মনিরামপুরে স্ত্রীকে একান্তে পেতে চাওয়া কাল হয়েছিল আকবরের
যশোরের মণিরামপুরে ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী আকবর সানার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা অপমৃত্যু মামলা ৬ মাস পর অবশেষে হত্যা মামলায় রুপ দিয়েছে। এ ঘটনায় আকবরের স্ত্রী রহিমা বেগমকে (৩২) গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
শনিবার (০৩ সেপ্টেম্বর-২০২২) দুপুরে আদালত রহিমাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরআগে শুক্রবার (০২ সেপ্টেম্বর) আকবরের ভাই আদম শফিউল্লাহ বাদি হয়ে মণিরামপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাতেই পিবিআই কেশবপুরের সাতবাড়িয়া থেকে রহিমাকে গ্রেফতার করে। শনিবার দুপুরে পিবিআই রহিমাকে যশোর আদালতের জ্যেষ্ঠ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শম্পা বসুর আদালতে হাজির করলে স্বামীকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন রহিমা বেগম।
পিবিআই সূত্রে জানা গেছে- মণিরামপুরের পারখাজুরা গ্রামের মৃত আরশাদ আলীর ছেলে আকবর সানা ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী। তিনি অধিকাংশ সময় বাড়ির বাইরে থাকতেন। নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্য থাকায় সুখ ছিলো না আকবর ও রহিমার সংসারে। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাগেরহাট জেলা থেকে ব্যবসা শেষে বাড়ি ফেরেন আকবার। এর এক সপ্তাহ পর ২১ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে আকবর সানা স্ত্রীকে একান্তে পেতে চাইলে রহিমা রাজি হননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে মারপিট করেন আকবর। তখন স্বামীর সাথে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আকবর সানার মুখে আঘাত করেন রহিমা। ধস্তাধস্তির সময় আকবর সানা শয়নরত খাটের সাথে মাথায় আঘাত পান। একপর্যায়ে রহিমা বেগম নিজের ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধে স্বামীকে হত্যা করেন।
পুলিশ বলছে- তখন ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে স্বামীর লাশের পাশে বসে কান্না শুরু করেন রহিমা বেগম। কান্নার শব্দ শুনে বাড়ির আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পান। পরে লোকজন ধাক্কা দিয়ে ঘরের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় আকবর সানাকে পড়ে থাকতে দেখেন। তখন রহিমা বেগম স্বামী আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার দেন। এ ঘটনায় তখন মণিরামপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা হলে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠায়। পরে ময়না তদন্ত রিপোর্টে পুলিশ জানতে পারে অত্মহত্যা নয়, আকবর সানাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেয়ে ভাই হত্যার বিচার চেয়ে শুক্রবার মণিরামপুর থানায় মামলা করেন নিহতের ভাই আদম শফিউল্লাহ।
পিবিআই যশোরের পরিদর্শক হিরোন্ময় সরকার বলেন- গ্রেফতারের পর স্বামীকে হত্যার ঘটনায় শনিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রহিমা বেগম। এরপর আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।
মণিরামপুর থানার ইনচার্জ (ওসি) নূর-ই-আলম সিদ্দীকি হত্যা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন- পিবিআই মামলা তদন্ত করছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)