পরিবেশ দিবসে শুধু পোস্ট নয়, আসুন একটি গাছ লাগাই
পরিবেশে মানব সভ্যতার খুবই ঘনিষ্ঠ একটি শব্দ এবং সহোদরও বটে। একজন অসুস্থ হলে অন্যের উপরও প্রভাব পড়ে। মজার ব্যাপার হলো পরিবেশ নিজে নিজে অসুস্থ হয় না। তাকে অসুস্থ করা হয় এবং সেজন্য দায়ী একমাত্র মানবকূল।
এ পরিবেশ যে অসুস্থ হয় এবং এত গুরুত্ববহন করে তা আমরা বুঝতে শিখেছি মাত্র এক শতক আগে। গোটা বিশ্বে ৫ জুন পরিবেশ দিবস পালিত হয়। দিবসটি পালনের পেছনের উদ্দেশ্য হলো- পরিবেশ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
সর্বপ্রথম ১৯৭৪ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জ দ্বারা পালিত হয়েছিল এই দিবসটি। প্রকৃতিকে কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য রোজই হতে পারে পরিবেশ দিবস। কিন্তু প্রকৃতি না বাঁচলে মানবজাতিই যে বিপণ্ন হবে তার গুরুত্ব এবং এ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোই মূলত ৫ জুনের বিশেষত্ব।
১৯৭৪ সালে প্রথম উদযাপিত হওয়ার পর থেকে এটি এখন বিশ্বের প্রায় শতাধিক দেশে বহুল স্বীকৃত একটি দিবসে পরিণত হয়েছে। পৃথিবী ও প্রকৃতি রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে প্রতি বছর ৫ জুন ভিন্ন ভিন্ন প্রতিপাদ্য নিয়ে এ দিবসটি পালিত হয়।
শিল্পায়ন এবং নগরায়নের জেরে বিশ্বজুড়েই পরিবেশের দফারফা চলছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘুম ছুটিয়েছে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের। যেভাবে পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে, ভূগর্ভে সঞ্চিত জল ও জ্বালানি তলানিতে এসে ঠেকেছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে মানব সভ্যতার সামনে যে বিশাল সংকট এসে উপস্থিত হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার ওপরেই বর্তায়। একটু চেষ্টা করলেই পরিবেশ রক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারি আমরাও। গত বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের ভাবনা বা থিম ছিল ‘জীববৈচিত্র’। আয়োজক দেশ ছিল কলম্বিয়া। দেশটির পক্ষ জানানো হয়েছে, প্রায় দশ লাখ জীববৈচিত্র বিলুপ্তির পথে।
সারা বিশ্বের জীববৈচিত্রের ১০ শতাংশই রয়েছে কলম্বিয়ায়। অ্যামাজন রেইন ফরেস্টের একটা বড় অংশ রয়েছে কলম্বিয়ায়। পৃথিবীর নানা ধরনের পাখি ও অর্কিডের বৈচিত্রের নিরিখে প্রথম এই দেশ। গাছপালা, প্রজাপতি, স্বচ্ছ জলের মাছ এবং উভচর বৈচিত্রের নিরিখে কলম্বিয়ার স্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় জীববৈচিত্রের গুরুত্ব অপরিসীম।
পৃথিবীতে খাদ্য, জল ও খনিজ দ্রব্যাদির জোগান ঠিক রাখে জীববৈচিত্র। পাশাপাশি জলবায়ুর পরিবর্তন, দূষণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা এবং পৌষ্টিক উপাদানগুলো সঠিকভাবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলায় গোটা বাস্তুতন্ত্রের জীববৈচিত্র রক্ষা করা ভীষণ জরুরি। আশঙ্কার বিষয় হলো, বিশ্বের মোট জীববৈচিত্রের প্রায় ৯৮ শতাংশ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
তাই পরিবেশ দিবসে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুধু একটা পোস্ট দিয়ে দায়িত্ববোধ ফলালে হবে না বরং সচেতনতা গড়ে তুলতে কিংবা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে আমরা অন্তত একটা গাছ লাগিয়ে রাখতে পারি। এভাবে করতে থাকলে পৃথিবী হয়তো একদিন তার আদিরূপ ফিরে পাবে হয়ে, উঠবে আরো সজীব ও সতেজ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)