নড়াইলে
‘কিচিরমিচির’ কৃত্রিম শব্দযন্ত্র ব্যবহারে পাখি শিকারের ফাঁদ


চারিদিকে পাখির ‘কিচিরমিচির’ শব্দ। কিছুটা থেমে থেমে, অবিকল পাখির মতো। তবে এই শব্দ অবিকল পাখির মতো মনে হলেও, প্রকৃতপক্ষে পাখি ডাকাডাকির শব্দ নয় এটা। ‘পাখি ধরা’র অভিনব অপকৌশল হিসেবে শব্দযন্ত্রের মাধ্যমে ‘কিচিরমিচির’ আওয়াজ সৃষ্টি করে।
বিভিন্ন প্রজাতির পাখিকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে জালের মধ্যে আটকে দেয়ার ফাঁদ হিসেবে রেকর্ডকৃত এই ‘কিচিরমিচির’ শব্দ ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত পাখি শিকার করা হচ্ছে।
পাখি শিকারিরা এই অপকৌশল ব্যবহার করে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইছামতি বিলে প্রতিরাতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার করে আশপাশের এলাকাগুলোকে বিক্রি করছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বিষয়টি জানতে পেরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) অভিযানে পাঠান।
ডিবি পুলিশের এএসআই আনিসুজ্জামানের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে নৌকাযোগে ইছামতির সুবিশাল বিলে প্রায় দুই ঘণ্টা অভিযান পরিচালিত হয়।
তবে বিলের পানিতে ঘন ঝোঁপ-ঝাড় ও আগাছা নৌকা চলাচলে ধীরগতির সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় লেগে যায়। এরই মধ্যে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সটকে পড়ে পাখি শিকারিরা। এ
তবে সেসময় পাখি শিকারের জাল, শব্দযন্ত্র, শিকারিদের আবাসস্থলসহ বিভিন্ন উপকরণ ধ্বংস করে দেয় পুলিশ এবং জাল থেকে একটি দেশি পাখি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, রাতভর চলে পাখি শিকার। তবে শেষরাতে জালে বেশি পাখি আটকা পড়ে। প্রতিরাতে ৩০ থেকে ৪০টি পাখি শিকারিদের জালে আটকা পড়ে। আকার ও প্রজাতি ভেদে প্রতিটি পাখি ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকায় বিক্রি হয়।
ডিবি পুলিশের এএসআই আনিসুজ্জামান জানান, নড়াইলের ইছামতি বিলে প্রায় ১০ একর জায়গা জুড়ে ৪ থেকে ৫ জন শিকারি বর্ষা মৌসুমে জালের ফাঁদ ও ‘কিচিরমিচির’ শব্দযন্ত্র ব্যবহার করে পাখি শিকার করে আসছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পাখি শিকারিরা পালিয়ে গেলেও উপকরণ ধ্বংস করা হয়েছে। কেউ যদি আবার পাখি শিকারের চেষ্টা করে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় আমরা পাখির অবাধ বিচরণ সৃষ্টি করতে চাই। পাখি শিকারের মতো অপকর্মে জড়িতদের ছাড় দেয়া হবে না।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
