সিলেট ও সাতক্ষীরার দুই কিশোরী সমকামীতা বিয়ের উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়েছে
আবু সাঈদ, সাতক্ষীরা: ফেসবুক ও টিকটকের মাধ্যমে দুই কিশোরীর পরিচয়। বন্ধুত্ব থেকে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। একজনের বাড়ি কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের ব্রজবাকসা গ্রামের মৃত আনিছুর রহমানের মেয়ে রুবিনা (১৯), আরেকজনের বাড়ি সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার মুনছুরের মেয়ে মহীমা (১৬)।
১৯ ও ১৬ বছর বয়সী এই দুই কিশোরীর মধ্যে এক বছর ধরে চলেছে প্রেম। অবশেষে বুধবার (০৩ জানুয়াারী) প্রেমের টানে দূরপথ পেরিয়ে সিলেটের কিশোরী সংসার করতে চলে এসেছে কলারোয়ায়। পরিবার মেনে না নিলে প্রয়োজনে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে গার্মেন্টসে কাজ করে জীবন চালাতেও প্রস্তুত তারা।
বিষয়টি নিয়ে কলারোয়া উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কিশোরীর পরিবার পড়েছেন বিপাকে। স্বজন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই কিশোরী প্রায় এক বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ও টিকটকে পরিচিত হয়। সেই থেকেই ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ হতো তাদের। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে মহীমা ঢাকা থেকে সোজা রুবিনার বাসায় আসলে দুজনে একত্রিত হলে, তাদের দেখতে দলে দলে লোকজন বাড়িতে ভিড় জমান। এই দুই কিশোরীর সংসার করার সিদ্ধান্তে কিশোরীদের স্বজনরাও হতভম্ব। স্থানীয়রা বলছেন, বাংলাদেশে সমলিঙ্গের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকৃত নয়। দুই কিশোরীর অযৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার মতো না। খুব দ্রæত দুই মেয়েকেই পৃথক করা প্রয়োজন। কিশোরীদের অপরিণত চিন্তা এবং অবান্তর সিন্ধান্তের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে এসে তাদের স্বাভাবিক নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
কলারোয়ার কিশোরীর মা বলেন, ও আমার আদরের একমাত্র সন্তান। তার কাজে আমি খবুই কষ্ট পেয়েছি। সিলেটের ওই মেয়েটিকে তার বাড়িতে চলে যেতে বলছি, সে যাচ্ছে না। সে কিছুতেও আমার মেয়েকে ছাড়া যাবে না। পরে তার পরিবারকে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। প্রশাসনকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে খুবই বিপদে আছি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুন বলেন, ‘সিলেটের ওই মেয়েটি মঙ্গলবার সকালে এসেছে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। দুই কিশোরীর দাবি- তারা কেউ কাউকে ছাড়া থাকবে না। তারা গার্মেন্টসে চাকরি করে একত্রে সারাজীবন কাটাবে বলে জানিয়েছে। এক্ষেত্রে তারা একে অপরকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন।’
দুই কিশোরীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ফেসবুক ও টিকটকের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের তৈরি হয়। আমরা এখন কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারবো না। মেয়েটির প্রকৃত অভিভাবকের খুঁজে পেলে তাদের হাতে মেয়েটিকে ফিরিয়ে দেবো। আর তার পরিবার খুঁজে না পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।’
কলারোয়া থানার ওসি রফিকুল ইসলামের সাথে কয়েক বার ফোন কলের মাধ্যমে বিষয়টি জানার চেষ্টা করলে তাকে ফোনে পাওয়া যায় নাই।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)