সাতক্ষীরায় বেতনা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এলাকায় ইরি ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা


মেহেদী হাসান শিমুল, সাতক্ষীরা: দীর্ঘ ৬-৭ বছর ধরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বেতনা নদী তীরবর্তী অঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির কারণে সাতক্ষীরা পৌরসভার ৩ টি ওয়ার্ড সহ উপজেলার ধুলিহর, ব্রহ্মরাজপুর ও ফিংড়ী ইউনিয়নের আংশিক এলাকায় বছরের ছয় মাস ধরে বন্যাকবলিত থাকার কারণে এসব এলাকায় আমন ধানের ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়।
কৃষকরা আমন ধান ফসল উৎপাদন করতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়লেও এবছর সদর উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকায় দিগন্ত জুড়ে এখন সবুজের সমারোহ। যেদিকে চোখ যায়, শুধু সবুজ আর সবুজ। সবুজ ধানে দখিনা বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জমির ফসল নষ্ট না হলে বাম্পার ফলনের আশায় এবার বুক বেঁধেছে কৃষকরা।
বিগত বছরের চেয়ে এ বছর অধিক জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর চাষাবাদের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে উপজেলার সকল এলাকায় ব্যাপকহারে ইরি বোরো চাষাবাদ হয়েছে। কৃষকরা শ্যালো মেশিন বা বৈদ্যুতিক মটর দিয়ে মাধ্যমে বোরো ধানের ফসলে পানিসেচে দিয়ে থাকে।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারনে রোগবালাই অনেকাংশে কম হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বেতনা তীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এসমস্ত এলাকায় বছরে ছয় মাস জলাবদ্ধতা থাকার কারণে এখানে একটি ফসল উৎপাদন হয়। সেজন্য কৃষক রা এবার বোরো ধানের চাষের গভীর মনোযোগ দিয়েছে। মিষ্টি পানির ঘেরের জমিতে এবার বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।
দীর্ঘ দিন ধরে পানি বন্দি থাকায় এই এলাকায় কৃষি জমিতে বিভিন্ন প্রকারের ঘাস পানিতে পচে জৈব সার উৎপাদন হয়ে মাটির শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে দিগন্ত জুড়ে সবুজ ফসলের সমারোহ।
উপজেলা কৃষি অফিসার মনির হোসেন জানান, উপজেলার ১২৮০ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদ হয়েছে এবং ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৬৫৮ মেট্রিক টন। অন্যবারের তুলনায় এবারের ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অনেক ভালো। ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের মাছখোলা গ্রামের ধানচাষী মফিজুল ইসলাম জানান আবহাওয়া ও প্রকৃতির কারণে এবছর এই ব্লকে গতবারের চাইতে বর্তমানে ধান ভাল বোঝা যাচ্ছে।
এ বছর আমার ব্লকে ব্রি-ধান-২৮ বেশ ফলেছে। বর্তমানে আবহওয়া ভালো, ধান ঘরে না উঠা পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছেনা।
দামারপোতা গ্রামের কৃষক হাফিজুল ইসলাম জানান, এ বছর আমাদের এলাকায় ধানের ফলন খুব ভাল দেখা যাচ্ছে, যদি এভাবে শেষ নামে আবহাওয়া ভাল থাকে তাহলে বাম্পার ফলন হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
ধুলিহর জাহানাবাজ গ্রামের ইলিয়াস হোসেন বাবু জানান আমার ৫ বিঘা ঘেরের জমিতে ধান চাষ করেছি আমার ধানের অবস্থা এখন অনেক ভালো দেখেছি একই জমিতে মাছ চাষ করার পর ধান চাষ করে লাভবান হবো বলে ধারণা করছি।
ধুলিহর গোবিন্দপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আশরাফ হোসেন জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর ধান ভাল ও রোগবালাই কম তবে ধান কেটে ঘরে না তোলা পর্যন্ত কৃষকের চিন্তার শেষ নেই।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে আরো জানা যায় এবছর উপজেলায় ব্রি-ধান ২৮ বেশি পরিমান জমিতে চাষাবাদ হয়েছে, তাছাড়া ব্রি ৮৮, শুভলতা, ৬৭, বিনা-১০ হাইব্রিড ধানের চাষ ও কিছু এলাকায় লবণ সহিষ্ণু ধান চাষাবাদ হয়েছে।
‘অধিক ফলনের জন্য পরিমিত সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং সার্বিক পরিচর্যায় কৃষকদের সচেষ্ট হতে আমরা সব সময়ই পরামর্শ দিয়ে আসছি। কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করায় এখনো পর্যন্ত রোগবালাই কিছুটা কম আছে। ব্লাস্ট রোগ দমনে আগাম পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। ফলে তিনি আশা করেন, এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে।

oplus_32

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
