গণমাধ্যমকর্মীদের রক্তে রঞ্জিত আফগানিস্তান
আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমকর্মী হত্যার ঘটনা আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে। বছরের শুরুতেই দেশটির গোর প্রদেশে বিসমিল্লাহ আইমাক নামের এক রেডিও সাংবাদিক আততায়ীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত দুই মাসে পাঁচ প্রভাবশালী সাংবাদিকের প্রাণ ঝরল। বিসমিল্লাহ আইমাক স্থানীয় একটি রেডিওর প্রধান সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রিপোর্টার্স উইথ আউট বডার্সের বরাতে (২ জানুয়ারি) শনিবার খবরে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
আফগানিস্তানের মানবাধিকার সংস্থার কর্মী ও সরকার সমর্থিত বাহিনীকে লক্ষ্য করেই হামলার ঘটনা ঘটছে। এখন পর্যন্ত কোনো হামলার দায়ভার করেনি স্থানীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী। জড়িত কেউকেই আটক করতে পারিনি আফগান নিরাপত্তা বাহিনী। তবে অধিকাংশ হামলায় আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান জড়িত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রহমাতুল্লাহ নেকজাদ ছিলেন গজনি প্রদেশের প্রধান গণমাধ্যকর্মী। গত বছরের শেষ দিকেই প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে অতির্কিত হামলায় তিনি নিহত হন। এর কদিন আগেই এনিকাস টিভি-রেডিও টিভি সাংবাদিক মালালা মাইওয়ান্দ কর্মস্থলে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন। দেশটির আলোচিত সংবাদ উপস্থাপিকা রাজধানী কাবুলে গাড়ি বোমা হামলায় নির্মম মৃত্যু হয়। রেডিও লিবার্টির সাংবাদিক আলিয়াস দিই লস্করগাহে একইভাবে প্রাণ হারান। আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা চলচ্চিত্র পরিচালক সাবা সাহারের গুলি করা হয় রাজধানীতেই। যদিও অল্পের জন্য তিনি মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে যান।
দীর্ঘ ২০ বছরের যুদ্ধ বন্ধে বিদ্রোহী ও আফগান সরকারের মধ্যে আলোচনা আগামী সপ্তাহে পুনরায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে, এমন অবস্থার মধ্যেই আফগানস্থানজুড়ে প্রতিদিনই হামলার ঘটনা ঘটছে। প্রতিদিনই মরছে দেশটির বেসামরিক মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে শান্তি আলোচনায় আশার আলো দেখছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে আলেচনায় আফগান সরকার এবং দেশটির সরকারের মধ্যে বেশকিছু চুক্তির অগ্রগতি হয়েছে। আফগানিস্তানের মাটিকে সন্ত্রাসের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করবে না এমন শর্ত ছিল তালেবানদের জন্য। বিনিময়ে, দেশটিতে থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার শর্তেই চুক্তিতে রাজি হয় তালেবান গোষ্ঠী। কিন্তু এখন পর্যন্ত আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেনি হোয়াইট হাউস। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন যে, বেশির ভাগ সেনা দ্রুত তুলে নেওয়া হবে। এমন সিদ্ধান্তে ঘোর আপত্তি জানিয়ে আসছে ন্যাটো।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)