মঙ্গলবার, জুন ১০, ২০২৫

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

ইন্টারনেট দুর্বলতায় বিপর্যয়ে জেলা পর্যায়ের অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা

করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে গত বছর থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। বিকল্প হিসেবে অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম চালু রাখতে বলা হয়। কিন্তু ডিজিটাল ডিভাইস সংকট এবং ইন্টারনেট সংযোগের দুর্বলতায় শুরু থেকেই অনলাইনে ক্লাস চালাতে হিমশিম খান শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহামারির দেড় বছর কেটে গেলেও এই সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি; বরং সময়ের সাথে তা বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থী কেউ সশরীরে কিংবা বিকল্প কোনো পদ্ধতিতেই ক্লাসে অংশ নিতে না পারায় শ্রেণিকক্ষ থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে। ঢাকার অতি নিকটেই সাভারের অ্যাঞ্জেলিকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ফাতেমা-তুজ-জোহরা। করোনায় স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অনলাইন ক্লাসে যোগদানে প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফাতেমার বাবা-মা তাকে একটি স্মার্ট ফোন কিনে দিতে বাধ্য হন।

ফাতেমার বক্তব্য, শুরুতে ভালোমতো ক্লাস হতো। দিনে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলত ক্লাস। ধীরে ধীরে যত দিন যেতে থাকে, ক্লাসের সংখ্যা কমতে শুরু করে। শিক্ষকরাও ক্লাসে মনোযোগী ছিলেন না। কয়েকটি অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে ২০-২৫ মিনিটের মধ্যে ক্লাস শেষ হয়ে যেত। ক্লাস নিয়ে ফাতেমার বাবা-মাও হতাশ। মেয়ের জন্য তাদের নতুন ফোন কিনে দেওয়া ছাড়াও প্রতি মাসের ইন্টারনেট খরচ বহন করতে হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর হল, ফাতেমার অনলাইন ক্লাস একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্কুলটি শিক্ষকদের আর বেতন দিতে পারছে না। এই অবস্থা কেবল ফাতেমার স্কুলের নয়।

দেশের বেশিরভাগ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় বর্তমানে একই চিত্র দেখতে পাওয়া যাবে। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো গত বছর থেকে বন্ধ থাকলেও সেখানে অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম চালু আছে। কিন্তু তাতে খুব একটা সাড়া মিলছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, গুগল মিটের মাধ্যমে সকল বিদ্যালয়েই পাঠদান কার্যক্রম চলছে। তবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুবই কম। সবার কাছে স্মার্টফোন নেই। তবে এখন শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতি সপ্তাহে তাদেরকে ওয়ার্কশিট দেওয়া হচ্ছে।

ক্লাস করার জন্য একেকটি শ্রেণিতে ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থীর প্রয়োজন হয়। ৪ থেকে ৬ জন শিক্ষার্থী দিয়ে তো ক্লাস করানো সম্ভব না। সেজন্য এখন চার-পাঁচটি বিদ্যালয় মিলিয়ে একসঙ্গে যে কয়জন শিক্ষার্থী পাওয়া যায়, তাদেরকে নিয়ে ক্লাস করানোর নির্দেশনা আছে, বলেন তিনি।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফী উদ্দিন বলেন, জেলা সদর ও উপজেলা সদরের বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ। মাঠপর্যায়ের বিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি সবচেয়ে কম। তবে প্রতিদিনই ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।

নোয়াখালী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদুল ইসলামের দাবি, শহরে শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে সক্রিয় থাকলেও ইন্টারনেটসহ নানাবিধ সমস্যার কারণে গ্রামের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত অংশ নিতে পারছে না।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, জেলায় নব্য সরকারিসহ মোট ১ হাজার ২৫৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ বিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস চলে। তবে জেলার চর অঞ্চলে স্মার্ট ফোন ও উচ্চ গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট না থাকায় প্রায় ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারে না।

নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানান, সপ্তাহে তারা একদিন করে স্কুলে যান। তবে শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই মাসে একদিনও কর্মস্থলে যান না। এমনকি, তারা অনলাইন ক্লাসেও থাকেন না।

তবে জেলা শিক্ষা অফিসার সাইদুল ইসলাম জানান, অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হ্যান্ডনোট পৌঁছে দেওয়ার কাজও করছেন।

পাবনার নয়টি উপজেলার ৩৫২টি সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে গতবছর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি থাকলেও ধীরে ধীরে অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে থাকে। বর্তমানে তা প্রায় শূন্যের কোঠায় এসে পৌঁছেছে।

