শনিবার, মে ১৮, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

সাতক্ষীরা মেডিকেলে রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় সাতক্ষীরার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে দেখা দিয়েছে চিকিৎসা সংকট। সীমিত লোকবল নিয়ে রোগীর চাপ সামলানো গেলেও ভবিষ্যতে জনবল না বাড়ালে বড় বিপর্যায়ে পড়বে চিকিৎসা ব্যবস্থা। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল বানানোর দাবী নাগরিক সমাজের।

সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৪জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের দু’জন মহিলা ও দু’জন পুরুষ। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ জেলার সরকারী বেসরকারী হাসপাতালগুলোতে মোট করোনা পজিটিভ চিকিৎসাধীন আছেন ৫৪৯ জন। এপর্যন্ত জেলায় করোনায় মৃত্যু ৪৯ জন ও করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ২৩৯ জন।

বৃহস্পতিবার ৯৫ জনের করোনা টেস্ট করে ৪৮জনের পজিটিভ এসেছে। যার আক্রান্তের হার ৫০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। জেলায় এপর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছে ২,১৪৫জন। করোনা রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমনকি দেখা দিয়েছে চিকিৎসক, সেবিকা ও শয্যা সংকট। ভর্তি হওয়ার সুযোগ না পেয়ে অনেকেই বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের করোনা ইউনিটে চিকিৎসা নেওয়া মাহমুদা ও দোলেনা বেগমের স্বজনরা চিকিৎসক ও নার্সদের সেবায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।

মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা নেওয়া এক রোগীর স্বজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানকার সেবা মোটামুটি ভালো পাচ্ছি। তবে যে সেবিকারা করোনার রোগীদের সেবা দিচ্ছেন, শুনেছি তারাই আবার এখানে সেবা দিচ্ছেন। এ নিয়ে আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। সুস্থ হতে এসে আবারও করোনা নিয়ে বাড়ি ফিরবো নাতো?

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক আনিসুর রহিম বলেন, করোনা নিয়ে মানুষকে সচেতনতা তৈরী করা দরকার কিন্তু স্বাস্থ্যবিভাগ সেটা সঠিকভাবে করছে না। যারা করোনা পরীক্ষা করাতে ইচ্ছুক সবাইকে পরীক্ষা করা হয় না। অধিকাংশ মানুষকে বাড়ি যেয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে বলা হয়। পরীক্ষা কম হচ্ছে। মারাত্মক রোগী এবং ধরে নেওয়া হয় যাদের করোনা হয়েছে শুধু তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে, সেকারণে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সাতক্ষীরা মেডিকেলের চিকিৎসা সেবা তুলনামূলক ভালো। তবে করোনা ইউনিট সম্পূর্ণভাবে আলাদা না থাকার কারণে ডাক্তার, নার্স এবং স্টাফ আলাদা না থাকার কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনার চিকিৎসা দেওয়া হলেও তাদের আলাদা করোনা ইউনিট না থাকায় তাদের কারণে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলার করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল না করা হলে ভবিষ্যতে জেলা স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়বে।
তিনি আরও বলেন, করোনা চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল হয়ে যাচ্ছে কিছু কিছু ডাক্তারদের কারণে। তারা অযথা ওষুধ ও ইনজেকশন দিচ্ছেন। এটা থেকে চিকিৎসকের বিরতি থাকার অনুরোধ জানান তিনি।

স্বাস্থ্যসেবার দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, ডাক্তার, নার্স ও স্টাফ সংকট। অনেক নার্স করোনা আক্রান্ত হয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তাদের হোম কোয়ারেন্টিন দরকার কিন্তু তাদের ছুটি দিলে তো হাসপাতাল চলবে না। সে কারণে তাদের দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। তারা রোগ ছড়াচ্ছে। তাদের মাধ্যমে আরও অনেক মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছে। করোনা ইউনিটে কাজ করে দুইদিন পর সে অন্য ইউনিটে যাচ্ছে সে কারণে সুস্থ মানুষ ওই নার্সের কারণে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে।

