হারবেন জেনেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন যারা
আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হচ্ছে গত ২৩০ বছর ধরে। কিন্তু রিপাবলিকান বা ডেমোক্র্যাটিক – এই দুই পার্টির বাইরের কেউ কি কখনো প্রেসিডেন্ট হয়েছেন?
হয়েছেন, মাত্র একবার।
তিনি হলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন। তিনি ছিলেন একজন ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী।
মার্কিন রাজনীতির এই দুই স্তম্ভ রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এমনভাবে মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে আধিপত্য করে, এবং প্রচারণার জন্য চাঁদা তোলার ক্ষেত্রেও তারা এমনভাবে এগিয়ে আছে যে এই দুই পাটির বাইরের কারো জেতার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য।
কিন্তু এই প্রায়-অনতিক্রম্য বাধার কথা জেনেও কেউ কেউ কিন্তু ভাবেন – যাই ঘটুক, আমি নির্বাচন করবোই।
এরকম লোকের সংখ্যা কিন্তু নিতান্ত কম নয়।
যদি ৯ অক্টোবর পর্যন্ত হিসেবটার দিকে নজর দেওয়া হয় – তাহলে দেখা যাবে, প্রায় ১,২১৬ জন প্রার্থী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রার্থী হতে ফেডারেল নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন।
কারা এরা? প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার ব্যাপারে এরা কতটা “সিরিয়াস?”
বিবিসি কথা বলেছে এমন তিন জনের সাথে। এদের একজন পিয়ানোবাদক এবং বক্তা। আরেকজন আমেরিকান আদিবাসী এবং তথ্য প্রযুক্তিবিদ। শেষ জন শত কোটি টাকার ক্রিপটোকারেন্সির মালিক – সোজা কথায় বিলিওনিয়ার।
তাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার কী, এবং কেন তারা মনে করেন যে তারা আমেরিকানদের ভোট পাবার উপযুক্ত?
জেড সিমন্স একজন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী নারী।
তিনি একজন সাবেক বিউটি কুইন। একজন পেশাদার পিয়ানোবাদক, একজন খ্রিস্টান যাজক, মানুষকে উদ্দীপ্ত করার মতো বক্তা, র্যাপার এবং একজন মা। তিনি নিজেই বলছেন, তিনি একজন ব্যতিক্রমী প্রার্থী – কিন্তু এখন সময়টাই ব্যতিক্রমী।
তিনি বলছেন, এটা এমন এক সময় যখন আমরা গতানুগতিক প্রাত্যহিক জীবনযাপন করতে পারছি না।
আমি একজন নাগরিক অধিকার আন্দোলনকর্মীর মেয়ে এবং আমার বাবা আমাকে এ শিক্ষাই দিয়েছিলেন যে কোথাও অভাব-অবিচার দেখলে তুমি নিজেকে প্রশ্ন করবে, তোমার নিজের কি এক্ষেত্রে কিছু করা প্রয়োজন?”
জেড সিমন্স বলছেন, তার লক্ষ্য হলো অর্থনীতি, শিক্ষা এবং ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় সংস্কার এনে সবার জন্য সমান সুযোগের দ্বার উন্মুক্ত করা। সেই চেতনা থেকেই তিনি আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে কম খরচে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।
সিমন্সের কথা, প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হবার যোগ্যতায় বলা আছে আপনাকে ৩৫ বছর বয়স্ক হতে হবে, তাকে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেয়া একজন বাসিন্দা হতে হবে এবং এদেশে ১৪ বছর বাস করতে হবে।
“কিন্তু এখন প্রেসিডেন্ট পদে কেউ প্রার্থী হলে তাকে প্রায় ১০০ কোটি ডলার খরচ করতে হয়, এটা ভাবলেই আমাদের বমি আসে। আমাদের বরং ওই অর্থটা মানুষকে সাহায্য করার জন্য খরচ করা উচিত। ”
তাহলে, সিমন্স কি একজন লিবারেল (উদারনৈতিক), নাকি রক্ষণশীল?
