নড়াইলের জমি লিখে নিয়ে বৃদ্ধা মাকে বিতাড়িত, উদ্ধার করলো ডিসি-এসপি


নড়াইলে জমি লিখে নিয়ে ৮৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ মাকে দেড় বছর আগে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে।
দীর্ঘ দেড় বছর ওই অসহায় অশিতীপর বৃদ্ধা নড়াইল জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে এবাড়ি ওবাড়ি ঘুরে পার করেছেন। জীবনযাপন করেছেন নির্মম জীবন।
বর্তমানে হারিয়ে ফেলেছেন চলার শক্তিটুকুও। তাই সর্বশেষ কোন উপায় না পেয়ে গত ১২ দিন আগে বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস.এম সুলতান কমপ্লেক্স সংলগ্ন সুলতান ঘাটের উপর রাখা শিল্পী সুলতানের নৌকার নিচে মানবেতর জীবন-যাপন শুরু করেন। সেখানে স্থানীয়দের দেয়া খাবারে চলছিলো তার জীবন।
অবশেষে শুক্রবার ঘটনাটি জানতে পারেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। তারা ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেছেন।
জানা গেছে, নড়াইল শহরের কুড়িগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মৃত কালিপদ কুন্ডুর স্ত্রী মায়া রাণী কুন্ডু (৮৫)। তার দুই ছেলে হলেন, দেব কুন্ডু (৫০) এবং উত্তম কুন্ডু (৪০)। কয়েক বছর আগে উত্তম বিয়ে করে অন্য জায়গায় বসবাস করায় আরেক ভাই ব্যবসায়ী মাকে দেখভাল করছিলেন। তিনি শহরের রূপগঞ্জ বাজারের বাঁধাঘাট এলাকার বাসিন্দা।
এর মধ্যে গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে দেব তার মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করে। পাশাপাশি তার খেতে-পরতে এবং থাকতে দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
এ সময় স্থানীয় অমিত সাহা নামে এক ব্যক্তি মায়া রাণী কুন্ডু নামের ওই বৃদ্ধা মাকে কয়েক মাস তার নিজ বাড়িতে রাখেন।
মায়া রাণী কুন্ডু কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় ছেলে ও ছেলের বউ তাকে খেতে পরতে ও থাকতে দেয় না। তার ৫ শতকের একটি জায়গা ছিল। সেই জায়গা কয়েক লাখ টাকায় বিক্রি করেছে বড় ছেলে দেব কুন্ডু। এরপর থেকে তারা খুব দুর্ব্যবহার করে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। কিছুদিন এখানে, ওখানে ছিলাম। এখন আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। স্থানীয়রা যা খেতে দেয় তাই খাই।
এ ব্যাপারে মায়া রাণীর ছেলে দেব কুন্ডু বলেন, বউয়ের সঙ্গে বনিবনা হয় না, তাই চলে গেছে।
এ বিষয়ে নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, বিষয়টি জানার পর ওই অসহায় বৃদ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