তারা আরও বলেন, অনেক চিকিৎসক নিজের চেম্বারে রোগী দেখে মেডিকেলে পাঠিয়ে দিচ্ছেন, এতে এখানকার সেবিকরা বিপদে পড়ছেন। মেডিকেলের অনেকে অস্থায়ী নিয়োগে আছেন। কিছু আবার ঠিকাদারী নিয়োগের মাধ্যমে কাজ করেন। কিন্তু তারা বেতন-ভাতা ঠিকমতো পায় না। তারা অফিসেও ঠিকমতো আসেনা। তাদের কারণে সেবা কিছুটা ব্যহত হচ্ছে। অনেক চিকিৎসক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্লাসের নাম করে প্রাইভেট প্রাকটিস করছেন। ইন্টার্নশিপ চিকিৎসকদের দিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে চিকিৎসা দিচ্ছেন কিছু কিছু ডাক্তার।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা: সুব্রত ঘোষ বলেন, সাতক্ষীরার বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তৎপরতায় কঠোর লকডাউন পালিত হচ্ছে। চিকিৎসক ও সেবিকরা পর্যাপ্ত জনবলের অভাবের পরও পরিবার ও নিজেকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে প্রতিনিয়ত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তবে শিফটিং ডিউটি ও সঠিক কোয়ারেন্টিনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় বিধি নিষেধ মানা হচ্ছে না। এতে করে চিকিৎসক, সেবিকা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেরাই করোনার আক্রান্তের ঝুঁকিতে থাকছে ও করোনার বাহক হিসেবেও কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, সদর হাসপাতালে ভর্তি থাকা করোনা রোগী ও স্বজনরা সঠিক নজরদারীর অভাবে যত্রতত্র ঘোরফেরা করছে। এমনকি নিজেরাই হাসপাতাল পার্শবর্তী ফার্মেসীতে ওষুধ কিনতে যাচ্ছে। কোভিড ও নন কোভিড ওয়ার্ডে একই পরিচ্ছন্ন কর্মী কাজ করছেন। এতে করে করোনা আক্রান্তের হার বৃদ্ধি ও ছড়িয়ে পড়ার সম্ভবনা প্রকট হচ্ছে। এক কথায় চিকিৎসা ব্যবস্থায় চলছে হ য ব র ল। জেলাবাসীকে করোনার মহামারীর হাত থেকে বাঁচাতে অচিরেই সুষ্ঠু ও সমন্বিত চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা শুরু করা প্রয়োজন।

