ভারতফেরত ১০ করোনা রোগী পালিয়েছেন, ‘ভারতীয় ধরন’ ছড়ানোর শঙ্কা!
যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছেন ভারতফেরত ১০ করোনা রোগী। শনিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে রোববার (২৫ এপ্রিল) দুপুরের মধ্যে তারা পালিয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারীদের অবহেলার কারণে তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এতে করে করোনার ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অবশ্য হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের দাবি, মাত্র দু’জন রোগী পালিয়েছেন। আর সিভিল সার্জন বলছেন, হাসপাতালে দেয়া নাম ঠিকানা ঠিক থাকলে তাদের খুঁজে বের করা সম্ভব।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ব্রাদার তারক চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, গত শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টা ৫৭ মিনিটে ভারত ফেরত কিছু রোগী ভর্তি করা হয়। এরপর রোববারও রোগী আসেন। সব মিলিয়ে দুইদিনে দশজন করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের সবাইকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় করোনা ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।
হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্টার মতে, ভর্তি রোগীরা হলেন- যশোর শহরের বিমান অফিস মোড়ের আবুল কাসেমের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫৭), খালধার রোডের বিশ্বনাথের স্ত্রী মালা দত্ত (৫০), সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (১৯), একই গ্রামের একরামের স্ত্রী রোমা (৩০), প্রতাপকাঠি গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে মমিন, রামকান্তপুর গ্রামের গোলাম রব্বানীর স্ত্রী নাসিমা বেগম (৫০), বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর গ্রামের ফজর আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৫), ঝিনাইদাহ জেলার কালীগঞ্জের মনোতষের স্ত্রী শেফালি রানী, খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রামরাইল গ্রামের আহম্মদের সানার ছেলে আমিরুল সানা ও একই জেলার রুপসা এলাকার শের আলীর ছেলে সোহেল (১৭)।
করেনা ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সিনিয়র নার্স লাবনী বিশ্বাস বলেন, ভারত থেকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আসা দশজন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল। কিন্তু আজ সকালের পর থেকে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ও বক্ষব্যাধির কয়েকজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী যদি কোনো পরিবারে থাকে তার মাধ্যমে প্রথমে তার পরিবার এবং আশপাশের লোকজনও আক্রান্ত হতে পারেন।
তারা আরও বলেন, করোনার ভারতীয় ধরন উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফলে পালিয়ে যাওয়া রোগীরা যদি ভারতীয় ধরনের বাহক হন তাহলে তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার দিলিপ কুমার রায় বলেন, ভারত থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোনো রোগী হাসপাতালে আনা হলে তা পুলিশ স্কট করে দিয়ে যাবে। একইসাথে তাদের পাসপোর্ট পুলিশ হাসপাতালে জমা করবে। কিন্তু তার কোনোটাই করা হয়নি। কোনো রোগী যাতে পালাতে না পারে সেজন্য বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার বিষয়ে আমি পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলব।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, রোগী পালানোর কথা শুনে আমি রোববার সকালে যশোর জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছিলাম। হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে কথা হয়েছে। যে দশজন রোগী পালিয়েছেন তাদের নাম ঠিকানা সঠিক থাকলে খুঁজে বের করা সম্ভব। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।
জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা রোগী পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের কিছু জানায়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)