সাতক্ষীরা থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ দেশে ৫০০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কামারালী গ্রামের আম চাষী আমির হোসেন,সোলাইমান মোড়ল একই উপজেলার যুগিখালী গ্রামের মসিয়ার রহমান এবং তালার নগরঘাটা গ্রামের আব্দুস সাত্তার এবার বেজায় খুশি। খুশির কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, গেলবার আম্ফান ঝড়ে তাঁদের গাছের সব আম নষ্ট হয়ে যায়। এবার ঝড়ে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আশানুরূপ ফলনও হয়েছে। ল্যাংড়া, গোপালভোগ, হিমসাগর বাগান থেকে বিক্রি শেষ। এখন আম্রপালি গাছ থেকে পাড়া হচ্ছে।
তারা আরো বলেন, ফলনে আশার আলো দেখলেও করোনাকালে এবার দামে মার খেতে হয়েছে। এ পর্যন্ত তারা প্রায় আট লাখ টাকার আম বিক্রি করেছেন। তাঁদের মতো একই অবস্থা জেলার ১৩ হাজার আম চাষির। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি না হওয়ায় আম চাষ করে ফলনে লাভবান হলেও মার খেয়েছে দামে।
জানা যায়, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা থেকে ৫০০ মেট্রিক টন আম জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের বাজারে রপ্তানি করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা বাজারের আম ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক জানান, আড়তে এ বছর প্রচুর আম উঠেছে। কিন্তু চাষিরা প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম পাননি। বাইরের পাইকাররা আড়ত থেকে বাকিতে আম নিয়ে টাকা পরিশোধ করছেন না। আম পচনশীল ফল হওয়ায় গাছ থেকে পাড়ার পর আড়তে দুই-তিন দিনের বেশি রাখাও যায় না। ফলে ঢাকা, বরিশালসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের মহাজনদের কাছে বাকিতে বিক্রি করতে হয়েছে। অন্যদিকে বাগান পরিচর্যার জন্য অনেক আম চাষি আড়ত থেকে আগাম টাকা গ্রহণ করে থাকেন। যেসব বাগান মালিকদের আগাম টাকা দেওয়া হয় তাঁদের আম না কিনে পারা যায় না। ফলে ব্যবসায় এবার লোকসান গুনতে হয়েছে।
সাতক্ষীরার গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া ও আম্রপালি আমের সুনাম দেশজুড়ে। এ বছরও জেলার আম সরকারি ব্যবস্থাপনায় বাগান থেকে বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। আবহাওয়াজনিত কারণে দেশের অন্য সব জেলার আম পাকার আগেই সাতক্ষীরার আম পাকতে শুরু করে। এ জন্য দেশের বাজারে সবার আগে বিক্রি শুরু হয় সাতক্ষীরার আম। স্থানীয় প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ থেকে বেঁধে দেওয়া সময়ের আগে কোনো চাষি আম পেড়ে বাজারজাত করেন না। তবে এবার এলাকায় গোবিন্দভোগ আম আগেভাগে পাড়ার অনুমতি মিলেছে।
জেলা আম চাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি লিয়াকত হোসেন বলেন, সাতক্ষীরা থেকে ল্যাংড়া, হিমসাগর, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস ও ক্ষীরসরাইসহ বিভিন্ন জাতের আম বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, বিদেশে আম রপ্তানির জন্য মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষি বিভাগের তত্ত¡াবধানে জৈব পদ্ধতিতে বাগান পরিচর্যা শুরু করেন চাষিরা। এরই মধ্যে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা থেকে নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা থেকে ৫০০ মেট্রিক টন আম জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের বাজারে রপ্তানি করা হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)