হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ অক্টোবরে শেষের আশা প্রসিকিউশনের


জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ আগামী অক্টোবরের মধ্যেই শেষ হওয়ার আশা প্রকাশ করেছে প্রসিকিউশন।
রোববার (১৭ আগস্ট) পর্যন্ত এই মামলায় ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হবে বলে সাংবাদিকদের কাছে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম।
বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই মামলার ৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা আজ (১৭ আগস্ট) শেষ হয়েছে। এর আগে তিন দিনে এই মামলায় পাঁচজনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়।
আজ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করেন। এ সময় অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। আর এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়া আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
এছাড়া এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ১৬ জুন ট্রাইব্যুনাল-১ পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে হাজির হতে একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন এবং পরদিন দুটি পত্রিকায় শেখ হাসিনা ও কামালকে ৭ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
তবে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরেও পলাতক দুই আসামি ট্রাইব্যুনালে হাজির না হওয়ায় তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী দিয়ে এই মামলায় অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী, শুনানি শেষে গত ১০ জুলাই এই মামলায় অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলতি বছরের গত ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলায় অভিযুক্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫টি অভিযোগ এনে অভিযোগ গঠনের আবেদন করে প্রসিকিউশন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রথম মামলাটি (মিস কেস বা বিবিধ মামলা) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)

একই রকম সংবাদ সমূহ

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়নি, সুষ্ঠু নির্বাচন এখনো নিশ্চিত নয়: রিজভী
দেশকে আবারও ষড়যন্ত্রের অন্ধগলিতে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠবিস্তারিত পড়ুন

জামায়াতকে নিয়ে ‘ঐক্যের পথে’ ইসলামি দলগুলো
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ অন্তর্বর্তী সরকার। এইবিস্তারিত পড়ুন

সেই তন্বীর সম্মানে ডাকসুর গুরুত্বপূর্ণ পদ ছেড়ে দিলো ছাত্রদল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদকবিস্তারিত পড়ুন