কলারোয়ায় প্রতিদিন এক পুকুরে ৫ হাজার মানুষের গোসল!
সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌর সদরের হাজারও মানুষ রমজান মাসে গোসলের পানির অভাবে তীব্র ভুগান্তির শিকার হচ্ছেন।
শুস্ক মৌসুমে ভূপৃষ্টে তলদেশে পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় নলকুপ ও গভীর নলকুপে কোন পানি উটছে না। যেমন পান করা পানির অভাব তেমনি গোসল করা পানির ও অভাব। ফলে প্রয়োজনের তাগিদে যেতে হচেছ পৌর সভার বিভিন্ন নদ-নদী, পুকুর পুশকানিতে, কিন্তু সেখানেও পানি শুকিয়ে যাওয়ার অতিক্রম হয়েছে।
তবে পৌরসদরের ১নং তুলশীডাংগা, ৩নং গদখালী ও ২নং তুলশীডাংগা ওয়ার্ডসহ বাজারের ব্যবসায়ীরা, মুদিদোকনদার, রাজমিস্ত্রী, কাটমিস্ত্রী বহুশ্রেনী পেশার হাজার মানুষের একটি মাত্র পুকুর সেটা হল উপজেলা পরিষদের পুকুর। যেখানে প্রতিনিয়ত ৫হাজার মানুষের গোসল ও সাংসারিক কাজে ব্যবহারের জন্য একটি মাত্র পুকুর। এই পুকুরে নারী ও পুরুষের আলাদা পাকা দুইটি সিঁড়িঘাট রয়েছে। কিন্তু একই সাথে সিঁড়িঘাটে শতাধিক মানুষ কাজ করতে আসায় প্রতিনিয়ত ভিড় লেগেই থাকে।
পানি সমস্যা নিরসনে পুকুরে আরও পাকা সিঁড়িঘাট নির্মাণের দাবি পৌর বাসীর।
দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের মানুষের সাংসারিক কাজ-কর্ম করা ও শারীরিক পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ সুরক্ষায় এই পুকুরের পানি ব্যবহার হয়ে আসছে। কলারোয়া উপজেলা পরিষদ, প্রশাসন, পৌরসদর, পৌর বাজারের মানুষের একমাত্র ভরসা এই পুকুর।
বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় রমজান তক্ত দুপুরে নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাঙ্গলর সামনের পুকুর ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, এই পুকৃুরের সিঁড়িঘাটে শতাধিক মানুষ এক সাথে গোসল করছেন। তা দেখে মনে হচ্ছে পুকুরে গোসল প্রতিযোগিতা বা উৎসব চলছে। পুকুরের পাকা সিঁড়িতে বসে যার যেমন খুশি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন। কেউ সাবান দিয়ে শরীর ঘষছেন, কেউ কাপড় কাচছেন, কেউ পুকুরের পানিতে ডোবাডুবি করছেন। এ যেন এক মহামিলন মেলা।
পুকুরপাড়ের পূর্ব পাশের রয়েছে আরও একটি বেষ্টনী দেওয়া সিঁড়িঘাট। সেই সিঁড়িঘাটে এলাকার নারীরা দৈনন্দিন গোসল কাজসহ সাংসারিক কাজ করে আসছেন। পৌর সদরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট একটি বেতরাবতী নদী, কিন্তু সেই নদীটা শুকুয়ে গেছে।
পৌরবাসী বাসিন্দা মুনছুর আলী ও সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই পৌর সভার ০৩ ওয়ার্ডে নেই কোন সাপ্লাই পানি, আছে কয়েকটা নলকুপ সেটাতে পানি ওঠে না। পুকুরের পানি গোসল ও কাপড় কাচায় এবং অন্যান্য কাজে ব্যবহার করে আসছি আমরা। কিন্তু নলকুপের পানির অভাব। আমাদের পানি সংকট নিরসনে কেউ উদ্যোগ নিচ্ছেন না।’
গোলজার হোসেন, আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন এই পুকুরের সিঁড়িঘাটে মানুষ গোসলের জন্য ভিড় করেন। শুক্রবারে বেশি ভিড় হয়। এভাবে চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। আমাদের পানি সংকট নিরসনে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
পৌর সদরের মিলন মিয়া বলেন, ‘আমার বাড়িতে গোসল করার ব্যবস্থা নেই। আমরা উপজেলা প্রশাসনের কাছে সুদৃষ্ঠি কামনা করছি যাহাতে তাড়াতাড়ি প্রতি বছরের ন্যায় পানির ব্যবস্থা করতে। আমরা এটা থেকে পরিত্রাণ চাই।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)