পুলিশকে অবহেলা করে দেশ গড়া যাবে না : প্রধান উপদেষ্টা


পুলিশকে অবহেলা করে বা পাশ কাটিয়ে দেশ গড়া যাবে না বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, পুলিশই সম্মুখসারির মানুষ। পুলিশ মানে আইন ও শৃঙ্খলা। আর এই আইন ও শৃঙ্খলা না থাকলে যত বড় বড় চিন্তাই হোক, যত টাকাই ঢালুক কোনো কাজে আসবে না।
সোমবার (১৭ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁও কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের ১২৭ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, বিদ্যমান আইন মেনে পুলিশকে অবশ্যই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে হবে।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সরকার যা কিছুই করতে চাক না কেন, যে ভঙ্গিতেই করতে চাক না কেন, শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাত দিয়েই করতে হয়। তারা সম্মুখসারির মানুষ। কাজ করে দেবে না, তারা এনভায়রনমেন্টটা (পরিবেশ) সৃষ্টি করে। এনভায়রনমেন্ট না থাকলে কোনো কাজ হয় না।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পুলিশের কথার প্রসঙ্গে বারবার আমরা বলেছি দুটি কথা আইন ও শৃঙ্খলা, এটাই হলো পুলিশ। … পরিবেশ সৃষ্টি করা। আইনের পরিবেশ সৃষ্টি করা। আইন যদি না থাকল তাহলে সরকারই কি, গণতন্ত্র কি, অধিকার কি, নাগরিকদের কি, কিছুই থাকে না। এটাই ছিল মূল জিনিস। আমরা পুলিশকে অবহেলা করে, বা পাশ কাটিয়ে গিয়ে দেশ গড়তে পারব না। তারাই সম্মুখ সারির মানুষ। তারা ক্ষেত্র প্রস্তুত করলে তখন বাকি জিনিসগুলো হয়। বীজ লাগানো হয়, চারা লাগানো যায় সবকিছু হয়। আইন না থাকলে ও শৃঙ্খলা না থাকলে যত বড় বড় চিন্তাই হোক, যত টাকাই ঢালুক কোনো কাজে আসবে না।
অধ্যাপক ইউনূস পুলিশ সুপারদের কাজের মূল্যায়নের ওপর জোর দেন, যাতে মাঠ পর্যায়ে প্রতিযোগিতা আরও গতিশীল হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ফলে আমরা বড় সুযোগ পেয়েছি। এটাকে যেন হারিয়ে না ফেলি। আমরাও সেটা চেষ্টা করব, ভবিষ্যতে যারা আসবে তারাও আশা করি চেষ্টা করবে। পথটা যেন আমরা সৃষ্টি করে দিই। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, সেটিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ পুলিশকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে হবে।
বাংলাদেশ একটি মস্ত বড় সম্ভাবনাময় দেশ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, তবে সেই সম্ভাবনাকে আমরা বাস্তবের দিকে আনতে পারছি না, ঠেকে যাচ্ছি। আজকে আমরা যে সুযোগ পেয়েছি, মস্ত বড় সুযোগ। সে সম্ভাবনাকে কার্যে পরিণত করা। এবং জুলাইয়ের এ অভ্যুত্থানের ফলে সেই সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে। এ সম্ভাবনার যে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে সেটাকে যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি। কারণ হারিয়ে ফেলা সোজা। মুহূর্তে হারিয়ে যায়। এ সম্ভাবনাকে ধরে রাখা। যেটুকু সময় আমাদের আছে, এর মধ্যে আমরা চেষ্টা করব, ভবিষ্যতে যারা আসবে তারাও আশা করি চেষ্টা করবে, পথটা যেন আমরা সৃষ্টি করে দিই, এই পথে আমরা এগোলে সম্ভাবনাগুলো বাস্তবে পরিণত হবে।
ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাব হচ্ছে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে
নারী ও শিশু নির্যাতনসংক্রান্ত অপরাধ নির্ণয়ের সক্ষমতা বাড়াতে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে দুটি ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সোমবার (১৭ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’–এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে অংশীজনদের কাছ থেকে পাওয়া মতামত অনুযায়ী খসড়াটি প্রয়োজনীয় পরিমার্জন করে উপদেষ্টা পরিষদের পরবর্তী বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নারী ও শিশু নির্যাতনসংক্রান্ত অপরাধ নির্ণয়ের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আপাতত চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে দুটি ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাব স্থাপন করা হবে।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
