শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

সংষ্কার ও সংরক্ষণ জরুরী

ভগ্নদশায় দাঁড়িয়ে আছে কলারোয়ার ঐতিহাসিক মঠবাড়ি মন্দির

মঠবাড়ি মন্দির। মধ্যযুগীয় পুরাকীর্তির নিদর্শন। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়ায় আজো দাঁড়িয়ে আছে স্বমহিমায়। তবে অনেকটা অযত্ন, অবহেলা আর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভগ্নাদশায় রূপ নিয়েছে ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে সোনাবাড়িয়া গ্রামে ঐতিহাসিক এই প্রত্নস্থলটির অবস্থান। ২৫৭ বছরের পুরানো ৬০ ফুট উঁচু টেরাকোটা ফলক খচিত পিরামিড আকৃতির এই মঠ-মন্দির প্রাচীন স্থাপত্যের অপরূপ নিদর্শন হয়ে আজো দাঁড়িয়ে আছে। এখনো প্রতিদিন নানান বয়সী দর্শনার্থীরা সেখানে যান সময় কাটাতে, পাশে পিকনিকও করেন অনেকে। মঠবাড়ি মন্দিরকে ঘিরে বিনোদন ও পর্যটন স্পট হওয়ার বারবার হাতছানি দেখা দিলেও কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। জরাজীর্ণ ও ভগ্নপ্রায় এই ঐতিহাসিক মঠ-মন্দিরটি এখনই সংস্কার ও সংরক্ষণ করা না গেলে একটি ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন বিনষ্ট হতে পারে।

প্রত্নতত্ত অধিদপ্তরের সাবেক উপ-পরিচালক মো. মোশারফ হোসেনের লেখা ‘প্রত্নতাত্তিক জরিপ প্রতিবেদন বৃহত্তর খুলনা’ বইটিতে উল্লেখ করা হয়েছে- এ মন্দিরটি ১৭৬৭ খ্রিস্টাব্দে জনৈক হরিরাম দাশ (মতান্তরে দুর্গাপ্রিয় দাশ) নির্মাণ করেছিলেন। যেটি সতীশ চন্দ্র মিত্রের বইয়েও উল্লেখ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা ও জানা গেছে, এই পুরাকীর্তিটি ত্রি-তল বিশিষ্ট নবরতœ মন্দির। এটিই ‘শ্যামসুন্দর মন্দির’ নামে পরিচিত। এর সাথে লাগোয়া রয়েছে দুর্গামন্দির ও শিবমন্দির। দেখতে মন্দিরটি একটি পিরামিড আকৃতি ধারণ করেছে। দক্ষিণমুখী এই মন্দিরের নিচের তলার ভিতরের অংশে চারটি ভাগ রয়েছে। প্রথম ভাগের চারপাশে রয়েছে ঘূর্ণায়মান টানা অলিন্দ। দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে একটি মন্ডপ। তৃতীয় ভাগের পশ্চিম পাশের কোঠা এবং মাঝের কোঠাটির উত্তরে একটি করে প্রকোষ্ঠ রয়েছে। কিন্তু পূর্বাংশের কোঠাটির পিছনে রয়েছে একটি অলিন্দ, যেখানে দ্বিতল ভবনে ওঠার সিঁড়ি রয়েছে। ধারণা করা যায়, পূর্ব ও পশ্চিম কোঠা দুটিতে সংরক্ষিত মূর্তির উদ্দেশ্যে মন্দিরটি নিবেদিত ছিল। দ্বিতলে রয়েছে একটি দক্ষিণমুখী কোঠা। ত্রি-তল ভবনটি তুলনামূলক ছোট। এর দক্ষিণ দিকের মধ্যের খিলানটির ওপর একটি পোড়ামাটির ফলক রয়েছে। এই মন্দিরগুচ্ছের দক্ষিণে একটি অসম বাহুবিশিষ্ট চৌকো দিঘি আছে। বর্তমানে এ মন্দিরগুচ্ছ পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এই মঠের পাশে আরো ৮টি (মতান্তরে ১০টি) মন্দির ছিল।
মঠ মন্দিরগুচ্ছের অল্প দক্ষিণে ‘জমির বিশ্বাসের পুকুর’ নামে যে জলাশয়টি আছে সেটির পাকাঘাটে ব্যবহৃত ইটের সাথে ‘অন্নপূর্ণা মন্দির’ এর ইটের মিল পাওয়া যায়। তাতে ধারণা করা হয়, পুকুরটি একই সময়কালের নিদর্শন। বর্তমানে এই ঐতিহাসিক পুকুরটি বিষমবাহুর আকার ধারণ করেছে।

বিশিষ্ট লেখক প্রফেসর আবু নসরের লেখা ‘কলারোয়া উপজেলার ইতিহাস’ বইতেও এই প্রাচীন মঠটি সম্পর্কে অনুরূপ তথ্য-উপাত্ত উল্লেখিত রয়েছে।

