তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করলেন স্বামী, থানায় মামলা
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঢোলারহাট ইউনিয়নে খাবারে চুল পাওয়াকে কেন্দ্র করে স্ত্রীকে মারধর করে মাথা ন্যাড়া করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এঘটনায় বৃস্প্রতিবার (৭এপ্রিল) রুহিয়া থানায় একটি মামল দায়ের করেছেন স্ত্রী সবুরা খাতুন। তবে মামলার করার পাঁচ দিন পার হয়ে গেলেও আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় হুমকিতে ভিকটিম।
অভিযুক্ত স্বামী এহসান মামুন ওই ইউনিয়নের মাধবপুর নওয়াপাড়া গ্রামের মৃত মহির উদ্দীনের ছেলে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হোসেন আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এহসান মামুন মারধর করে তার স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে। এর আগেও অনেকবার তার স্ত্রীকে নির্যাতন সে করেছে। আমার কাছে তার স্ত্রী বিচার চাইতে আসলে আমি থানার আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, একই ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের হামিদুর ইসলামের মেয়ের সঙ্গে ১৩ বছর আগে এহসান মামুনের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটি ৩ বছরের মেয়ে ও ১২ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য মামুন তার স্ত্রীকে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে আসছে।
গত ১৭ মার্চ দুপুরে মামুন ভাত খাওয়ার সময় থালায় একটি চুল পাওয়াকে কেন্দ্র করে তার স্ত্রীকে বাঁশেরলাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে মাথা ন্যাড়া করে দেন। তার পরেও দুই সন্তানের কথা চিন্তা করে মামুনের সঙ্গে সংসার করে আসছিলেন তিনি। এরই মধ্যে গত বুধবার দুপুরে তার স্ত্রীকে এক প্রতিবেশির সাথে কথা বলতে দেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে বাঁশের লাঠি দিয়ে সারা শরীরে এলোপাতাড়ি মারধর করে স্ত্রীর নাক ও হাতের গহনা খুলে নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়িতে থেকে বের করে দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। একটু সুস্থ্যবোধ করলে পরের দিন স্বামী মামুনের বিরুদ্ধে রুহিয়া থানায় মামলা দায়ের করে স্ত্রী সবুরা খাতুন।
নির্যাতনের বিষয়ে ওই গৃহবধূ বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার স্বামী আমাকে প্রায় সময় অমানবিক নির্যাতন করে। শুধু সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সংসার করছি। মামুন আমার পরিবারের কাছ থেকে এর আগে ৩০ হাজার টাকা যৌতুক নিয়েছে। এখন আবারও টাকা জন্য মা-বাবার কাছে বলার জন্য আমাকে চাপ দেয়। আমার বাবা অনেক গরিব। টাকা চাইতে পারব না জানালে মারধর করে আমার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়।
তিনি আরো জানান, মামলা তুলে না নিলে আমার দুই সন্তানকে হত্যা করে স্ত্রী সবুরা খাতুনের উপর হত্যা মামলা করবে বলে হুমকি দেন মামুন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। অন্যদিকে এব্যাপারে অভিযুক্ত এহসান মামুনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে কথা বলতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অখিল চন্দ্র রায় এর কার্যালয়ে গেলে তিনি জানান, আমি এব্যাপারে কিছুই বলব না। যে ওয়ার্ডে এঘটনা ঘটেছে সেখানে যান।
এ প্রসঙ্গে রুহিয়া থানার ওসি চিত্ররঞ্জন রায় বলেন, সবুরা খাতুন নামে এক গৃহবধূ স্বামী নির্যাতনের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)