নেইমারদের হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে ম্যান সিটি
প্রতিপক্ষের মাঠে পরিষ্কার ব্যবধানে জিততে হতো। কঠিন হলেও কাজটা অসম্ভব ছিল না। গতবারের ফাইনালিস্ট প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) দারুণ ফুটবল খেলে তেমন কিছুই করার স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু সেটা আর সম্ভব হলো না।
বরং মাঠে হতশ্রী ফুটবলই উপহার দিলেন নেইমার-ডি মারিয়ারা। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে তাদের ২-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠে গেল ম্যানচেস্টার সিটি।
সিটির জোড়া গোলই করেন রিয়াদ মাহরেজ। চোটের কারণে এই ম্যাচে ছিলেন না পিএসজির তারকা ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে। এর মধ্যে আবার দ্বিতীয়ার্ধের মাঝপথে দশজনের দলে পরিণত হওয়ায় লড়াইটাও করতে পারেনি মাওরিসিও পচেত্তিনোর দল।
প্রথম লেগে পিএসজির মাঠে ২-১ গোলের জয় পেয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই ফাইনালে উঠেছে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা।
তুষারপাতের কারণে বরফ আচ্ছাদিত ছিল মাঠ, বিরতির পর কিছুটা বৃষ্টিও হয়। তবে কোনোকিছুই আটকে রাখতে পারেনি ম্যান সিটিকে। আক্রমণ, রক্ষণ সামলানো থেকে সবকিছুতেই এগিয়ে ছিল তারা।
ম্যাচের শুরুতে অবশ্য একটা আশা তৈরি হয়েছিল পিএসজির। ষষ্ঠ মিনিটে আলেকসান্দার জিনচেঙ্কোর হাত আর কাঁধের কাছাকাছি জায়গায় বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু ভিএআরে সিদ্ধান্ত পাল্টায়। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, হাতে নয়, বলটা লেগেছে কাঁধেই।
এর পাঁচ মিনিট পরই দুর্ভাগ্যজনকভাবে গোল খেয়ে বসে পিএসজি। কেভিন ডে ব্রুইনের শট মার্কিনিয়োসের পায়ে লেগে দিক পাল্টে চলে যায় বক্সের ডানদিকে। সেই বল পেয়ে গোল করতে ভুল করেননি মাহরেজ, কোনাকুনি শটে পরাস্ত করেন কেইলর নাভাসকে।
এরপর দুটি ভালো সুযোগ পেয়েছিল পিএসজি। একবার মার্কিনিয়োসের হেড ক্রসবারে লেগে যায়। দ্বিতীয়বার এদেরসনের ভুল পাসে বল পেয়েছিলেন ডি মারিয়া, তার শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
বিরতির পরও লড়াইয়ে ফেরার মতো ফুটবল খেলতে পারেনি পিএসজি। বরং বারবার আক্রমণে উঠে প্রতিপক্ষের রক্ষণে আটকে যাচ্ছিলেন নেইমার-ডি মারিয়ারা। শটে ছিল না গতি, ছিল না লক্ষ্যভেদের সম্ভাবনা।
এরই মধ্যে ৬৩ মিনিটের মাথায় পিএসজির সব আশা ভরসা বলতে গেলে শেষ করে দেন মাহরেজ। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বল পেয়ে ছয় গজের মধ্যে ঢুকে পড়েন ফিল ফোডেন, মাহরেজকে পিএসজির রক্ষণের কেউ খেয়ালই করেননি। ডানদিক থেকে কোনাকুনি শটে ব্যবধান ২-০ করে ফেলেন আলজেরিয়ান উইঙ্গার।
নিশ্চিত হার বুঝে মেজাজ ধরে রাখতে পারছিলেন না নেইমার-ডি মারিয়ারা। কথায় কথায় লেগে যাচ্ছিলেন তারা। ৬৯ মিনিটে সাইডলাইনের বাইরে সিটির অধিনায়ক ফের্নানদিনিয়োকের পা মারিয়ে লাল কার্ড দেখেন ডি মারিয়া। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের এই কাণ্ডের পর ঘর সামলাতেই ব্যস্ত পিএসজি আর লড়তে পারেনি। ২-০ গোলের সহজ নিয়েই মাঠ ছাড়ে সিটি।
প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠা ম্যানচেস্টার সিটির স্বপ্নপূরণের লড়াই আগামী ২৯ মে। ইস্তানবুলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ হবে রিয়াল মাদ্রিদ অথবা চেলসি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)