সাতক্ষীরায় মৎস্য ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি
পূর্বশত্রুতার জেরে মৎস্য ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এতে করে প্রায় ৬০ বিঘা জমির মৎস্য ঘেরের প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি সাতক্ষীরা সদরের লাবসা ইউনিয়নের শুল্কীর বিলে।
সাতক্ষীরা সদর থানায় সোমবারের (১৩ জুন) লিখিত অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, লাবসা ইউনিয়নের কৈখালি গ্রামের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলি হোসেন সরদারের স্ত্রী মোছা: নাছিমা খাতুন নিজে বাদী হয়ে তার বড় ছেলের ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ মেরে ফেলার দায়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, কৈখালি গ্রামের মৃত আনছার আলীর পুত্র আমজাদ হোসেন (৪৬), মৃত এসএম সরদারের পুত্র ইমান হোসেন (৪০), আমজাদ হোসেনের পুত্র আনারুল ইসলাম (২৫) এবং অজ্ঞাত ২/৩ জন ১৩ জুন (সোমবার) রাত ২ টার সময় বাদী নাছিমা খাতুনের বড় ছেলে জুলফিকার আলীর ৬০ বিঘা মৎস্য ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে ঘেরের সব মাছ মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পাশাপাশি বসবাসের কারনে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদিদের সাথে বাদিদের মনোমালিন্য চলে আসছিলো। শত্রুতার জের ধরে ৬০ বিঘা জমির মৎস্য ঘেরের প্রায় দুইশত মন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিষ প্রয়োগে মেরে ফেলেছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার মত। বর্তমান মৌসুমে মৎস্যঘেরটি চাষের জন্য মৎস্য ঘেরের সর্বত্র পানি শুকিয়ে সব মাছ ঘেরের পুকুরে রাখা হয়। বাদির ছেলে জুলফিকার আলী আত্বীয়ের বাড়ি থাকার কারনে রাতে পাহারা দেয়ার জন্য একই গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে মুক্তাদির হোসেনকে রাতে ঘের পাহারা দেয়ার জন্য বলা হলে সে রাতে ঘেরের বাসায় অবস্থান করে। রাত আনুমানিক ২ টার দিকে সে নাছিমার কাছে ফোন করে বলে যে মৎস্য ঘেরের মাছ পুকুরে লাফালাফি করছে। সংবাদ পেয়েই নাছিমা খাতুন ও তার বড় ছেলে জুলফিকার আলীর স্ত্রী মুক্তি সুলতানা রানীকে সাথে নিয়ে হাতে টর্চ লাইট নিয়ে বাড়ি থেকে মৎস্য ঘেরের দিকে রওনা হয়। তারা মৎস্য ঘেরের পাশাপাশি ঘেরের বেঁড়িতে পৌঁছালে আমজাদ হোসেন, ইমান হোসেন, আনারুল ইসলাম সহ ২/৩ জনকে ঘেরের বেঁড়ি থেকে দ্রুত নেমে যেতে দেখেন। হাতে থাকা টর্চ লাইট মেরে বিবাদিদেরকে পরিষ্কারভাবে দেখে চিনতে পারেন। তারপর তাদের ডাকচিৎকারে পার্শ্ববর্তী মৎস্য ঘেরের মালিক জিয়াদ আলী, জাহাঙ্গীর সহ আরো লোকজন গিয়ে ঘটনাটি দেখেন।
সোমবার (১৩ জুন) সকালে ঘটনাস্থলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে যে, ওই মৎস্য ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে কয়েক লক্ষ টাকার মাছ ক্ষতি করেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত আলিম, রশিদ, জাহিদ, মোস্তাফিজুর সহ আরো অনেকেই বলেন আমজাদ হোসেন, ইমান হোসেন, আনারুল ইসলাম সহ আরো কয়েকজন মিলে শত্রুতার জের ধরে রাতের আঁধারে মৎস্য ঘেরে বিষ প্রয়োগ করেছে বলে তাদেরও ধারণা।
সোমবার সকালেই বাদির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বিশ্বজিত অধিকারীর নির্দেশে এএসআই মো. রওশন আলী সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান মৎস্য ঘেরে কয়েক লক্ষ টাকার মাছ বিষ প্রয়োগ করে মারা হয়েছে। যে বা যারাই করুক না কেনো তদন্ত করে দোষিদের আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়া এএসআই ঘটনার আলামত হিসাবে মৃত মাছ ও ঘেরের পুকুরের পানি থানায় যায় থানায়।
এদিকে সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বিশ্বজিত অধিকারী জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তদন্ত চলমান রয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে সুষ্ঠু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
বাদি নাছিমার দাবি বিনা কারনে তাদের মৎস্য ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে যে ক্ষতিসাধন করা হয়েছে তার সুষ্ঠু বিচার চাই। যেনো একটি বিরল ঘটনা হয়ে থাকে সঠিক ও সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে সেটাই প্রত্যাশা বাদির।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)