নড়াইলের স্বর্ণজয়ী রহিমা চির নিদ্রায় শায়িত ক্রীড়াঙ্গনে শোক


এক সময়ের দেশসেরা ক্রীড়াবিদ রহিমা’র মৃত্যু সংবাদে নড়াইলের ক্রীড়াঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। শেষ বারের মত তাকে দেখতে শলুয়া গ্রামে যান ক্রীড়াঙ্গনের নেতৃবৃন্দ ও তার ভক্তরা। গত বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে তিনি নড়াইল সদরের মাইজপাড়া ইউনিয়নের শলুয়া গ্রামে নিজ বাড়িতে মারা যান।
তিনি দীর্ঘ দিন যাবত উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও ব্রেন টিউমার রোগে ভুগছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে স্বামী মোঃ আলী হাসান (৪৫) এবং ৯ম শ্রেণি পড়–য়া কন্যা ও শিশু পুত্র শোকাহত হয়ে পড়েছেন। মারাত্মকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন তার বাবা শেখ আব্দুল কাউয়ুম ও মা মায়া বেগম।
মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার বামনখালী গ্রামে বাবা মায়ের সাথেই কেটেছে তার শিশু ও কৈশরকাল। বামনখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে ৫ম শ্রেণি পাস করেন। এরপর এলাকার পুলুম কাজী সালিমা হক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন।
এ বিদ্যালয় হতেই এসএসসি পাস করেন। এ বিদ্যালয়ে পড়াকালে আন্ত:বিদ্যালয় ক্রিড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিশেষ ক্রিড়া নৈপূণ্য দেখিয়ে ব্যাপক পরিচিতি ও সুনাম অর্জন করেন। তিনি হ্যান্ডবল, ভলিবল খেলায় যেমন পরদর্শী ছিলেন, তেমনি একজন দক্ষ এ্যাথলেট ছিলেন।
১৯৯৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্কুল ও মাদারাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় একাধারে উচ্চ লাফ, দীর্ঘ লাফ ও দৌড় প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন। একাই ৩টি স্বর্ন পদক অর্জন করে দেশসেরা এ্যাথলেট নির্বাচিত হয়ে বিশেষ পুরস্কার অর্জন করেন। তৎকালিন মাগুরা জেলা প্রশাসক মোঃ নুরুজ্জামান খান তাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বর্নের চেন উপহার দিয়ে “সোনার মেয়ে” খেতাব দেন। শুরু হয় ক্রীড়াবিদ সোনার মেয়ের পথচলা
এসএসসি পাস করার পর নড়াইলের মাইজপাড়া কলেজে এইচএসসি তে ভর্তি হন। এইচএসসি পড়াকালে তার বিয়ে হয় নড়াইল সদরের মাইজপাড়া ইউনিয়নের শলুয়া গ্রামের মোঃ বসারত মোল্যার ছেলে আলী হাসানের সাথে।
বিয়ের পরও স্বামীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় চলতে থাকে তার ক্রীড়া চর্চা। কুয়েত প্রবাসি স্বামীর সাথে সুখেই তার সংসার চলছিল। অনুসন্ধানে জানা যায়, বাবা-মায়ের এক ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে রহিমা ছিলেন সবার ছোট। তার মেঝ বোন ফাতেমার হাত ধরে তার ক্রীড়াঙ্গনে প্রবেশ। সোনার মেয়ে রহিমা (৩৫) চলে গেলেন না ফেরার দেশে। শুক্রবার সকাল ৯টায় তারা নামাজে জানাজা শেষে নড়াইলের মাইজপাড়া ইউনিয়নের শলুয়া গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
