৩ অভিযোগে যবিপ্রবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ইউজিসির তদন্ত
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও পূর্ত দপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুর রউফকে বিজ্ঞপ্তি ব্যতিত এবং বয়সসীমা উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার (গ্রেড -১) পদে নিয়োগ প্রদান, নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত ও নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে নিজের আপন ভাগ্নে মোঃ হুমায়ুনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব দপ্তরে চাকরি প্রদান বিষয়ে সরজমিতে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
গত ২২ সেপ্টেম্বর তদন্তের জন্য দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তাদেরকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন প্রেরিত চিঠিতে এই বিষয়টি জানানো হলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এ সিদ্ধান্ত নেয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামানকে আহ্বায়ক ও ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক মৌলি আজাদকে সদস্য সচিব করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, কোন ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ২০০৯ সালে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) পদে চাকরি পান আব্দুর রউফ। এরপর তিনি দুইবার পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের উপ-পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন । ২০০৯ সালের ২৩ এপ্রিল যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ২৮টি পদে ৬১ জনকে নিয়োগ দেয়ার জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করেন আব্দুর রউফ। কিন্তু এই পদে কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়। সেই অভিজ্ঞতা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত যাচাই বাছাই কমিটি আব্দুর রউফের আবেদনপত্রটি বাতিল করে দেন। এছাড়াও তার দাখিলকৃত আবেদনপত্রে বয়স দেখানো হয় ৩১ বছর ৭ মাস ২১ দিন।
তবে তার আবেদনপত্র বাতিল হলেও সেই আবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তীতে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) পদে চাকরি পান আব্দুর রউফ। এ পদের বিপরীতে কোন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছিল না বলে প্রতিবেদকের নিকট তথ্য প্রমাণ রয়েছে।
এই বিষয়ে প্রতিবেদক আব্দুর রউফের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে কল কেটে দেন এবং পরবর্তীতে একাধিক বার চেষ্টা করা হলেও তাকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
এই বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিয়োগে বা নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্রে যদি কোন সমস্যা থাকে সেটা দেখার দায়িত্ব ওই নিয়োগ বোর্ডে থাকা কমিটির । তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে। আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে দুদকের যে অভিযোগের ভিত্তিতে ইউজিসি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, সেখানে রউফের বিজ্ঞপ্তি ব্যতিত নিয়োগ প্রক্রিয়া ও বয়সসীমা উপেক্ষা করে চাকরি প্রদানের বিষয়টি ওই নিয়োগ বোর্ডে থাকা কমিটির সিধান্তে হয়েছে। এখন তদন্ত কমিটির রিপোর্টে যদি সে অভিযুক্ত হয় তাহলে ইউজিসির নির্দেশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তির পর সে যদি কোনো অনিয়ম করে থাকে এবং অনিয়মের যদি প্রমান পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় তার বিরুদ্ধে আইনগত বাবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)