিছুকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। যেখানে লজ্জা নিবারণে নিজেদের পরনের কাপড়টুকুকে টিকিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায় সেখানে আগুন ধরিয়ে কিছু রান্না করে নিজেদের উদর পূর্ণ করবে সেই ভাবনা যে বড্ড বেমানান।

‘হ্যাঁ’ কথাগুলো একটি বার যেকেউ অন্তর দিয়ে অনুভব করলে গায়ের লোম শিউরে ওঠাটাই স্বাভাবিক। এটাই হচ্ছে দেশীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখা দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের নিত্তকার জীবনযুদ্ধের চিত্র। উপকূলীয় এলাকায় বাড়ী হওয়ায় খুব ছোট হতেই অনুভব করে এসেছি মানুষের বানের জলে সর্বস্ব বিসর্জন দেওয়া সেসব সংগ্রামী জীবনগাঁথা মানুষের দুর্বিষহ জীবন। ধনী-গরীব, নিন্মবিত্ত-মধ্যবিত্ত, ছোট-বড় সকলের হাহাকারে আকাশ বাতাস কম্পিত হতে শুনেছি। অনেকটা খাপ খাইয়ে নিয়েছি আর নিজেদের মনকে বুঝিয়েছি, হয়ত উপকূলীয় আমাদের মত দিশেহারা এসব মানুষের জন্মই হয়েছে প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকার জন্য।

যদিও আমার মত অনেকেই সেই ধারণা মাথায় নিয়েই চলে। একটু বৈরি আবহাওয়াতে উপকূলের মানুষ প্রহর গুনতে থাকে গৃহ হারানোর ভয়ে, বসত ভিটা হারানোর ভয়ে। তিল তিল করে নিজেদের হাতে গড়ে তোলা সংসারের প্রতিটি প্রিয় জিনিস হারানোর ভয়ে। সন্তান-সন্তুতি, প্রিয়জন হারানোর ভয়ে। সংসারের খরচে সামান্য সহায়তার জন্য বহু আদরে গবাদি পশু সহ গৃহপালিত অন্যান্য প্রাণীর হারানোর ভয়ে। দুর্যোগকালীন সময়ে যেখানে নিজেদের জীবনকে টিকিয়ে রাখা দুস্কর সেখানে ওসবের আশা করা যে একেবারে ভিত্তিহিন সেগুলো তারা মনকে বুঝিয়েই চলে। তাইতো গলা পানিতে নেমে, নিজেদের আদরের ধনকে বুকে সজোরে আটকে রেখে পাড়ি দেয় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে।

কিন্তু তাদের সেই নিরাপদ আশ্রয়টুকুও জুটবে কিনা সেটা নিয়েও থাকে সংশয়। কেননা, দুর্যোগ প্রবন এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে বানানো সাইক্লোন সেন্টার গুলোও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বহুকষ্টে সেখানে আশ্রয় পাওয়ারা গাদাগাদি করে গবাদি পশু মানুষ একসাথে কোন রকমে দিনাতিপাত করে। আর এভাবে গাদাগাদি করে থাকতে থাকতে শুরু হয় ডায়েরিয়া, কলেরা, আমাশয়, সর্দি, কাশি, জ্বর সহ নানান ধরনের রোগ।

যেখানে নেই সুপেয় পানীয় জলের ব্যবস্থা। নেই শুকনো কাপড়ের ব্যবস্থা। নেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক শৌচাগারের ব্যবস্থা। সাথে যুক্ত হয় নিত্যদিনের খাবারের সংকট। যদিও জীবন যেখানে বিপন্ন সেখানে তাদের সুযোগ সুবিধার আশা অনেকটা যুক্তিহীন। তারপরেও এসব মানবেতর জীবনযাপনের চিত্র স্বচক্ষে দেখলে যেকোন বিবেকবান ব্যক্তির মনে হয় এ যেন এক নতুন মহামারী। নিজেদের বসত বাড়ী, ভিটে মাটি, সহায় সম্বল, আপনজন জলাঞ্জলি দিয়ে সবাই বাধ্য হয়ে অস্তিত্ব টেকানোর সংগ্রামে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। শুরু হয় টিকে থাকার সংগ্রাম।

জীবনকে বাঁচিয়ে রাখার সংগ্রাম। এই সংগ্রামে অনেকেই হেরে যায় আবার অনেকেই জিতে যায়। এই টিকে থাকার সংগ্রামে যারা হেরে যায় তারা হয়ত হেরে গিয়েই বেঁচে গেছে এমনটাই মনে হয়। আর জিতে যাওয়া মানুষ গুলো আবারো প্রহর গুনতে থাকে পরবর্তী সংগ্রামের। কেননা, ক্ষত শুকানোর আগেই প্রকৃতি আবারো তার প্রলয়ংকারী সাজে আবির্ভূত হয়ে ধেয়ে আসে সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিতে। বিগত বছরগুলোতে ঘটে যাওয়া সিডর, আইলা, বুলবুল, নার্গিস, ফনি, আম্ফান তারই উপযুক্ত স্বাক্ষর বহন করে।

