সাতক্ষীরায় শহীদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে জামায়াতের আর্থিক সহায়তা
সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে উপহার প্রদান করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা জেলা শাখা। ৯ ডিসেম্বর সোমবার বিকাল সাড়ে ৪ টায় সাতক্ষীরা আল—আমিন ট্রাস্টের কাজী শামসুর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও সাতক্ষীরা জামায়াতের সাবেক আমীর মুহাদ্দিস রবিউল বাশার।
সাতক্ষীরা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুলের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী মাওলানা আজিজুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা বদরুদ্দিন, সাতক্ষীরা জামায়াতের নায়েবে আমীর শেখ নুরুল হুদা, ডা.মাহমুদুল হক, সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক ওমর ফারুক, অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ, শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আল মামুন, জেলা সভাপতি ইমামুল ইসলাম সহ কর্মপররিষদ সদস্যবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে শহীদ আসিবের পরিবারসহ ৪৮ জন শহীদ পরিবারের মাঝে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমানের পাঠানো আর্থিক সহযোগীতার চেক তুলে দেন সাতক্ষীরা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাদ্দিস রবিউল বাশার বলেন, ‘দীর্ঘ ১৮ বছর পর আমরা অধিকার ফিরে পেয়েছি। হাসিনা সরকার যদি এখনো ক্ষমতায় থাকতো তাহলে গ্রামগঞ্জে, রাস্তাঘাটে ও পাড়া মহল্লায় লাশ আর লাশ দেখতে পেতাম। এই জালিম স্বৈরাচারী হাসিনা চুড়ান্ত পরিনতি বুঝতে পেরে পালিয়ে গেছে। আমরা ছাত্রজনতার আন্দোলনের মাধ্যমে এই সুন্দর পরিবেশ ফিরে পেয়েছি। তিনি বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর সারা দেশে লগি বৈঠা দিয়ে আওয়ামী লীগ যে তান্ডব চালিয়েছিলো তা পৃথিবীর ইতিহাসে কোন হায়ওয়ান জানোয়ারও এই আরচন করতে পারে না। তারা সেদিন লগি বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করে লাশের উপর নৃত্য করেছিলো। এছাড়া তারা বিডিআর এর ৬৪ জন চৌকস সেনা অফিসারকে পরিকল্পিতভাবে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছিলো। শাপলা চত্তরে হেফাজতের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে নির্মমভাবে হামলা ও গুলি চালিয়ে ছিলো। কত লোক সেখানে মারা গিয়েছে তা আজ পর্যন্ত উদঘাটন করতে পারেনি। দিগন্ত টিভির কাছে সেই তথ্য ছিলো বলে তারা সেদিন দিগন্ত টিভিও বন্ধ করে দিয়েছিলো।
সভায় কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও সাতক্ষীরা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল বলেন, ‘জুলাইয়ের ৩৬ দিন বাংলাদেশের ইতিহাসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রজনতার উপর তা হায়েনার মতো স্বৈরাচারী সরকার ও তার পেটুয়া বাহিনী মানুষ হত্যা করার জন্য যে অভিযান চালিয়েছে তা বিশ্ববাসী দেখেছে। ১৬ শতাধিক মানুষ সারা দেশে তারা হত্যা করেছে। তাদের পৈশাচিকতায় ৩২ হাজারের উপরে মানুষ আহত হয়েছে। কেউ চোখ হারিয়েছে, অনেকে হাত ও পা হারিয়েছে। তারা যে গণহত্যা চালিয়েছে এবং বাংলাদেশে যে পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা আগামী ৫০ বছরেও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে না। ২৮ অক্টোবর থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যারা জীবন দিয়েছে তারা জাতির শেষ্ঠ সন্তান। এরাই আমাদের প্রেরণার উৎস। আল্লাহ যেন তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করে নেন এবং শহীদদের পরিবারের সদস্যদেরকে সবর করার তৌফিক দেন এবং কুরআন সুন্নাহ্ ভিত্তিক একটি কল্যাণ রাষ্ট্র কায়েম করতে পারি সেই চেষ্টা আমাদেরকে চালিয়ে যেতে হবে।’
অনুষ্ঠানে সাতক্ষীরা জামায়াতের নায়েবে আমীর শেখ নুরুল হুদা বলেন ‘২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কত লোক তারা হত্যা করেছে গুম করেছে তার কোন হিসাব নেই। তারা ১৭ বছর ধরে নির্মম জুলুম নির্যাতন চালিছে জনগণের উপর। তারা বিগত ১৭ বছর ধরে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্র শিবির, বিএনপি, ছাত্রদল সহ বিবিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকদেরকে গুম ও হত্যা করেছে। তাদের সেই অপরাধের বিচার একদিন এদেশের জনগণ করবে। ’
অনুষ্ঠানে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা—কর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)