সাতক্ষীরায় এসপিসির খপ্পরে কয়েক’শ যুবক, লক্ষ টাকা লোপাট
সাতক্ষীরায় এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস এর এজেন্টদের মধুর কথায় প্রলুব্ধ হয়ে কয়েক শত যুবকের স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়েছে, লুট হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা, পথে বসেছে কয়েকশ পরিবার।
উল্লেখ্য যে, এমএলএম পদ্ধতিতে কেউ এসপিসিতে ১২০০ টাকা দিয়ে আইডি খোলার পর তার অধীনে আরও তিনজনের আইডি খোলাতে পারলে তিনি হবেন ক্লাব মেম্বার। ওই তিনজনের অধীনে আরও তিনজন করে জয়েন করাতে পারলে হবেন রয়েল মেম্বার। রয়েল মেম্বাররা প্রতিদিন কোম্পানির লভ্যাংশের ২০ শতাংশ পান।
এর পরে রয়েছে ইনসেনটিভ বোনাস নামে উচ্চ পর্যায়ের এমএলএম নেটওয়ার্ক। এখানে কোনো আইডির অধীনে তিন লাইনে ১০০ করে মোট ৩০০ আইডি খোলাতে পারলে তিনি হন ১ স্টার রয়েল। ১ স্টার রয়েল হলে কোম্পানির লাভের সাড়ে ১৭ শতাংশ এবং সঙ্গে সিকিম বিমান ট্যুরের প্রলোভন। তিন লাইনে ৬০০ করে মোট ১৮০০ আইডি খোলাতে পারলে ২ স্টার রয়েল। তাদের জন্য ১৫ শতাংশ শেয়ার ও নেপাল ট্যুর। তিন লাইনে ১০০০ করে মোট ৩০০০ হাজার আইডি খোলাতে পারলে ৩ স্টার রয়েল। এবার সাড়ে ১২ শতাংশ শেয়ার ও থাইল্যান্ড ট্যুরের প্রলোভন। একইভাবে সর্বোচ্চ প্রতি লাইনে ১৫০০০ করে মোট ৪৫০০০ আইডি খোলাতে পারলে সাত স্টার রয়েছে। সাত স্টার হলে কোম্পানির আড়াই শতাংশ শেয়ার ও নগদ ২৫ লাখ টাকার প্রলোভন।
এমন সব লোভনীয় অফার নিয়ে সাতক্ষীরা কদমতলা বাজার সংলগ্ন স্থানে এসপিসির এজেন্ট মোঃ নাসিরুল ইসলাম (নয়ন), শফিকুল ইসলাম (৭স্টার), মোঃ মিজানুর রহমান (ফুজি কালারের স্বতাধীকারি) গং এলাকার যুবকদেরকে আকৃষ্ট করে।
একজনের অধীনে এভাবে বিপুল পরিমাণ আইডি খোলানোর নিয়মে লভ্যাংশের কথা বলা হয়েছে বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব নেই। এসপিসির বাস্তবে কোনো ব্যবসা নেই। মূলত প্রতিদিন ১২০০ টাকা করে দিয়ে যে হাজার হাজার মানুষকে আইডি খোলানো হয় সেই টাকা ভাগবাটোয়ারা হয়।
তাদের এমন সব লোভনীয় অফারে করোনাকালীন পরিবারের দারিদ্রতাকে ঘোচানোর লক্ষ্যে মোঃ ফারুক হোসেন, সাকির আহমেদ, মোঃ জীবন, মোঃ শাহিন, মোঃ রাসেল, আল-আমিন, আরিফ, সাইফুল, সাব্বিরসহ নাম না জানা অনেক যুবক আজ সর্বশান্ত। পরিবারের কাছে তারা আজ অবহেলার পাত্রে পরিনত হয়েছে। গতকাল এসপিসির সিও গ্রেফতার হওয়ার পর তারা কেউ পরিবারের লোকের সাথে দেখা করতে পারছে না, কেউ কেউ আত্মগ্লানীর ফলে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ভাবছে। সামনে অনেকের এইচএসসি পরীক্ষা, অনেকের আবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যলয়ের ভর্তি পরীক্ষাও আছে। ফলে ঝরে যেতে পারে অনেক শিক্ষার্থীর জীবন, শেষ হতে চলেছে অনেক বাবা-মায়ের স্বপ্ন।
সরোজমিনে খোজ নিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগীর অনেকে বিভিন্ন সমিতি থেকে চড়া সুদে ঋন নিয়ে, গোয়ালের গরু বিক্রী করে, আবার কেউ কেউ বাবার চাষের সর্বশেষ জমিটি বন্ধক রেখে এসপিসির একাউন্ট ক্রয় করে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)