শ্যামনগরে পুকুর থেকে ৩৬টি হাসুয়া উদ্ধার


এবিএম কাইয়ুম রাজ : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় একটি পারিবারিক পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৩৬টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র ‘হাসুয়া’। রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শ্যামনগর পৌরসভার নকিপুর মধ্যপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ।
উদ্ধারকৃত পুকুরটি শ্যামনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের পিয়ন সাবের মিস্ত্রির বাড়ির পাশেই অবস্থিত। তিনি ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। একই পরিবারের শ্বশুর মোকসেদ আলী গাজী, যিনি শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী বাস্তুহারা লীগের সভাপতি এবং শ্যালক রহমত আলী, যিনি শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের উপজেলা সভাপতি—তিনজনের নামে ওই পুকুরটি স্থানীয়ভাবে পরিচিত।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাবের মিস্ত্রির ঘরের পাশের পুকুর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় বস্তায় রাখা ৩৬টি দেশীয় হাসুয়া উদ্ধার করে। এই অস্ত্রগুলো কে বা কারা পুকুরে রেখেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পেছনে কোনো সংঘবদ্ধ চক্র রয়েছে কি না, সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তে অপরাধে জড়িতদের খুঁজে পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি, এই অস্ত্রগুলো দীর্ঘদিন ধরে জমি দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একটি বিশেষ মহল ব্যবহার করে আসছে। নকিপুর গ্রামের বাসিন্দা সুজা মাহমুদ বলেন, বিগত সময়ে সাবেক এমপি জগলুল হায়দারের শাসনামলে শ্যামনগরে প্রায়ই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দাঙ্গা-হানাহানি চলত। তখন ভূমিহীন নেতা পরিচয়ে মোকসেদ গাজী, তার জামাতা সাবের মিস্ত্রি ও ছেলে রহমত আলীর নেতৃত্বে একটি বাহিনী গড়ে তোলা হয়, যারা স্থানীয় নানা বিরোধে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করত। এমনকি, ২০২৩ সালের শেষ দিকে আমাদের পরিবারের ওপরও এই অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে জমির দখল নেয় তারা।
স্থানীয় আরও কয়েকজন জানান, সাবের মিস্ত্রি ও তার আত্মীয়স্বজনেরা দীর্ঘদিন ধরে ওই পুকুরটি জবরদখল করে রেখেছে। এই অস্ত্র উদ্ধারকে কেন্দ্র করে এলাকায় নতুন করে উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে এখনো কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্ত শেষে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
