সাতক্ষীরায় মোসলেমা জামে মসজিদে একটানা ৬০ দিন নামাজ পড়ে পুরস্কার পেল ৩১ জন কিশোর
সাতক্ষীরা পৌরসভার ০৪নং ওয়ার্ডের সুলতানপুরে মোসলেমা জামে মসজিদে একটানা ৬০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের (তাকবিরে উলাসহ, নামাজের প্রথম তাকবির) সঙ্গে আদায় করে বাইসাইকেল পুরস্কার পেয়েছেন ৮ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৩১ জন কিশোর।
তবে ফজর ও এশার নামাজ ছিল তাদের জন্য
বার্ধ্যতামূলক।
শুক্রবার (০৭ জুলাই) সুলতানপুরে মোসলেমা জামে মসজিদ কমিটির আয়োজনে বাদ জুমআ মসজিদ প্রাঙ্গণে মসজিদ কমিটির সভাপতি কাজী ফারুক হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার প্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার স্বরুপ বাইসাইকেল তুলে দেন সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, মোসলেমা জামে মসজিদ কমিটি যে উদ্যোগ নিয়েছে তা খুবই
প্রসংশনীয়। আমি তাদের এ মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায়। আজকের এই নতুন প্রজন্মকে মসজিদমুখী করতে পেরে তারা ইহকাল ও পরকালের কল্যাণের পথ সুগম করেছে।”
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুলতানপুর মোসলেমা জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাতক্ষীরা পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাজী ফিরোজ
হাসান। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক তার বক্তব্যে বলেন, “পুরস্কারপ্রাপ্ত কিশোরদের বয়স ৮ থেকে ১৮ বছর। কিশোরদেরকে নামাজের প্রতি আকৃষ্ট করে
মসজিদমুখি করার লক্ষ্যে এমন উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আমি মসজিদ কমিটি ও মুসুল্লীদের সাথে একদিন বিষয়টি উত্থাপন করি।
আলহামদুলিল্লাহ কমিটির ও উপস্থিত মুসল্লিরা একাত্মতা প্রকাশ করেন। পরে ৮ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোরদের মধ্যে একটানা ৬০ দিন ফজর ও এশার নামাজ বাধ্যতামূলকসহ ৫ ওয়াক্ত নামাজ আমাদের মসজিদের তাকবিরে উলার সঙ্গে আদায় করার প্রতিযোগিতা
ঘোষণা করি। বিজয়ী প্রত্যেককে একটি করে সাইকেল পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেই।
ঘোষণার পর থেকে ৫৬ জন কিশোর মসজিদে নিয়মিত জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় শুরু করে। ঘোষণার পর থেকে ১লা মে ২০২৩ থেকে ১লা জুলাই ৮ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৫৬ জন কিশোর মসজিদে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা শুরু
করে। তারা ঠিকমতো নামাজ আদায় করছে কিনা তা হিসাব রাখার জন্য প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পর হাজিরা ও কার্ড জমা নেওয়া হতো। যদি কেউ কোনো ওয়াক্তে
অনুপস্থিত থাকতো তখন তার গণনা বন্ধ করে দেওয়া হতো। এভাবে নিয়মিত যাচাই-বাছাই ও হাজিরার ভিত্তিতে সর্বশেষ ৩১ জন বিজয়ী হয়।
আরো ৭ জন কিশোর ওয়েটিংয়ে আছে। তারা ১২ দিন পরে পুরস্কার হিসেবে বাইসাইকেল পাবে। প্রতিযোগিতা চলাকালীন সময়ে তাদের শুধু নামাজই পড়ানো হয়নি। বরং সঠিকভাবে নামাজ শিক্ষা ও নামাজ সম্পর্কে জরুরি মাসয়ালাও শিক্ষা দিয়েছেন মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান মাহমুদী সেই সঙ্গে নামাজের প্রতি মানুষকে আহবানের পাশাপাশি দ্বীনি ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।”
মোসলেমা জামে মসজিদের পেশ ইমাম হুজুরের এ কার্যক্রম পরিচালনা এলাকার বাচ্চাদের নামাজের প্রতি আগ্রহী করে তুলেছে। আমরা বিষয়টি প্রায় কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছি যে, ছেলেরা নামাজে নিয়মিত আসছে। তাদের পদচারণায় মসজিদ সব সময় মুখরিত থাকতো। পুরস্কারপ্রাপ্তরা তাদের অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, আমরা এ পুরস্কার পেয়ে অত্যন্ত খুশি।”
এসময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.হ.ম তারেক উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আকতার হোসেন,
দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ আব্দুর রশিদ, ইকরা একাডেমির পরিচালক হাফেজ মাওলানা জালাল
উদ্দিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাজী সেলিম রেজা, মীর মাহমুদ হাসান আবির, শেখ তৌহিদুজ্জামান চপল, সাতক্ষীরা নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক
সহকারি প্রধান শিক্ষক মনজুরুল হকসহ এলাকার মুসুল্লী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)