দানা’র প্রভাবে… ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে শঙ্কায় সাতক্ষীরা উপকূলবাসী
মোস্তাক আহমেদ, কলারোয়া: সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানার শঙ্কা না থাকলেও ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে সাতক্ষীরা উপকূলে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন উপকূলের মানুষ।
সাতক্ষীরা উপকূলের অন্তত নয়টি পয়েন্টে ৬ কিলোমিটার উপকূলরক্ষা বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সামান্য জলোচ্ছ্বাসে এসব পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে উপকুলের দুই উপজেলার বিস্তির্ণ জনপদ।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দানার সম্ভাব্য গতিপথ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে হলেও বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে সাতক্ষীরায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। সকাল থেকে থেমে থেমে মাঝারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকার নদীগুলোতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত উপকূলের বেড়িবাঁধের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
জেলার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পশ্চিম দুর্গাবাটির দুটি পয়েন্টে ২০০ মিটার, দাতিনা খালীর একটি পয়েন্টে ২০০ মিটার, গাবুরা ইউনিয়নের ৯নং সোরা ও দৃষ্টিনন্দনে ৩০০ মিটার, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সেন্ট্রাল কালিনগর, হরিনগর বাজার ও কদমতলায় ৩৫০ মিটার, কৈখালী ইউনিয়নের বৈশখালিতে ১৫০ মিটার বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া রমজাননগরের দ্বীপ গ্রাম গোলাখালির সবটাই ঝুঁকিপূর্ণ।
এছাড়া আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, শ্রীউলা ও আনুলিয়া ইউনিয়নের একাধিক পয়েন্টে খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
গাবুরা ইউনিয়নের চাদনিমুখা গ্রামের একাধিক বাসিন্দা জানান, কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর পাড়ে আমাদের বসবাস। আইলার পর থেকে প্রতিবছরই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। আমাদের সবকিছু নদীর মধ্যে। জমি জায়গা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমাদের এলাকায় নতুন বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। তবে সেটি শেষ হতে এখনো এক বছর সময় লাগবে।
দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, আমার ইউনিয়নের ৩টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। নদীতে জোয়ারের পানির চাপ বাড়লে সেটি টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। তারপরও আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সালাউদ্দিন জানান, জেলার ৬৮৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে বিভিন্ন পয়েন্টে ৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করার জন্য তিন হাজার জিও বস্তা, দুই হাজার প্লাস্টিক বস্তা, ১০ জিও রোল প্রস্তুত আছে। এগুলো দিয়ে এক কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার করা যাবে। আমাদের সকল কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। সাতক্ষীরায় ৮৮৭টি সাইক্লোন শেল্টার ও আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যেখানে ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫০০ মানুষ নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারবেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ মোকাবিলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)