সাতক্ষীরায় পাওনা টাকা চাওয়ায় মিথ্যে মামলায় হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
সাতক্ষীরায় পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় আ’লীগ নেতা শফিউল আযম লেলিন কর্তৃক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তিকে মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি এবং খুন জখমের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন কালিগঞ্জ উপজেলার কোমরপুর গ্রামের মৃত হরিশচন্দ্র’র ছেলে কান্তি লাল দেবনাথ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি কালিগঞ্জের কৃষ্ণনগর বাজারের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। স্থানীয় ফরিদপুর গ্রামের মাহবুব মোড়লের মাধ্যমে শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান গাবুরা গ্রামের মৃত. নওশের আলী গাইনের ছেলে জি এম শফিউল আযম লেলিনের সাথে আমার পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায় মাহবুবের কথায় সরল বিশ্বাসে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে আমি ক্রমান্বয়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর শাখার মাধ্যমে লেলিনে’র নামীয় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ ঢাকার বারিধারা শাখায় ৬৭৭ নং হিসাবে ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর, ১৭ সালের ৫ জানুয়ারী, একই বছরের ১৪ ও ২২ ফেব্রুয়ারী ৪ টি জমা রশিদের মাধ্যমে ১২লক্ষ টাকা প্রদান করি।
কান্তি লাল দেবনাথ অভিযোগ করে বলেন, টাকা প্রদানের পর থেকে লেলিন আর আমার সাথে আলোচনা করতে চান না। বিষয়টি মাহবুবকে বললে সে আমাকে সাথে নিয়ে লেলিনের বাড়িতে গেলে লেলিন বলে “আমার ইচ্ছামত টাকা দিবো, তুই হিন্দু মানুষ বেশি বাড়াবাড়ি করলে লোকজন দিয়ে পিটিয়ে উচ্ছেদ করবো, দেশের প্রতিটি থানায় ২/৩টি মামলা দিয়ে ভিটেই ঘুঘু চরিয়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য করবো”। বিষয়টি বিষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রিয়াজ উদ্দীনকে জানালে তিনি মাহবুবকে টাকা পরিশোধের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। কিছুদিন পর প্রতারক লেলিন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক শ্যামনগর শাখার হিসাব নং ১২৮৭ চেক নং ৯৫৭১২৭১ এবং ২৯/১১/২০১৮ তারিখের ১০ লক্ষ টাকা উল্লেখপূর্বক একটি চেক প্রদান করে। আমি চেকটি নিয়ে ইসলামী ব্যাংক শ্যামনগর শাখায় জমা দিলে কর্তৃপক্ষ জানান, চেকে উল্লেখিত হিসাব নম্বারটি বহুদিন আগে বন্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি লেলিনকে জানালে তিনি দুই কিস্তিতে আমাকে ৪লক্ষ টাকা প্রদান করেন এবং ১০ লক্ষ টাকার চেকটি ফেরত না নিয়ে অবশিষ্ট ৮লক্ষ টাকা দিয়ে চেক ফেরত নিবেন বলে জানান। তিনি আরো বলেন, চেকে উল্লেখিত তারিখ উত্তীর্ণ হওয়ার পর ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজার মেসবাহউদ্দীন নগদ দুই লক্ষ টাকা ও লেলিন স্বাক্ষরিত ৬ লক্ষ টাকার অপর একটি চেক দেয়ার কথা বলে আমার কাছে ১০ লক্ষ টাকার চেকটি চায়। চেকটি দেয়ার সময় তিনি উল্টোপিঠে দুটি স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এসময় ব্যাংক ম্যানেজার লেলিন স্বাক্ষরিত ৬লক্ষ টাকার একটি চেক নগদ ১লক্ষ টাকা আমাকে প্রদান করেন। বাকী ১লক্ষ টাকা ১ সপ্তাহের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও আজও পর্যন্ত দেয়নি।
তিনি আরো বলেন, উক্ত ৬লক্ষ টাকার চেকটি বারিধারা ইসলামী ব্যাংকে পাঠালে সেটি ডিজঅনার হয়ে ফেরত আসে। আমি নিরূপায় হয়ে আদালতে চেক ডিজঅনারের মামলা দায়ের করি। লেলিন উক্ত মামলায় হাজির না হয়ে উল্টো ঢাকার বারিধারা ডিসি কাঁচাবাজার এলাকায় তার কাছ থেকে একটি চেক চুরি করেছি মর্মে ঢাকা সিএমএম কোর্টে মিথ্যে একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় হয়রানি করার জন্য ছোট ছোট দিন ফেলে আমাকে দিশেহারা করে তুলেছে। কান্তি লাল দেবনাথ বলেন, আমি লাভের আশ্বাসে জীবনের সঞ্চিত অর্থ তার হাতে তুলে দিয়ে নিজে পথে বসে গিয়েছি। এই প্রতারনার ঘটনার সাথে ব্যাংকের ম্যানেজার, মাহবুব এবং লেলিন সকলেই জড়িত। তারা বিভিন্ন এলাকার অসহায় নিরিহ মানুষের কাছ থেকে মিথ্যে আশ্বাসে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে প্রতারনা করে। পরবর্তীতে টাকা ফেরত চাইতে গেলে মিথ্যে মামলা, হামলা, খুন-জখমসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে। এছাড়া লেনিন আ’লীগের দলীয় পরিচয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। বিশেষ করে দলের উর্দ্ধতন নেতাদের সাথে ছবি তুলে তা দেখিয়ে লোকের বিশ্বাস স্থাপন পূর্বক প্রতারনায় তার মুল ব্যবসা।
তিনি লেলিনের কাছ থেকে পাওনা টাকা উদ্ধার এবং মিথ্যে মামলার দায় হতে অব্যহতি পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ করেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)