কেশবপুরে
সার্জারি ও মেডিকেল সার্টিফিকেট নেই অথচ করতেন অপারেশন!
সোহেল পারভেজ, কেশবেপুর: যশোরের কেশবপুরে আলোচিত সেই উপসহকারী কমিনিটি মেডিকেল অফিসার সাগরদাঁড়ী ইউনিয়ন স্বাাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ফিরোজ কবিরকে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে দুই মাসের জেল দিয়েছেন।
তিনি সার্জারি ও মেডিকেল সার্টিফিকেট না থাকালেও কেশবপুর কপোতাক্ষ ক্লিনিকে হার্নিয়া অপারেশন করার সময় আটক হন।
গত শনিবার রাত অনুমান ৯ টার দিকে কেশবপুর কপোতাক্ষ ক্লিনিকে বায়সা গ্রামের লুতফর রহমান ৬৫ বছর বয়সী রোগীর হার্নিয়া অপারেশন করছিলেন সেকমো ফিরোজ কবির। অপারেশন থিয়েটারে অপারেশন চলাকালীন কেশবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি), হাসপাতালের চার ডাক্তার ও থানার পুলিশ বাহিনী উপস্থিত হয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন।
এ সময়, ডাক্তারী সনদপত্র দেখাতে পারেননি ওই ভূয়া কথিত সার্জারি ডাক্তার ফিরোজ কবির। সার্জারি ও মেডিকেল সার্টিফিকেট না থাকালেও রোগী অপারেশন নিয়ম বহির্ভূত দায়ে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৭০ ও ১৭১ ধারা মোতাবেক তাকে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। রোববার সকালে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
ভূয়া ডাক্তার ফিরোজ কবির কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে চাকরি করেন। আলোচিত এই উপসহকারী মেডিকেল অফিসার সার্টিফিকেট ছাড়াই প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে, সবাইকে ম্যানেজ করে কেশবপুরের বিভিন্ন ক্লিনিকে বড় বড় অপারেশন করে আসছেন।
অপারেশনের সহযোগিতায় ক্লিনিকের ম্যানেজার আব্দুল আহাদ জানান, অপারেশন বা ডাক্তারির বিষয়ে তার কোন অভিজ্ঞতা নেই। অপর সহযোগি রিতা নামের এক নার্স জানান, তার নার্সের কোন প্রশিক্ষণ বা সনদপত্র নেই, অথচ তিনি ৬-৭ বছর ধরে কপোতাক্ষ সার্জিক্যাল ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনোসিস সেন্টারে নার্স হিসেবে চাকরি করে আসছেন।
এছাড়া, অপারেশন থিয়েটারটি নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ছিল। ভ্রাম্যমান আদালত অপারেশন থিয়েটারে অপারেশন নিয়ম বহির্ভূত কর্মকাণ্ড দেখতে পান, অপারেশনের সময় ফিরোজ কবির ভুয়া ডাক্তার হিসেবে কাজ করছিলেন এবং তার পরনে কোন গাউন বা মাক্স ছিল না, তিনি সেন্ডো গেঞ্জি পরে অপারেশন করছিলেন।
যদিও ভ্রাম্যমান আদালত ফিরোজ কবিরকে ২ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন, তবে অন্য অপরাধীদের ছাড় দেয়া ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় উপস্থিত জনতা বিরূপ মন্তব্য করেছেন।
কেশবেপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শরিফ নেওয়াজ বলেন, ফিরোজ কবির উপসহকারী কমিনিটি মেডিকেল অফিসার সাগরদাঁড়ী ইউনিয়ন স্বাাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র কর্মরত থাকা অবস্থায় একটি বে-সরকারি ক্লিনিকে অপারেশন করাকালীন সার্জারি ও মেডিকেল সার্টিফিকেট না থাকায় ও অপারেশন নিয়ম বহির্ভূত দায়ে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৭০ ও ১৭১ ধারা মোতাবেক তাকে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)