কেশবপুরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ট্রাক্টর ও টলি।। নষ্ট হচ্ছে রাস্তা, অতিষ্ট জনগণ
যশোরের কেশবপুর পৌর শহরসহ উপজেলাব্যাপী প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক্টর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অবৈধ এই ট্রাক্টর ও টলি প্রতিদিন মাটি বহন করে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অতিষ্ট জনসাধারণ নষ্ট হচ্ছে সরকারি রাস্তা। ট্রাক্টরের মাটি মেইন সড়কে পড়ে রাতের কুয়াশায় কর্দমাক্ত হয়ে প্রায় প্রতিদিনই দূর্ঘটনা ঘটে চলেছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই মরনযান বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন না করায় দিন দিন তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভায় (গত ০৮ মার্চ) উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত ও থানা পুলিশ ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ করে ট্রাক্টরের চলাচল বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সম্প্রতি ট্রাক্টরের ছবি তুলতে গিয়ে চ্যানেল এস প্রতিনিধিকে হুমকি ও তার ক্যামেরা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
এতকিছুর পরো অদ্যবধি কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ট্রাক্টর চালক ও মালিকদের গঠিত কমিটি প্রশাসন ও রাজনৈতিক এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিয়মিত মাসোহারা দিচ্ছে যে কারনে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, কেশবপুর পৌর শহরে জামান ব্রিকসসহ সবকটি ব্রিকসে প্রতিদিন কৃষি জমি থেকে ট্রাক্টরে মাটি আনা নেয়া করা হচ্ছে। মেইন সড়ক দিয়ে মাটি নেয়ার ফলে মাটি ছিটে রাস্তায় পড়ছে। এছাড়াও বিভিন্ন নিচু জমিতে মাটি নিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। খরচ কম হওয়ায় সর্বক্ষেত্রেই ট্রাক্টরের ব্যবহার করা হচ্ছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন এই মরনযান কিশোর ও অল্প বয়স্ক ছেলেরা ড্রাইভিং করছে। তারা বেপরোয়া গতিতে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ট্রাক্টরের মাটি রাস্তায় পড়ে রাতের কুয়াশায় পিচের রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে যাচ্ছে। এই সড়কে যাতায়াত করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে একাধিক পথচারীরা দূর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
উপজেলা ট্রাক্টর সমিতির সভাপতি মিন্টু জানান, কেশবপুরে প্রায় অর্ধ শতাধিক ট্রাক্টর রয়েছে এর মধ্যে ৩৪ টি ট্রাক্টরে মাটি, বালি ও ইট বহন করার কাজে ব্যবহৃত হয়। ট্রাক্টর সড়কে চলাচল করা অবৈধ সেটা আমরা জানি কিন্তু সরকারি কাজ ও মানুষের প্রযোজনে অহরহ ট্রাক্টর ব্যবহার করা হয়। অবৈধ হওয়ায় সড়কে চলাচল করতে গিয়ে অনেক ঝুটঝামেলা হয় যে কারণে ৫ বছর আগে ৩৪ জন ট্রাক্টর মালিকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সড়কে সমস্যা হলে ওই কমিটির মাধ্যমে সবকিছু ম্যানেজ করা হয়।
সড়কে অনেক অবৈধ যানবাহন চলাচল করে তাদের বিরুদ্ধে তেমন ব্যবস্থা নেয়া হয় না কিন্তু ট্রাক্টর মালিকদের নানাবিধ ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
কেশবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফ উজ জামান খান বলেন, উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায় ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ করা হয়।
সভায় উপস্থিত সকল সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত ও থানা পুলিশ ট্রাফিক আইনের মাধ্যমে ট্রাক্টর চলাচল বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জসীম উদ্দীন বলেন, ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে তিনটি ট্রাক্টর আটক করে ট্রাফিক আইনে মামলা দেয়া হয়েছে। ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে থানা পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি এক ট্রাক্টর চালককে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যহত থাকবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)