সাতক্ষীরা মেডিকেলের নার্সিং সুপারভাইজার অর্পণা রাণী পাল বলেন, জেলায় প্রতিনিয়ত করোনা বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু সীমিত সংখ্যাক জনবল নিয়ে সেবা দিতে যেয়ে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। মেডিকেলে ১৮ ইউনিট চালু আছে। করোনা রোগীর সেবা করার পরও কোয়ারিন্টিনে রাখতে পারছি না। তারপরও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সেবিকা ১৬৫ জন থাকার কথা থাকলেও আছে ১৫০ জন। বর্তমানে ডিউটি করছে ৯৫ জন। ৬০ সেবিকার মধ্যে কেউ কোয়ারিন্টিনে আছে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ৯ জন করোনা পজেটিভ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তারপরও সবোর্চ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. কুদরত-ই-খুদা বলেন, এখানে চিকিৎসক ও নার্স সংকট। চিকিৎসক যেখানে থাকার কথা ৫৮ জন তার বিপরীতে আছে ৩১জন। ২৭টি পদ শুন্য। নার্স যেখানে থাকার কথা ১৬৫ জন সেখানে আছে ১৫৬ জন। কিন্তু এখানে অনেক সমস্যা আছে ১৪দিন ডিউটি করানোর পর তাকে আবার ১৪ দিন কোয়ারিন্টিনে রাখাতে হয়। এতে ৩৬ জন অফ থাকছে সব সময়। ৭/৮জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। ১০জন আছে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছে। ১২০ টি বেডে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি আছে। ডাক্তার ও নার্স সংকটের জন্য ওই ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। করোনা যেভাবে সাতক্ষীরায় বেড়েই চলেছে তা সামাল দিতে শয্যার পাশাপাশি ডাক্তার ও নার্স এর সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। এর জন্য জনবল বাড়াতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বার বার চিঠি লিখছি। কিন্তু কোনো সুফল পাচ্ছি না।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত বলেন, আমাদের আগাগোড়াই জনবল সংকট ছিল। করোনা রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় সংকটটি প্রকোট হয়েছে। এইভাবেই সামাল দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। এমনকি সদর হাসপাতালে করোনা বেড ১০টি থেকে বাড়িয়ে ৪০টি বেডে রুপান্তরিত করেছি। এছাড়াও প্রত্যেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ৫ টি করে বেড এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ডাক্তারের পদায়ন চেয়ে স্বাস্থ্যদপ্তরে বার বার চিঠি পাঠিয়েছি। ভিডিও কনফারেন্স বলেছি। কিন্তু তার কোনো সদুত্তর পাইনি। তবে চিকিৎসকের চেয়ে এখন বেশি দরকার সাপোর্ট স্টাফ। করোনা রোগী কিভাবে হাসপাতালের বাইরে আসছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে একজন অভিযোগ করছেন। মেডিকেলে ভর্তির জায়গা নেই। এখন মেডিকেল থেকে সদরে রেফার করা হচ্ছে। করোনার আগে সদরে হাসপাতলে আনছার (নিরপত্তাকর্মী) বরাদ্দ চেয়ে চিঠি লিখেছিলাম কিন্তু পাইনি। নিরাপত্তা কর্মী ছাড়া আমার তো করার কিছু নেই। আগামী সপ্তাহে সদর হাসপাতাকে করোনা হাসপাতাল ঘোষণা করবো আর সাধারণ রোগী ভর্তি করবো না। জেলায় করোনা রোগীদের সেবা সঠিকভাবে দিতে জনবল সংকট সমাধান করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

একই রকম সংবাদ সমূহ

সাতক্ষীরার প্রথিতযশা সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদের সুস্থতা কামনা

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক, চ্যানেল আই এরবিস্তারিত পড়ুন

তালায় ট্রাক উল্টে ২ শ্রমিক নিহত, আহত ১১

সেলিম হায়দার, তালা (সাতক্ষীরা): সাতক্ষীরার তালায় ট্রাক উল্টে দুই শ্রমিকের প্রাণ গেছে।বিস্তারিত পড়ুন

আলিপুর ও ফিংড়ী ইউনিয়নে সচেতনতামূলক পথনাটক প্রদর্শন

জি.এম আবুল হোসাইন : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের ফয়জুল্ল্যাহপুর উত্তর পাড়াবিস্তারিত পড়ুন

  • সাতক্ষীরায় তরুন নারীদের উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ
  • সাতক্ষীরায় অন্ত:কক্ষ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী
  • সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসকল্পে বিনেরপোতা এলাকায় মোটরযানের উপর মোবাইল কোর্ট
  • সাতক্ষীরায় শিশু সুরক্ষা ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কিশোর কিশোরীদের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মশালা
  • সাতক্ষীরা জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের ০৪ (চার) বছর মেয়াদী নির্বাচনের তপশীল ঘোষণা
  • সাতক্ষীরা জেলা জজের সাথে আইনজীবী সহকারীদের সৌজন্য সাক্ষাৎ
  • আশাশুনি নির্বাচনে পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কর্তৃক সংগঠন পরিপন্থী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
  • এমপি আশুর পক্ষ থেকে খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ইমাম কুতুবউদ্দিনকে সংবর্ধনা
  • সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করলেন এমপি সেঁজুতি
  • সাতক্ষীরা পৌর ভূমি অফিসে নায়েবের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে গড়িমাসি
  • দেবহাটায় পুষ্টি সপ্তাহ উদ্যাপন
  • দেবহাটার সখিপুর ইউনিয়ন স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা