কলারোয়ার গয়ড়া বাজারে দোকানঘর ভেঙ্গে ফেলার টেনশনে ব্যবসায়ীর স্ট্রোকে মৃত্যু!


কলারোয়ার চন্দনপুর ইউনিয়নের গয়ড়া বাজারে দোকান ঘর ভেঙ্গে ফেলানোর ঘটনায় সিরাজুল ইসলাম (৬৫) নামে এক ব্যবসায়ী স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে।
সিরাজুল চন্দনপুর গ্রামের মৃত খোশলাল সরদারের পুত্র।
বুধবার সকালে মৃতের ভাই মিজানুর রহমান জানান- উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের গয়ড়া বাজারে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া প্রায় শত বছরের জমিতে ছোট ছোট দোকান ঘর করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। সম্প্রতি আম্পানে তাদের দোকানঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দোকানে পানি পড়ে মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো। দোকানঘরের জমির কিছু অংশ খাস জমিতে হওয়ায় এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে আলাপ আলোচনা করে সেই দোকান ঘর ঠিক করা হয়। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তির দেয়া অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিকালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহকারী কমিশনার (ভুমি) আকতার হোসেন, সার্ভেয়ার সজল হোসেন ও ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা মহাসিন হোসেন উপস্থিত হয়ে বিনা নোটিশে তাদের দু’ভাইয়ের দোকান ঘর ভেঙ্গে দেয়।
এঘটনায় দুশ্চিন্তায় তার বড় ভাই হার্টস্ট্রোক করেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তথা বুধবার নিজ বাড়ীতে মারা যান।
তিনি আরো বলেন- তাদের রেকর্ডীয় জমির সামনের অংশে সরকারি জমি আছে যা তার বাপ-দাদারা প্রায় শত বছর ধরে ভোগ দখল করে আসছেন। তাদের বাড়ীতে যাতায়াতের একমাত্র পথও ওই জমির সামনে দিয়ে।
মৃতের ছেলে রুহুল কুদ্দুস ও আলামিন জানান-চন্দনপুর ও গয়ড়া মৌজার অধীন গয়ড়া বাজারেই প্রায় ১ একর ৫৮ শতক খাস জমি রয়েছে। যা সরকারের ১খতিয়ানের জমি। সেসব জমিতে অন্যরাও বহু বছর ধরে দোকানপাট করে ভোগ দখল করে আসছেন। কিন্তু তাদের কোন সমস্য হচ্ছে না। হঠাৎ করে কোন কারণ ছাড়াই আমাদের জমি থেকে দোকান ঘর উচ্ছেদ করা হলো। কিন্তু খাস জমিতে থাকা অন্যদের দোকানঘর উচ্ছেদ করা হয় নি বা তেমন উদ্যোগ নেওয়া হয় নি। আমাদের দোকান ঘর বানানোর আগেও কেউ কোন অভিযোগ করেন নি। দোকান ঘর বানানোর পরে কেন এই দোকান ভাঙ্গা হলো সেটার কোন কারণ তারা বলতে পারছেন না।
মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করছেন যে, ১শ বছর ধরে ওই জমিতে তারা বসবাস করে আসছেন। তাই সরকারের পক্ষ থেকে তাদের নামে বন্দোবস্ত বা ডিসিআর দেয়া হোক।
এবিষয়ে চন্দনপুর ইউনিয়নের ভুমি কর্মকর্তা মহাসিন হোসেন জানান, সরকারি জমি তাদের দখলে থাকায় উচ্ছেদ করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই বাজারের অন্যান্য সরকারি জমি দখলমুক্ত করা হবে। গয়ড়া বাজার কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
চন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম মনি জানান, দীর্ঘ বছর ধরে ওই জমিতে তারা দোকান ঘর নির্মান করে ব্যবসা করে আসছেন। কি কারণে দোকান ঘর উচ্ছেদ করা হলো তা তিনি বলতে পারেন না। তবে ওই বাজারে প্রায় ২শ’মত দোকান ঘর রয়েছে। যা সরকারি খাস জমিতে রয়েছে। তাদের কোন সমস্যা হচ্ছে না।
তিনি খাস জমিতে বসবাসকারী দোকান মালিকদের স্ব স্ব জমিতে ডিসিআর দেয়ার জন্য প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
এদিকে, বুধবার আসরবাদ নামাজে জানাজা শেষে মরহুমাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