পাবনার এসএসসি পরিক্ষার্থী আতিকুর রহমান রাজা বলেন, করোনাকালে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর থেকে আমরা অনলাইন ক্লাস ও অ্যাসাইনমেন্ট শুরু করি। কিন্তু, একেক সময় একেক রকম সমস্যায় পড়তে হয়। অনেক সময় এমন হয়েছে যে ক্লাস শুরু হওয়ার পরেও মোবাইল না থাকায় যুক্ত হতে পারিনি। আবার মোবাইল ফোন থাকলেও দেখা যায় যে, ইন্টারনেট সংযোগে সমস্যা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিলেটের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক জানান, অনলাইন ক্লাসের নির্দেশনার পর আমাদের প্রতিটি স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে মিটিং হয়। মিটিংয়ে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার জন্য সময়সূচীও তৈরি করা হয়। একেকদিন একেক জন শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

‘কিন্তু বাস্তবতা হলো, বেশিরভাগ শিক্ষকের বাসায় ক্লাস নেওয়ার মতো লজিস্টিক সার্পোট নেই। ইন্টারনেটও দুর্বল, অনেকসময় বিদ্যু্ৎও থাকে না। আবার, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও থাকে হাতেগোনা দুই থেকে চার জন,’ বলেন তিনি।

সিলেট মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর কবির আহমদ বলেন, সরকার থেকে যেহেতু এ ব্যাপারে কোনো সহযোগিতা করা হয় না, তাই আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি না। আমরা কেবল তাদের ক্লাস নিতে উৎসাহিত করতে পারি।

অনলাইন শিক্ষা নিয়ে অসন্তুষ্ট অধিকাংশ অভিভাবক। তারা মনে করেন, বিকল্প শিক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থী কেউ মনোযোগী নন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন অভিভাবক আরশাদুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম চালু করলেও সে ক্লাস নিয়ে তেমন আগ্রহ বোধ করে না। অনলাইনে যে প্রক্রিয়ায় পাঠদান চলছে, তাতে করে শিক্ষার্থীদের মেধার সঠিক বিকাশ হচ্ছে না বলেও জানান আরশাদুল ইসলাম।

অনেক অভিভাবক নিজেরাই হতাশায় ভোগার কথা জানান। মহামারি সবার জন্যই কঠিন পরিস্থিতি ডেকে এনেছে। শিশুদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে অনলাইন ক্লাসে নির্ভরতা কত দিন সম্ভব তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন তারা। এ ছাড়া, দুর্বল গতির ইন্টারনেট এবং প্রায়ই বিদ্যুৎ সংযোগ চলে যাওয়ার বিষয়টিও তারা উল্লেখ করেন।

আয়েশা আখতার নামের অপর এক অভিভাবক বলেন, আমার সন্তান এ বছরের এসএসসি পরিক্ষার্থী। শিক্ষাবর্ষ শেষ হয়ে যাওয়ায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকেই স্কুল বেতন ও শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া বন্ধ করে দেয়। আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি চিন্তিত।

কুমিল্লার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা জেলায় ১১৫টি কলেজ, ৪৬টি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ৬০৮টি মাধ্যমিক স্কুল ও ৩৮৪টি মাদ্রাসা রয়েছে। গত মে মাসে জেলায় উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে তিন হাজার ৬৬০টি, মাধ্যমিক পর্যায়ে ৩১ হাজার ১৮৫টি অনলাইন ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়।

মাউশি কুমিল্লা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর সোমেশ কর চৌধুরী জানান, শিক্ষক ও অভিভাবকদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিমাসের তথ্য হালনাগাদ করে থাকে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে জেলা শিক্ষা দপ্তরে যে তথ্য সরবরাহ করা হয়, তার সবটুকু সঠিক নয়।

একই রকম সংবাদ সমূহ

লন্ডনে ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকের সম্ভাবনা ১৩ জুন

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ, ৯ জুন ২০২৫,বিস্তারিত পড়ুন

কোরবানি দিতে গিয়ে ৩ দিনে পঙ্গু হাসপাতালে ৯৪২

পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানি দিতে গিয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯৪২বিস্তারিত পড়ুন

তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের ৫ অঞ্চল, গরম আরও বাড়বে

দেশের কয়েক জেলার উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টাবিস্তারিত পড়ুন

  • জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারতে না যাওয়ার পরামর্শ
  • যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে দেশ ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা
  • করোনার নতুন সংক্রমণ, বন্দরে সতর্কতা জারি
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ায় ৩ মাসে বিস্ময়কর সাফল্য
  • ড. ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনে দেখা করতে চান টিউলিপ
  • সৌদির ওয়ার্ক ও ওমরাহ ভিসা সাময়িকভাবে স্থগিত
  • ঈদের ফিরতি যাত্রায় সবাইকে মাস্ক পরার অনুরোধ
  • জাতির উদ্দেশে ভাষণে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ২০২২ সাল থেকে র‌্যাবের গোপন সেলে ছিলেন সুব্রত বাইন: গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন
  • সংবাদমাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানোয় উদ্বিগ্ন প্রেস সচিব
  • দেশে ফিরতে হবে কাদের ও কারা পাবেন স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা, জানালো ঢাকার মার্কিন দূতাবাস
  • নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা