এসএসসি পরীক্ষা জুনে, ২৫ শতাংশ কমিয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস
আগামী জুন মাসে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পরীক্ষার জন্য একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। নবম-দশম শ্রেণির প্রতিটি বিষয় থেকে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমিয়ে এ সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেয়া হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেটি শিক্ষাবোর্ডগুলো থেকে প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে ১০ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। ২০২০ সালের পঞ্চম, অষ্টম ও এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল করে অটোপাস দেয়া হয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষের এক মাস পার হতে চললেও এখনো বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কয়েক দফায় আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত এ ছুটি বাড়ানো হয়েছে। এসএসসি সমমান ও এইচএসসি সমমান পরীক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করতে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শিগগিরই এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে।
এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সরকার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে চলতি বছরের এসএসসি সমমান পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে নবম-দশম শ্রেণির সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করতে প্রতিটি বিষয়ের জন্য দুজন সিনিয়র শিক্ষক, এনসিটিবির একজন বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ মিলে একটি দল গঠন করা হয়। এভাবে প্রতিটি বিষয়ের জন্য তিন সদস্যের একটি করে দল গঠন করে সিলেবাস সংক্ষিপ্তকরণের কাজ করা হয়েছে। এনসিটিবির আরেকটি বিশেষজ্ঞ দল ওই দলগুলোকে পরামর্শ প্রদান, দিকনির্দেশনা ও মনিটরিং করেছে।
কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মোট ১২ কর্মদিবসে চারটি কর্মশালা করে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে। নবম-দশম শ্রেণির মোট ৩৬টি পাঠ্যবইয়ের জন্য নতুন সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। তার মধ্যে নবম শ্রেণিতে পড়ানো হয়েছে এমন বিষয়ের মধ্যে যেগুলোর সঙ্গে দশম শ্রেণির বিষয়ের মিল রয়েছে, সেসব বাদ দেয়া হয়েছে। এ স্তরের সঙ্গে একাদশ শ্রেণির সঙ্গে মিল রয়েছে সেগুলোরও কিছু বাদ পড়েছে।
তবে পরের স্তরের সঙ্গে যে বিষয়গুলো যুক্ত রয়েছে এবং নবম-দশম স্তরে যে বিষয়গুলো শেখা ও জানা প্রয়োজন, সেগুলোর আলোকে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি বইয়ের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বিষয়বস্তু সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে কমানো হয়েছে।
জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বুধবার বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চলতি বছরের এসএসসি সমমান পরীক্ষার্থীদের জন্য আমরা একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করেছি। সেটি গত রোববার (১৭ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেটি অনুমোদন দেয়া হলে শিক্ষাবোর্ডগুলো থেকে তা প্রকাশ করা হবে। তার আলোকে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে।’
মশিউজ্জামান বলেন, ‘সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে প্রতিটি বই থেকে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বিষয়বস্তু কমানো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা পরবর্তী ক্লাসে গিয়ে যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটি মাথায় রেখে সিলেবাস কমানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আগের ক্লাসে যা পড়ানো হয়েছে বা পরবর্তী ক্লাসে পাবে সেসব বিষয় বাদ দিয়ে যেগুলো না পড়লে একাদশে গিয়ে বুঝতে সমস্যা হবে সেসব বিষয় রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তত্ত্বীয় বিষয়গুলো থেকে বিভিন্ন বিষয় বাদ দেয়া হলেও ব্যবহারিক বিষয় থেকে তেমন কিছু বাদ দেয়া হয়নি।’ তবে তত্ত্বীয় যে বিষয়গুলো বাদ দেয়া হয়েছে তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবহারিকও বাদ পড়বে বলে জানান তিনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, এনসিটিবির তৈরি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস পড়ানো শুরু করতে আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। শিগগিরই এ সংক্রান্ত ঘোষণা আসতে পারে। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত সিলেবাস পড়িয়ে একটি নির্বাচনী বা টেস্ট পরীক্ষা নেয়া হবে। জুন থেকে এসএসসি-সমমান পরীক্ষা শুরু করার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহাবুব হোসেন বলেন, ‘এসএসসি সমমান পরীক্ষার জন্য এনসিটিবি থেকে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস পেয়েছি। সেটি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেটি প্রকাশ করা হবে। সেটি ক্লাসে পড়িয়ে আগামী জুন থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু করা হতে পারে। এ জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)