প্রতি বছরেই একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপকূলীয় মানুষের দুর্দশা এত গুনে বাড়িয়ে দেয় সেটা দুর্যোগ পরবর্তী ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার বিভিন্ন সংবাদে আমরা দেখতে পাই। দুর্যোগ ঘটে যাওয়ার কিছুদিন পর্যন্ত চলে এই মহড়া যেটা সপ্তাহ পেরোতেই থেমে যায়। আর মিডিয়া সংবাদ প্রচার বন্ধ করা মানেই এসব মানুষের দুর্দশা আবারো আগের মতই সুপ্ত থেকে যাওয়া। কিন্তু প্রকৃত বাস্তবতা কতটা দুর্বিষহ সেটা যারা স্বচক্ষে পর্যবেক্ষণ করেছেন তারা জানেন।

অন্যদিকে দুর্যোগ পরবর্তী সরকারের ত্রান তহবিল থেকে বরাদ্দকৃত অর্থের খুবই সামান্য পরিমান পৌঁছায় এসব দুর্দশাগ্রস্তদের কাছে। যে সাহায্য ও সহযোগিতা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ অপ্রতুল। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সরকার থেকে জনপ্রতি বরাদ্দের অর্থ বিভিন্ন জনের হাত বদলে ভুক্তভোগীদের কাছে পৌঁছাতে পৌঁছাতে তার পরিমান লোপ পেতে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে এই লোপ পাওয়ার পরিমান পুরোপুরি শূন্যের কোটায় ও পৌঁছায়। এ বিষয়গুলো আমাদের সবারই ভালো জানা।

কেননা, যাদের মাধ্যমে বরাদ্দ ভুক্তভোগীদের কাছে পৌঁছায় তাদের প্রায় সবার কাছেই এটি একটি অতি লাভজনক এবং পুঁজিহীন সফল ব্যবসা। তাই সকলেই এই ব্যবসায় মেতে ওঠে। রক্ষকই ভক্ষকের ভূমিকা পালন করে। কোন রকম বিনিয়োগ ছাড়া গরীব মেহনতি জনগণের মাথা বিক্রি করে সরকারী বরাদ্দের অর্থ দিয়েই জনপ্রতিনিধি সহ অনেকের সম্পদের পাল্লা ভারী করার রেকর্ড আমরা অনেক ক্ষেত্রেই অহরহ দেখতে পাই।

আর সেই সাথে ভারী হয় তাৎক্ষণিক ভাবে জনদরদী বনে যাওয়া ব্যক্তিবর্গের ফটোসেশনের পাল্লা। ফোটোসেশনের মাধ্যমে এসব জনদরদীদের অনেকেই জাহির করতে চান তার নিজের বাবার টাকার সম্পদ বিক্রি করে বানভাসি মানুষের সাহায্য করছেন। ফটোসেশনের আগে এসব জনদরদীদের ভেবে দেখা উচিৎ নিজে ব্যক্তিগত ভাবে কি দিয়েছেন। তা না হলে সরকারী বরাদ্দের অর্থ দিয়ে বানভাসি মানুষের সাহায্য করে সেটা গণমাধ্যম বা সামাজিক মাধ্যমে সেই ছবি ভাইরাল করা আপনাদের ছোট মন মানসিকতা প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছুই নয়।

