করোনা: কলারোয়ায় ব্র্যাকের অভিনব কায়দায় কিস্তি আদায়!
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় সরকারের নির্দেশনাকে অমান্য করে কঠোর লকডাউনের মধ্যেও বে-সরকারী সংস্থা ব্র্যাক এন.জি.ও গ্রাহকদের নিকট থেকে জোর করে কিস্তির টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তারা সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল কায়দায় কিস্তি আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেছেন এক ভুক্তভোগী সদস্য।
পৌরসভাধীন তুলশিডাঙ্গা গ্রামের চঞ্চল জানান, ‘গত কয়দিন আগে ব্র্যাকের একটি প্রচার গাড়ী বাড়িতে বাড়িতে যেয়ে ব্র্যাক কর্মীরা স্বাস্থ্য সেবা দিবে বলে প্রচার করে যায়। এখন দেখছি ব্র্যাকের কর্মীরা বাড়িতে বাড়িতে যেয়ে কিস্তি আদায়ের সেবা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ ডিজিটাল কায়দায় ব্র্যাকের পি.ও’রা টাকা আদায় করে বিভিন্ন বিকাশ নাম্বার থেকে ব্র্যাকের নির্দিষ্ট দেওয়া একটি বিকাশ নাম্বারে পেইমেন্ট করছেন, যেটা তারা সরকারকে প্রমান করছেন গ্রাহক নিজেরাই টাকা বিকাশ করে কিস্তি দিচ্ছে।’
তিনি প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার সুষ্ট তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী করেছেন।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার খোরদো গ্রামের আনারুলের স্ত্রী মুর্শিদা খাতুনের কাছে কিস্তি আদায়ের জন্য পি.ও ফোন দিয়ে টাকা চাচ্ছে।
সেসময় মুর্শিদার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আমার আর তিনটি কিস্তি বাকী আছে এই লকডাউনে কোন ইনকাম না থাকায় এই কিস্তিটা দিতে পারছি না। কিন্তু কোনভাবেই সেটা হবে না বলে ব্র্যাকের কর্মী জানিয়ে দিয়েছেন।’
তিনি ক্ষোভ দেখিয়ে বলেন, ‘ব্র্যাক কি সরকারের উপরে? এরা সরকারের নির্দেশনাও মানে না।’
উপজেলার ঘরচালা কাশিয়াডাঙ্গার সলেমানের স্ত্রী ফুলবানু জানান, ‘আমরা দু’মুঠো ভাত খেতে পারছি না, অথচ ব্র্যাক কর্মীর ফোনে টাকা চাওয়ার জ্বালায় মনে হয় আত্নহত্যা ছাড়া কোন পথ নাই।’
তিনিও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এদের এই মানসিক নির্যাতন দেখার কি কেউ এ দেশে নাই?’
একই ভাবে উপজেলার গণপতিপুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম জানান, ‘অভাবের তাড়নায় ছেলে মেয়ে নিয়ে ঠিকমত খাওয়া হচ্ছে না। কিন্তু ব্র্যাকের পি.ও দের টাকার কিস্তির চাপে বাড়ী ছেড়ে পালানো ছাড়া কোন পথ দেখতে পারছি না। কোন এন.জি.ও কিস্তি আদায় করছে না, অথচ ব্র্যাক ঘরে ঘরে যেয়ে কিস্তি আদায় করছে। ব্র্যাক কর্মীরা প্রত্যন্ত গ্রামে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর মূল কারণ।’
সরকারের নির্দেশ অমান্য করে গ্রামে কিস্তি আদায় করতে আসা ব্র্যাকের একাধিক পি.ও দের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা অল্প টাকা বেতনে চাকুরি করি। আমাদেরকে প্রতিষ্ঠান এমন ভাবে কিস্তি আদায়ের জন্য চাপ দিচ্ছে, যে চাকুরি ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ দেখছি না। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে চাকুরি ছেড়ে বউ বাচ্চা নিয়ে যাব কোথায়? এই জন্য বাধ্য হয়ে কিস্তি আদায় করতে হচ্ছে। যদি অন্য কোন উপায় থাকত, তাহলে এই জনদূর্ভোগে চাকুরি না থাকলেও, কিস্তি আদায় করতে বের হতাম না।’
এ ব্যাপারে ব্র্যাকের সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি আশরাফ হোসেনের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি কিস্তি আদায়ের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, ‘যদি কোন কর্মী কিস্তি আদায় করে থাকেন তাহলে প্রমান সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)