তার জবাব “এটা নির্ভর করে আপনি কাকে প্রশ্নটা করছেন। আমাদের পলিসি তো বার্নি স্যান্ডার্সের সমর্থক থেকে শুরু করে খ্রিস্টান যাজকরা পর্যন্ত সবাই পছন্দ করছে। ”
তিনি বলেন, তিনি নিজে একজন খ্রিস্টান যাজক এবং ধর্মবিশ্বাসী বলেই যে তিনি রক্ষণশীল হবেন তা মনে করার কোন কারণ নেই।
“আমার তো মনে হয়, যীশু ইতিহাসের সবচাইতে বৈপ্লবিক চরিত্রদের একজন ছিলেন, তিনি যেভাবে কাজ করেছেন তাতে হয়তো আপনি তাকে একজন প্রগতিশীলও বলতে পারেন। ”
করোনাভাইরাস মহামারি এবারের হোয়াইট হাউসে যাবার লড়াইকে একেবারেই উল্টোপাল্টা করে দিয়েছে। জনসভা কাটছাঁট করা হচ্ছে, পার্টিগুলোর সম্মেলন হচ্ছে অনলাইনে, সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামেও প্রাধান্য বিস্তার করেছে মহামারির খবর।
তবে জেডের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল – তিনি যে প্রতিযোগিতায় আছেন তা মানুষকে জানানো।
তিনি বলছেন, “ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের এই সময়টাতে যখন বড় বড় কর্পোরেশন বা মিডিয়া এর প্রতি সংহতি জানাচ্ছে, তখনও তারা – এমনকি কৃষ্ণাঙ্গদের কিছু মিডিয়াও- এই খবর দিতে চাইছে না যে আমি আছি। ”
“কেনে ওয়েস্টের মত একজন সেলিব্রিটি যে প্রার্থিতার আবেদনপত্রও জমা দেয়নি – গত ৪ জুলাই তার ঘোষণার পর ৩০ মিনিটের মধ্যে সব প্রধান নেটওয়ার্ক তার খবর প্রচার করলো। আমরা এতে বেশ মর্মাহত হয়েছি। ”
ব্যালট পেপারে কি এসব প্রার্থীদের নাম থাকবে?
রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থীদের নাম যুক্তরাষ্ট্রের সব অঙ্গরাজ্যের ব্যালট পেপারে থাকবে।
কিন্তু যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী তাদের বিভিন্ন রাজ্যের নানা রকম সময়সীমা ও শর্ত পূরণ করতে হবে।
সিমন্সের ক্ষেত্রে যেটা হবে তা হলো – তার নাম ওকলাহোমা এবং লুইজিয়ানা রাজ্যের ব্যালট পেপারে থাকবে। কিন্তু অন্য ৩২টি রাজ্যে তার নাম নিবন্ধিত হয়েছে একজন “রাইট-ইন” প্রার্থী হিসেবে।
অর্থাৎ, ব্যালটে তার নাম থাকবে না কিন্তু কোন ভোটার যদি নিজে ব্যালটে তার নাম লিখে দেন – তাহলে সেই ভোটটি তিনি পেলেন বলে ধরা হবে।
জেড সিমন্স স্বীকার করেন যে তার জয়ের সম্ভাবনা খুবই কম কিন্তু তিনি মনে করেন এ বছর না হলেও পরবর্তীতে কোন এক সময় তিনি হোয়াইট হাউসে যেতে পারবেন।
ক্রিপটোকারেন্সি কোটিপতি ব্রক পিয়ার্স
ব্রক পিয়ার্স শিশু বয়সে অভিনেতা হিসেবে নাম করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে ফার্স্ট কিড নামে একটি কমেডিতে তিনি প্রেসিডেন্টের পুত্র হিসেবে অভিনয় করেছিলেন।
তবে পরে তিনি টেক উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং এখন তাকে হয়তো একজন ক্রিপটোকারেন্সি বিলিওনিয়ার বলা যায়।
কিন্তু তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন কেন?
