শ্বশুরের জন্য দোয়া চাইলেন নায়ক রিয়াজ
চিত্রনায়ক রিয়াজ শ্বশুর আবু মহসিন খানের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন। তিনি তার শ্বশুরের জন্য দোয়া চেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে যান রিয়াজ। সেখানে তার শ্বশুরের ময়নাতদন্ত হয়।
মর্গ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকরা রিয়াজের কাছে জানতে চান মহসিন খানের আত্মহত্যা ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কারণ সম্পর্কে।
এসময় রিয়াজ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আপনারা আমার বাবার (শ্বশুর) জন্য দোয়া করবেন, যেন আল্লাহ তাকে মাফ করে দেন। বেহেশত নসিব করেন। এর বাইরে আমি আর কিছু বলতে পারছি না।
এর আগে বুধবার রাত ৯টার দিকে নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন আবু মহসিন খান (৫৮)। আত্মহত্যার আগে তিনি নিজের ব্যক্তি জীবনের নানা হতাশার কথা তুলে ধরেন।
লাইভে এসে মহসিন খান বলেন, ‘আমার বয়স ৫৮ বছর, কোনো একসময় আমি খুব ভালো ব্যবসায়ী ছিলাম। বর্তমানে আমি ক্যানসার রোগে আক্রান্ত। তাই এখন আমার কোনো ব্যবসা বা কোনো কিছুই নেই। আজকের লাইভে আসার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমার অভিজ্ঞতা আপনাদের জানানো। এ অভিজ্ঞতা থেকে আপনারা হয়তো অনেক কিছু জানতে পারবেন, সাবধানতা অবলম্বন করবেন। গত ৩০ তারিখ আমার খালা মারা যান। উনার একটি ছেলে, কিন্তু মা মারা যাওয়ার খবর পেয়েও সে দেশে আসেনি। এ বিষয়টি আমাকে অনেক দুঃখ দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার একটা ছেলে, সে অস্ট্রেলিয়াতে থাকে, আমি আমার বাসায় সম্পূর্ণ একা থাকি। খালা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার ভেতরে ভয় ঢুকে গেছে। আমি যদি আমার বাসায় মরে পড়ে থাকি, আমার মনে হয় না, এক সপ্তাহেও কেউ জানতে পারবে না। এজন্য লাইভে আসা।’
‘ছেলে–মেয়ে, স্ত্রী-যাদের জন্য যাই কিছু আমরা করি। আমরা সব কিছু করি সন্তান এবং ফ্যামিলির জন্য। আপনি যদি একশ’ টাকা ইনকাম করেন, আয় করেন তার ২০ পারসেন্ট টাকাও আপনি নিজের জন্য ব্যয় করেন না। যদি ২০ পারসেন্ট টাকা আপনি নিজের জন্য ব্যয় করেন, তাহলে ৮০ পারসেন্ট টাকা আপনার ফ্যামিলির জন্য ব্যয় হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত করোনা শুরুর আগে থেকে আমি বাংলাদেশে আছি। একা থাকা যে কী কষ্ট-যারা একা থাকেন, তারাই বলতে পারেন। যাদের জন্য আমি বেশি করছি, প্রত্যেকটা লোকের কাছে আমি প্রতারিত হয়েছি। আমার এক বন্ধু ছিল, নাম কামরুজ্জামান বাবলু। যাকে আমি না খেয়ে তাকে খাইয়েছি। সে আমার ২৩-২৫ লাখ টাকা মেরে দিয়েছে।’
ফেসবুক লাইভে ব্যক্তি জীবনের হতাশার কথা বলতে গিয়ে কয়েকবার কেঁদেও ফেলেন মহসিন খান। আত্মহত্যার ঠিক আগমুহূর্তে তিনি তার ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে কথা বলেন। বলেন, ‘তোমরা একটা ভাই, একটা বোন মিলেমিশে চোলো। আর বাবা হিসেবে আমাকে ক্ষমা করো। ভালো থেকো।’
এরপরই তিনি মাথায় গুলি করেন। তখন তার মোবাইলটি বেজে ওঠে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক ল্যাবের বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আক্তার বলেন, আবু মহসিন খান একাই ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন। তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নন বলে টাইপ করা একটা সুইসাইড নোটে লিখে গেছেন তিনি। এছাড়া দরজার সামনে লেখা ছিল ‘মামা দরজা খোলা হাতলের হ্যান্ডেল চাপ দিয়ে ভিতরে ঢুক।’
তিনি আরও বলেন, সুইসাইড নোটগুলো ধানমন্ডি ক্রাইম টিমের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট সম্পর্কিত বিষয়গুলো সিআইডির কাছে রয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)