শ্যামনগরে জলজ উদ্ভিদবৈচিত্র্যের মেলা


সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: জলজ উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও স্থায়িত্বশীল ব্যবহারে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী জলজ উদ্ভিদবৈচিত্র্য মেলা।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম জেলেখালীতে শাপলা কিশোরী সংগঠন, সবুজ সংহতি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক যৌথভাবে এই মেলার আয়োজন করে।
মেলায় পশ্চিম জেলেখালী গ্রামের কিশোরীরা ৪টি গ্রুপে ভাগ হয়ে উপকূলীয় এলাকার পানিতে জন্ম নেওয়া শাপলা, ঢ্যাব, শালুক, শেওলা, টোপরপনা, ইদুরকানী, কলমি, হেলাঞ্চ, আদাবরুন, চিচো, লজ্জাবতী, জলপানকচু, ঘাস, মেলে, ছাতেম, নল খাগড়াসহ ৩৫ ধরনের জলজ উদ্ভিদ প্রদর্শন করে।
এসময় জলজ উদ্ভিদের প্রাপ্তিস্থান, গুণাবলী, ব্যবহার, কোন মৌসুমে কি কি পাওয়া যায়, কোনটি মানুষ ও প্রাণীর ওষুধ হিসাবে ব্যবহার হয়, এগুলোর হারিয়ে যাওয়ার কারণ এবং পরিবেশের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ তাও তুলে ধরা হয়।
মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন সবুজ সংহতির সভাপতি ডা. যোগেশ চন্দ্র মন্ডল এর সভাপতিত্বে মেলায় অংশগ্রহণকারী দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে জলজ উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মুন্সিগঞ্জ ইউপি সদস্য নীপা চক্রবর্তী, ধুমঘাট নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিভূতি মাঝী, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাছুম বিল্লাহ, কৃষক ভুধর চন্দ্র মন্ডল ও দেবীরঞ্জন মন্ডল, শিক্ষার্থী অন্যন্যা রাণী ও ধৃতিমা মন্ডল, প্রবীণ নাগরিক গংগারাম মাঝী, বারসিক কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ জোয়ারদার ও বিশ্বজিৎ মন্ডল।
তারা বলেন, প্রকৃতির সাথে মানুষের নিবিড় সম্পর্ক। প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠা প্রাণ ও উদ্ভিদবৈচিত্র্য যেমন মানুষের খাদ্য ও চিকিৎসার কাজে ব্যবহার হয়, তেমনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অন্যান্য কর্মকাণ্ডেও ব্যবহার হয়। এসব প্রাণ ও উদ্ভিদবৈচিত্রের মধ্যে অন্যতম হলো জলজ উদ্ভিদ।
স্থানীয় কৃষক তারাপদ গাঁতীদার বলেন, উপকূলীয় এলাকায় প্রতিনিয়ত জলবায়ু পরিবর্তন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার ও মনুষ্য বসতি স্থাপন বৃদ্ধিতে প্রাণ ও উদ্ভিদবৈচিত্র্য অনেকাংশে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এ সকল উদ্ভিদ ও প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণে ব্যক্তি ও সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানা রকম উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার। কেননা এসব উদ্ভিদ জলজ প্রাণী, মানুষ ও গবাদিপশুর খাদ্যভাণ্ডার হিসেবে কাজ করে।
তিনি বলেন, আমাদের উপকূল একসময় ছিলো প্রাণবৈচিত্র্যে ভরপুর। কালের বিবর্তনে তা আজ বিলুপ্তির পথে। আর তার মূল কারণ হলো লবণাক্ততা। দিনে দিনে লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে সকল প্রাণবৈচিত্র্য কমতে শুরু করেছে। আর এসকল প্রাণবৈচিত্র্যের মধ্যে জলজ উদ্ভিদ অন্যতম। জলজ উদ্ভিদ না থাকলে মাছসহ অনেক জলজ প্রাণী বাঁচতে পারেনা, যেটি পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য জলজ উদ্ভিদ সংরক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)

একই রকম সংবাদ সমূহ

শ্যামনগরে লিডার্স’র সহযোগিতায় উপকার ভোগীদের সাথে সেবা সম্পর্কিত গণশুনানি
শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনীতে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন ক্লাইমেট এ্যাকশন গ্রুপের আয়োজনে লিডার্স, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনবিস্তারিত পড়ুন

শ্যামনগরে কাজী আলাউদ্দীনের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধন
হাবিবুর রহমান সোহাগ : ভোরের আলো ফোটার আগেই শ্যামনগরের মালঞ্চ টেকনিক্যাল কলেজেরবিস্তারিত পড়ুন

দীর্ঘ ১৭ বছরেও হয়নি গ্রামবাসীর প্রধান যাতায়াতের শেকো নির্মাণ
সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ২নং কাশিমাড়ি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বিলগোডাড়া গ্রাম যেনবিস্তারিত পড়ুন