তার জবাব – দেশের অবস্থা নিয়ে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, তাই।
“আমার মনে হয়, আমাদের সামনে ভবিষ্যতের পৃথিবীটা কেমন হবে তার কোন চিত্র নেই” – বলছিলেন পিয়ার্স।
“ধরুন ২০৩০ সালে কেমন পৃথিবীতে আপনি বাস করতে চান, কোথায় আমরা যেতে চাই, এরকম একটা লক্ষ্য থাকা দরকার। এখন কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি হচ্ছে, খুব বেশি লোক যুগান্তকারী কোন ধারণার কথা বলছেন না। এটা ভয়ের ব্যাপার। তবে আমার একটা ভাবনা আছে যে কি করতে হবে। ”
গত চার বছর ধরে পিয়ার্স পুয়ের্তো রিকোতে জনকল্যাণমূলক কাজ করেছেন। তিনি বলছেন শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কথা ভাবলে হবে না। জীবন, স্বাধীনতা, সুখী জীবনের সন্ধান – এগুলোকে কতটা তুলে ধরা হচ্ছে তা দিয়েই তিনি সাফল্য মাপতে চান।
তিনি বলছেন, তার মধ্যে রক্ষণশীল এবং উদারনৈতিক দুই প্রবণতাই রয়েছে।
তিনি গাঁজা বৈধ করে দেবার পক্ষপাতী, ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের শীর্ষ ধনীর তালিকায় তার নাম দেখে তিনি এতটাই অখুশি হয়েছিলেন যে তিনি তার এক বিলিয়ন ডলার দান করে দিতে চেয়েছিলেন।
রিপাবলিকান প্রার্থীদের হাজার হাজার ডলার দান করেছেন তিনি।
তার বিরুদ্ধে তিন জন পুরুষ অভিনেতা যৌন আক্রমণের অভিযোগ এনেছিলেন – তবে তিনি কোন অন্যায়ের কথা অস্বীকার করেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনও হয়নি।
নির্বাচন কমিশনের উপাত্ত অনুযায়ী, ব্রক পিয়ার্স প্রচারাভিযানের জন্য ৩৭ লক্ষ ডলার খরচ করেছেন।
তার কথায়, তিনি সরাসরি নির্বাচনে জেতার কৌশল নেননি। তিনি চান একটি মাত্র রাজ্যে জিততে এবং লড়াইটাকে হাড্ডাহাড্ডি পর্যায়ে নিয়ে যেতে – যাতে প্রতিনিধি পরিষদ একজন বিজয়ী বেছে নিতে বাধ্য হয়।
তার কথা, এটা যখনই হয়েছে তখন তারা সমঝোতার ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তৃতীয় বা শেষ স্থানে থাকা প্রার্থীকে বেছে নিয়েছে।
সমস্যা হলো, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটা ঘটেছে মাত্র একবার – ১৮২৪ সালে।
তবে ব্রক পিয়ার্সের কথা হচ্ছে – এবার নভেম্বরে তার বয়স হবে ৪০। তাই তার হাতে সময় আছে, এবং এইভাবে তিনি ভবিষ্যতে শুধু তার জন্য নয় – যে কোন স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্যই মাঠ তৈরি করে রাখতে চান।
তো, নির্বাচনে হারলে তিনি কি করবেন?
