কঠোর নজরদারিতে প্রেমিকার মরদেহ ৩৫ খণ্ড করা সেই যুবক
ভারতের দিল্লিতে প্রেমিকাকে হত্যার পর তার মরদেহ ৩৫ খণ্ড করা যুবক আফতাব আমীন পুনেওয়ালাকে গ্রেফতারের পর কারাগারে কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
দক্ষিণ দিল্লির মেহরাউলির পুলিশ স্টেশনে রাখা হয়েছে আফতাবকে। ফুটেজে দেখা যায়, কারাগারের ভেতরে শুয়ে আছেন তিনি। তার সঙ্গে একই কক্ষে রাখা হয়েছে অন্য এক বন্দিকে। আর বাইরে বসে আফতাবের দিকে নজর রাখছেন পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য।
আফতাব পুনেওয়ালার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক প্রকাশ্যে আসা সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড এবং তা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, গত ১৮ মে আফতাব আমীন পুনেওয়ালা নামে এক যুবকের সঙ্গে ঝগড়া হয় তার প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারের। এর জেরে সেদিনই শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে আফতাব। তারা দুজন একসঙ্গেই (লিভ-ইন) থাকতেন।
পুলিশ জানায়, হত্যার পর শ্রদ্ধার মরদেহ কেটে ৩৫ টুকরো করে আফতাব। পরে তা রাখার জন্য ৩০০ লিটারের একটি ফ্রিজও কেনেন তিনি। এরপর ১৮ দিন ধরে দিল্লির মেহরাউলি জঙ্গলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ফেলে দেন। এ কাজের জন্য প্রতিদিন রাত ২টায় বের হতেন আফতাব।
দিল্লির দক্ষিণ জেলার অতিরিক্ত ডিসিপি-আই অঙ্কিত চৌহান বলেন, মুম্বাইতে কাজ করার সময় আফতাব ও শ্রদ্ধার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। কিন্তু সম্পর্ক নিয়ে পরিবারের বিরোধিতার মুখে এপ্রিলের শেষ বা মে মাসের প্রথম সপ্তাহে তার দিল্লিতে চলে আসেন। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিয়ে নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয় এবং তা ক্রমশ বাড়তে থাকে। এর জেরেই শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন আফতাব।
তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত যুবক তার প্রেমিকার মরদেহ টুকরো করে কাটার পর একটি ফ্রিজে সংরক্ষণ করেছিল এবং বিভিন্ন সময়ে তা জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসেন।
সেপ্টেম্বরে শ্রদ্ধার এক বন্ধু তার ভাইকে জানান, শ্রদ্ধার মোবাইল ফোন দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ। এরপর শ্রদ্ধার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট চেক করেও এই সময়ের মধ্যে সেখানে তার কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে চলতি নভেম্বরের শুরুতে ভুক্তভোগীর বাবা বিকাশ মদন ওয়াকার মুম্বাই পুলিশের কাছে মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় অভিযোগ করেন।
প্রাথমিক তদন্তে শ্রদ্ধার শেষ অবস্থান পাওয়া যায় দিল্লিতে। এর ভিত্তিতে, মামলাটি দিল্লি পুলিশের কাছে স্থানান্তর করা হয়। শ্রদ্ধার বাবা আফতাবের সঙ্গে তার মেয়ের সম্পর্কের কথা পুলিশকে জানান এবং তার মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার পেছনে আফতাবের জড়িত থাকার বিষয়ে নিজের সন্দেহের কথা জানান।
এ অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার (১২ নভেম্বর) আফতাব পুনেওয়ালাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি শ্রদ্ধাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আফতাব পুনেওয়ালার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে। তাকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)