লেখক মোশারফ হোসেনের ওই জরিপ বইয়ে আরো বলা হয়েছে- শ্যামসুন্দর মঠের নিচে রয়েছে একটি উঁচু নিরেট মঞ্চ। এর প্রত্যেক তলার ছাদপ্রান্ত ধনুকের মত বাঁকা। কোণগুলো কৌণিক। এগুলোর ছাদের ওপর ক্রমান্বয়ে ধাপে ধাপে ঊর্ধ্বমুখী গম্বুজ রয়েছে। আর মাঝখানে তুলনামূলক বড় একটি রতœ রয়েছে। এটি তাই ‘নবরতœ স্মৃতি মন্দির’। নবরতœ বা শ্যামসুন্দর মঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে আরও একটি দক্ষিণমুখী মন্দির আছে। এটি ‘দুর্গা মন্দির’ নামে পরিচিত। শ্যামসুন্দর মন্দিরের গা ঘেঁষে পূর্বমুখী মন্দিরটিতে ৩ ফুট উঁচু একটি কালো পাথরের শিবলিঙ্গ আছে। এর ওপর একটি ভাষ্য ফলক পাঠোদ্ধার অনুপযোগী অবস্থায় সংস্থাপিত আছে। এর ছাদ চৌচালা, কার্ণিশ ধনুকাকারে বাঁকা এবং কোণগুলো কৌণিক। এটি ‘অন্নপূর্ণা মন্দির’ নামে পরিচিত। এগুলো গাঁথা হয়েছে চুন ও সুরকি মিশ্রিত মসলা দিয়ে।

অনেকের মতে, রামহংস পরমানন্দ এক সময় মন্দিরগুলো পরিদর্শনে এসেছিলেন।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৬ অক্টোবর এই মঠ-মন্দির সরেজমিনে পরিদর্শনকালে তৎকালীন ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার সদ্বীপ চক্রবর্তী ঐতিহাসিক এই স্থাপনা সংস্কার ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার গুরুত্বারোপ করেছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে প্রত্নতত্ত বিভাগ, খুলনা জাদুঘর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের টিমসহ বিভিন্ন দপ্তর থেকে এটি পরিদর্শন করা হয়েছে। তবে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ এখনো সেভাবে দৃশ্যমান হয়নি।

এলাকার মানুষ জানান, প্রত্নতত্ত বিভাগ মন্দিরগুচ্ছের সংরক্ষণের দায়িত্ব নিক।

সোনাবাড়িয়া সম্মিলিত হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আখতার আসাদুজ্জামান বলেন, এই পুরাকীর্তি সংরক্ষণ করা হলে এটি সকলেরই নজর কাড়বে। শিক্ষার্থীদেরও আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে এটি পরিণত হবে।

সোনাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান বেনজির হোসেন হেলাল, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধেশ্বর চক্রবতীসহ এলাকার অনেকের মতে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ঐতিহাসিক এই স্থাপনা সংস্কার ও সংরক্ষণ করা গেলে এটি হতে পারে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ পুরাকীর্তিপ্রেমী মানুষের কাছে দর্শনীয় স্থান ও আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন বলেন, তিনি একাধিকবার সোনাবাড়িয়ার এই ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন পরিদর্শন করেছেন। এটি রক্ষার্থে সংস্কার ও সংরক্ষণ করা অতি প্রয়োজন। এরজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

একই রকম সংবাদ সমূহ

বিশ্ব ইজতেমার দুই পর্বের তারিখ চূড়ান্ত

২০২৫ সালে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে তারিখ চূড়ান্ত করাবিস্তারিত পড়ুন

কলারোয়ায় মাদকসেবন ছাড়ার শপথ অর্ধশত যুবকের

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় মাদকের ভয়াল গ্রাস থেকে যুব ও তরুণদের মুক্ত করতে তওবাবিস্তারিত পড়ুন

হাত কাঁপছিলো-কপাল ঘর্মাক্ত, কালিমা পাঠ শেষেই হেসে উঠলেন

শিরোনামের এই ঘটনা ঘটে এক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী যুবকের ইসলাম গ্রহণের সময়। শুক্রবারবিস্তারিত পড়ুন

  • ৩০ নভেম্বরের পর হজের নিবন্ধন করা যাবে না : ধর্ম মন্ত্রণালয়
  • সংবিধান সংশোধনে শায়খ আহমাদুল্লাহর প্রস্তাবনা
  • সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও ধৈর্য ধারণের আহ্বান শায়খ আহমাদুল্লাহর
  • বিশ্ব ইজতেমার দুই পর্বের তারিখ ঘোষণা
  • তুরস্কে কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশের মুয়াজ
  • হজ প্যাকেজের মূল্য কমলো, সর্বনিম্ন খরচ ৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা
  • বাংলাদেশে রোজা শুরুর সম্ভাব্য তারিখ
  • ২০২৫ সালে হজে যেতে নিবন্ধনের শেষ তারিখ ঘোষণা
  • বক্তব্য নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি, যা বললেন ধর্ম উপদেষ্টা
  • পূজামণ্ডপে ইসলামী ভাবধারার গান নিয়ে বিতর্ক, যা জানা গেলো; দুজন গ্রেপ্তার
  • ফের মালয়েশিয়ায় মিজানুর রহমান আজহারী
  • দূর্গা পুজোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে মহিলা পরিষদের স্মারকলিপি