পিয়ার্সের জবাব: তাকে বহুবার নিউইয়র্ক বা মিনেসোটার গভর্নর পদে দাঁড়ানোর আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
“তবে নভেম্বরের চার তারিখের আগে তিনি এক মুহূর্তের জন্যও ওসব নিয়ে ভাবতে চান না।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের একটা সুবিধা হলো তাদের ভোটে দাঁড়ানোর জন্য কোন দলকে সন্তুষ্ট করতে হয়নি।
তাই তারা স্বাধীনভাবে তাদের পছন্দমত ইস্যুতে কথা বলেন।
মার্ক চার্লস হচ্ছেন এর একটা দৃষ্টান্ত।
তিনি একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কাজ করেছেন। তিনি আদিবাসী এবং অশ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের জীবনে প্রভাব ফেলে এমন ইস্যুতে সামাজিক আন্দোলনের নিষ্ঠাবান কর্মী।
তিনি সেই সব ভোটারদের প্রার্থী হতে চান যারা ট্রাম্প বা বাইডেন কারোর সাথেই আত্মীয়তার বন্ধন অনুভব করেন না।
চার্লস এসেছেন নাভাজো জাতিগোষ্ঠী থেকে। তার এই আত্মপরিচয় তার প্রার্থিতার ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
তিনি বলছেন, যে এলাকার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি গড়ে উঠেছে – তা ছিল পিস্কাটাওয়ে জাতিগোষ্ঠীর আবাসভূমি। “তারা কলম্বাস আসার আগে থেকেই ছিল, এখনো আছে। আমি তাদের স্বাগতিক জাতি হিসেবে সম্মান করতে চাই।
চার্লস ২০০০ সালে তার পরিবার নিয়ে নাভাজোদের সংরক্ষিত জায়গায় থাকতে শুরু করেন, এবং সেখানে তিনি ১১ বছর ছিলেন। কারণ, তিনি ঐতিহ্যগত সেই জীবনকে অনুভব করতে চেয়েছিলেন।
“সেখান থেকেই আমি কয়েকটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দেখেছি। ”
জায়গাটা ছিল নিকটতম পাকা রাস্তা থেকে ৬ মাইল দূরে। সেখানে তারা এক কক্ষবিশিষ্ট ঐতিহ্যবাহী নাভাজো বাড়িতে থাকতেন। সেখানে কোন বিদ্যুৎ বা পানির সরবরাহ ছিল না। তার প্রতিবেশিদের কাজ ছিল ভেড়া পালন এবং কম্বল বোনা।
তার পরিবার একটি স্টোভে রান্না করা, দূর থেকে পানি বয়ে আনা, এবং মোমবাতির আলোয় জীবন কাটানোর জন্য তৈরি ছিলেন।
তবে এ জীবন যে বাকি সমাজ থেকে কতটা বিচ্ছিন্ন তা তিনি আগে বুঝতে পারেননি।
“তাদের জনগোষ্ঠীর বাইরের যে লোকেরা সেখানে যেতো তারা হয় তাদের ছবি তুলতে যেতো – নতুবা যেতো সাহায্য দিতে। প্রায় কেউই তাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে যায়নি” – বলেন চার্লস।
তার ওপর ছিল এই জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক অন্যায়ের বোধ এবং তার চাপ। “আমি এর ফলে নিরাপত্তাহীন এবং ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিলাম” – বলেন তিনি।
চার্লস ঠিক করলেন, তিনি বাইরের জগতের দিকে হাত বাড়াবেন এবং তিক্ত বোধ না করে সমঝোতা গড়ে তুলবেন।
তিনি বলছেন, তিনি সবাইকে নিয়ে এক আধুনিক আমেরিকা গড়ে তুলতে চান – যা অসাম্যকে প্রত্যাখ্যান করবে।
“আমাদের সংবিধান শুরু হয়েছে ‘উই দ্য পিপল’ কথাটি দিয়ে, কিন্তু কখনো নারীদের কথা উল্লেখ করা হয়নি, আদিবাসীদেরকে রাখা হয়েছে এর বাইরে, আর আফ্রিকানদের তিন-পঞ্চমাংশ মানুষ বলে মনে করা হয়েছে ” – বলেন চার্লস।
“এটাই আমার প্রচারাভিযানের মর্মকথা। আমাদের সত্যিই যদি এমন জাতি হতে হয় যেখানে উই দ্য পিপল মানে আমাদের সবাইকে বোঝাবে – তাহলে আমাদের কিছু মৌলিক ভিত্তি নিয়ে কাজ করতে হবে। এই দেশ যে ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত তাতে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে – যেমন বর্ণবাদ, পুরুষতান্ত্রিকতা এবং নগ্ন শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ।”
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)