‘পেশাগত জায়গায় সাংবাদিক হাবিব ছিলেন নির্মোহ অবিচল’ : মির্জা ফখরুল
পেশাগত জায়গায় সাংবাদিক হাবিবুর রহমান খান ছিলেন নির্মোহ অবিচল। এমন মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, হাবিব কেবল সাংবাদিক হিসেবেই নন, একজন মানুষ হিসেবে ছিলেন অনন্য। যাকে ভালো না বেসে পারা যায় না। তিনি সত্য প্রকাশে ছিলেন অদম্য ও অবিচল।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনতায়নে শনিবার বন্ধু, স্বজন ও সহকর্মীদের আয়োজনে দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র সাংবাদিক প্রয়াত হাবিবুর রহমান খানের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বলেন, হাবিবের স্মৃতিসভায় এসে কথা বলতে হবে—এটি কখনও ভাবিনি। অল্প সময়েই তার বন্ধুসূলভ ব্যাবহার আমাকে বিমোহিত করেছে। সাংবাদিকতার সঙ্গে দলীয় রাজনীতিকে মেলাতেন না তিনি। পেশাগত চেতনায় আত্মবিশ্বাসী থেকে সত্য প্রকাশে দ্বিধা করতেন না।
সাংবাদিকতা চ্যালেঞ্জের মুখে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সাংবাদিকতা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের একটি পেশা। সেই জায়গায় হাবিবুর রহমান খান আত্মবিশ্বাসের জায়গায় লড়াই করে গেছেন।
তিনি বলেন, এতো অল্প বয়সে তার চলে যাওয়াটা মেনে নেওয়া কষ্টের। দেশের আজকের প্রেক্ষাপটে তার মতো স্পষ্টবাদী সাংবাদিকের খুবই প্রয়োজন ছিল।
জানাজায় অংশ নিতে না পারায় আক্ষেপ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খুব আক্ষেপ হয় আমি হাবিবের জানাজায় যেতে পারিনি। বাসায় গিয়ে পরিবারের খোঁজ নিতে পারিনি। তবে আমার বিশ্বাস, অনেক কষ্টের মধ্যেও তার পরিবার উঠে দাঁড়াবে। আমরাও সব সময় তার পরিবারের পাশে আছি। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি, পরপারে আল্লাহ তাকে ভালো রাখুন।
হাবিবের স্মৃতিচারণ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, হাবিব আমাদের আগে চলে যাওয়ার কথা নয়। সে বয়সে আমার ছোট হলেও কর্মে ছিল অনেক বড়।
মৃত্যুর দুদিন আগেও হাবিবুর রহমান খানের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তখনো বুঝিনি হাবিবের সঙ্গে সেটাই হবে আমার শেষ দেখা। রাজনীতিকদের সঙ্গে সাংবাদিকদের ভালো সম্পর্কে থাকে। এ সম্পর্ক বজায় রাখতে হাবিব কোনো ব্যতয় ঘটাননি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ১/১১-এর দুঃসময়ে তার নির্ভিক দায়িত্ব পালন অন্য সাংবাদিকদেরও অনুপ্রাণিত করেছে।
সাংবাদিক মঈন উদ্দিন খানের পরিচালনায় শোকসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহবায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার নাসির উদ্দীন অসীম, তাবিথ আউয়াল, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, রফিক সিকদার, সাংবাদিক মহিউদ্দিন খান মোহন, এনাম আবেদীন, সাংবাদিক নেতা এম আব্দুল্লাহ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, খুরশিদ আলম, শহিদুল ইসলাম, মুরসালিন নোমানী, শাখাওয়াত হোসেন বাদশা, রফিকুল ইসলাম আজাদ, রাশেদুল হক, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুল হাসান পিংকু, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।
স্মৃতিচারণ করেন সাংবাদিক শাহাবুদ্দিন চৌধুরী, হাসান শিপলু, মোজাম্মেল হোসেন চঞ্চল, মাসুম মোল্লা, শফিক শাফি, নজরুল ইসলাম, আরিফুজ্জামান মামুন, মনিরুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান, গাইছুল আজম বিপু, রুমানা জামান, আব্দুর রহমান জাহাঙ্গীর, শাসমুল ইসলাম প্রমুখ।
এসময় হাবিবুর রহমান খানের স্ত্রী ফারজানা মাহমুদ সনি স্বামীর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময়ে সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
সভায় সাংবাদিক হাবিবুর রহমান খানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২২ আগষ্ট দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার হাবিবুর রহমান খান হার্ট অ্যাটাক করে ইন্তেকাল করেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)