কেননা এটা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় জনগনেরই প্রাপ্য সম্পদ। আপনাদের দায়িত্ব ভালোভাবে সেগুলো ভুক্তভোগী জনগণকে বুঝিয়ে দেওয়া। তাই এগুলো প্রদানের সময়, ফটোসেশন করে নিজের ক্রেডিট নেওয়ার যেমন কোন কৃতিত্ব আপনাদের নেই সেই সাথে ওখান থেকে একটা অর্থ ও আপনার ব্যক্তিগত কাজে লাগানোর অধিকার ও আপনাদের নেই। এগুলো করলে জনসমক্ষে আপনাদের হীনমন্যতা, নীচ মন মানসিকতার পরিচয় বহন করা ব্যতীত আর কিছুই প্রকাশ করে না।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ একটি নৈমিত্তিক ঘটনা এবং মাঝেমধ্যে প্রকৃতিতে সেটার উপস্থিতি স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু দুর্যোগকে মোকাবেলা করার মত যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে দেশের একটা বড় অংশের মানুষ, তাদের বসত ভিটা, তাদের সংস্কৃতি আস্তে আস্তে বিলীনের পথে যাচ্ছে সেটার ইঙ্গিত আমরা ইতোমধ্যে বহুবার পেয়েছি। নদীমাতৃক দেশে সাগরের সাথে সংযুক্ত নদী সমূহতে খরাস্রোত থাকবে সেটাও স্বাভাবিক। কংক্রিটের টেঁকসই বাঁধ ছাড়া এসব খরাস্রোত নদীকে কোনভাবেই সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। যেখানে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা দরকার। দরকার টেঁকসই বেড়িবাঁধের। বার বার অর্থ বরাদ্দের চেয়ে একেবারে মোটা অঙ্কের বাজেট দিয়ে সরকারের কোন বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য বিশেষ বাহিনী দিয়ে এই টেঁকসই বাঁধের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। যাতে করে জনগণের টাকা জনগণের কল্যাণে সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হবে।

কেননা, দুর্যোগ পরবর্তী এসব বাঁধ মেরামতের জন্য সরকার প্রতিবছর মোটা টাকার বাজেট ঘোষণা করেন। কিন্তু সেই বাজেটের বেশীরভাগ অংশই চলে যায় বিভিন্ন ঠিকাদার বা ওই সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িত ব্যক্তিদের পকেটে। আবার যখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে তখন দেখা যায় পূর্বের যাবতীয় বরাদ্দ বা সরকারী সাহায্য আবারো জলে ভেসে শেষমেশ জনগণের একই দুর্দশার পুনিরাবৃতি ঘটে। যেটা স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনার ব্যর্থতা বলে মনে হয়। সরকারের উচিৎ বিষয়টিকে অতীব গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে টেঁকসই বেড়িবাঁধের যাবতীয় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে দুর্যোগ পূর্ববর্তী যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া।

সেইসাথে সুন্দরবনকে আগামী দিনের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার মেগা প্রকল্পের মত বিষয়টি নিয়েও সরকার ভেবে দেখতে পারেন। পৃথিবীর দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত খ্যাত কক্সবাজারের মত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি বিশ্বের সর্ববৃহৎ আমাদের এই ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন। যার বৃহৎ অংশ আমাদের দেশে অবস্থিত। সুন্দরবনকে উপযুক্ত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুললে সরকারী কোষাগার যেমন সমৃদ্ধ হবে সেইসাথে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্নও বাস্তবায়িত হবে।

পাশেই বঙ্গোপসাগর, তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগকে সাথে নিয়েই দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চলতে হবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তাইবলে প্রতিবার ঘটে যাওয়া দুর্যোগে এই সীমাহীন দুর্ভোগ মেনে নেওয়া যায়না। সম্প্রতি ‘ইয়াস’ এর প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস তাদের সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছে। আগামীতে আরও ভয়ানক কিছু তাদের সামনে অপেক্ষা করছে সেটা ভাবতেই সবাই শিউরে উঠছে। যে এলাকার মানুষ একটা দেশের রাজস্ব খাতে বেশ অবদান রাখে তাদের এই দুর্দশা স্বচক্ষে অবলোকন করা অনেক কষ্টকর। একমাত্র টেঁকসই বেড়ীবাঁধই তাদের এই দুর্দিন থেকে রক্ষা করতে পারে। তা না হলে এভাবে চলতে থাকবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম, বছরের পর বছর। আর মাঝ দিয়ে রাঘব বোয়ালেরা ঠিকই তাদের সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলবে। তাই দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সকলের আজ প্রাণের দাবী ‘সরকারী ত্রান নয়, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই’।

প্রতিবারের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে যাওয়ার পরে তাদের দুঃখ দুর্দশা দেখলে চোখের পানি আটকে রাখা দায় হয়ে দাঁড়ায়। তাই সরকার তথা মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন, অনুগ্রহ করে এসব সহায় সম্বলহীন মানুষের দুঃখ দুর্দশা লাগবে যথাযথ পদক্ষেপ নিন। খরাস্রোতা নদীর কাছে মাটির রাস্তা কোনভাবেই টেকসই নয়।

যেটা বহু পূর্বে প্রমানিত হয়েছে। বাইরের দেশ গুলোতে দেখা যায়, সেখানে নদী অনেক ছোট কিন্তু নদীর দুইপাশের বাঁধগুলো সবই কংক্রিটের গাঁথুনি। যে গাঁথুনি হাজার বছরেও কিছু হওয়ার নয়। সেখানে আমাদের উপকূলবর্তী এসব নদীর গুলোর স্রোত অনেক বেশি। নিন্মচাপ শুরু হওয়ার সাথে সাথে অস্বাভাবিক আকারে পানিবৃদ্ধি, জলোচ্ছ্বাস, মাটির বাঁধ ভেঙে বা উপছে ভিতরে প্রবেশ করা খুবই সহজ। অনেক সময়ে দেখা যায় কোন রকম নিন্মচাপ ছাড়াই অমাবস্যা বা পূর্ণিমা তিথিতে ভরা জোয়ারে এসব নদীর বাঁধ ভেঙে বা উপছে প্রায়ই ওইসব এলাকা প্লাবিত হয়। যেগুলো মাঝেমধ্যে মেনে নিতে খুবই কষ্টকর হয়।

পরিশেষে এটুকু বলতে চাই, যেকোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে যাওয়ার পরে ভুক্তভোগীদের সাহায্য সহযোগিতার চেয়ে দুর্যোগ প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ জানমালের সুরক্ষা বহুগুনে বাড়িয়ে দেয়। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা প্রতিটি মানুষের জন্মগত অধিকার। আর এই সবগুলোরই বেশ অভাব দক্ষিণাঞ্চলের দুর্যোগ প্রবন এলাকার সকল মানুষের। যেটা কোনভাবেই কাম্য নয়। তাদের কাছে নিরাপদ মাথা গোঁজার ঠাই, দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের নিশ্চয়তা, সন্তানের লেখাপড়ার নিশ্চয়তা, অনেকটা রুপকথার গল্পের সামিল। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আমাদের দেশ। সেইসাথে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ বাংলাদেশের এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই মুহূর্তে দেশের জনগণের এমন দুর্দশা সত্যিই বেমানান। সরকারী নীতি নির্ধারকদের বিষয়টিকে অতীব গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের একান্ত কাম্য।

লেখকঃ অজয় কান্তি মন্ডল, গবেষক, ফুজিয়ান এগ্রিকালচার এন্ড ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি, ফুজো, ফুজিয়ান, চীন।

একই রকম সংবাদ সমূহ

কলারোয়ার অপরূপ পুরাকীর্তি শ্যামসুন্দর মঠ-মন্দির, সংরক্ষণে নেই কার্যকরী উদ্যোগ

শেখ জিল্লু : প্রকৃতির সাথে পুরাকীর্তি যাদের সমানভাবে আকর্ষণ করে তাদের আসতেবিস্তারিত পড়ুন

কলারোয়ায় তৃষ্ণার্তদের মাঝে শরবত ও পানি বিতরণ করলো ‘মানবতার কল্যাণে আমরা ফাউন্ডেশন’

কলারোয়ায় প্রচন্ড তাপদাহে তৃষ্ণার্ত সাধারণ মানুষের মাঝে ঠান্ডা শরবত ও পানি বিতরণবিস্তারিত পড়ুন

কলারোয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা

দীপক শেঠ, কলারোয়া : কলারোয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৯ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমাবিস্তারিত পড়ুন

  • হিট ষ্ট্রোকে আতঙ্কে আছেন কলারোয়ার পোল্ট্রি খামারীরা
  • কলারোয়ায় ক্লাইমেট- স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষিতে পরিকল্পনা প্রনয়ণ ও মূল্যায়ন কর্মশালা
  • ৮ মাস বন্ধ কলারোয়ার বেত্রবতী সেতু নির্মাণ কাজ, ভাঙা সেতু দিয়ে ঝুঁকিতে পারাপার
  • একই দিনে কলারোয়ার দেয়াড়া হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের যোগদান
  • কলারোয়ায় কৃষির জলবায়ু পরিবর্তন প্রকল্পের কর্মশালা
  • কলারোয়ায় আস্থা প্রকল্পের যুব ফোরামের ত্রৈমাসিক সভা
  • ‘কলারোয়ায় শুদ্ধাচার ও ভদ্র রাজনীতির সূচনা করতে চাই’: স্বপন এমপি
  • কলারোয়ায় ইলেকট্রিশিয়ান ও ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের মে দিবস উদযাপন
  • কলারোয়ায় তৃষ্ণার্ত পথচারীদের পানি ও স্যালাইন দিলেন স্বপন এমপি
  • কলারোয়ার পালপাড়া গণহত্যা দিবসে গভীর শ্রদ্ধায় শহীদদের স্মরণ
  • কলারোয়ায় ঔষধ ব্যববসায়ীদেরকে নিয়ে জনসচেতনামূলক সভা
  • ২১ বছরর মধ্যে সাতক্ষীরায় সর্বোচ্চ ৪২.২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড