সাতক্ষীরায় লাইফ ইন্সুরেন্সে মৃত্যু ঝুঁকির টাকা না দিয়ে তালবাহানার অভিযোগ


সাতক্ষীরায় মেটলাইফ ইন্সুরেন্স আলিকো মোড়ল এজেন্সি সাতক্ষীরা কর্তৃক মৃত্যু ঝুঁকির টাকা না দিয়ে তালবাহানার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় প্রয়াত সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া লঙ্করপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুস সেলিমের স্ত্রী তানজিমা বেগম সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তানজিমা বেগম বলেন, আমার স্বামী সাতক্ষীরা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর (সাবেক প্যানেল মেয়র) ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি জীবদ্দশায় ২০১৮ সালের দিকে মেটলাইফ ইন্সুরেন্স আলিকো মোড়ল এজেন্সির মাঠকর্মী রিজিয়া খাতুন অনুরোধ করে বলেছিলেন মামা প্রতিবন্ধী পুত্রের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পলিসিটা করেন। রিজিয়ার অনুরোধে আমার স্বামী ৫ লক্ষ টাকার একটি পলিসি মৃত্যু ঝুঁকির নিয়ে খোলেন। সেসময় আমার স্বামীর ডান পায়ের সমস্যা ছিলো। এ নিয়ে ভারতে চিকিৎসাও করানো হয়েছে। সেসময় ইন্সুরেন্স কোম্পানির প্রতিনিধি রিজিয়া খাতুনকে পায়ের সমস্যার বিষয়ে অবগত করালে তিনিসহ তার উর্দ্ধতন কর্মকর্তা এজেন্সি ম্যানেজার মোড়ল কামরুজ্জামান বলেছিলেন কোন সমস্যা নেই এবং মেটলাইফ ইন্সুরেন্স আলিকো মোড়ল এজেন্সির নিয়ম অনুযায়ী মেডিকেল চেকআফসহ পলিসি করার ৩ বছরের মাথায় গত ২৬ ডিসেম্বর’২১ তারিখে আমার স্বামী কিডনী জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন। স্বামী মারা যাওয়ার দিনই মেটলাইফ ইন্সুরেন্স আলিকো মোড়ল এজেন্সির মাঠকর্মী রিজিয়া খাতুন আমার স্বামী পলিসির সকল ওরিজিনাল কাগজপত্র নিয়ে যায় এবং বলেন দ্রুত আমার স্বামীর টাকা পরিশোধ করা হবে। কাগজপত্র প্রেরণের ১৫ দিন পর ঢাকা থেকে আল আমিন নামের একজন মেটলাইফ আলিকো ইন্সুরেন্স এর প্রতিনিধি আমাদের বাড়িতে আসেন। এসে স্বামীর চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখে চলে যান। কিন্তু প্রায় দুইমাস অতিবাহিত হলেও টাকা না দিয়ে তালবাহানা শুরু করেন। গত ৯ ফেব্রæয়ারি ২২ তারিখে কোম্পানি থেকে একটি চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়েছে আমার স্বামী পলিসি করার পূর্ব থেকেই অসুস্থ ছিলেন। তিনি ভারতে একাধিকবার চিকিৎসা করিয়েছেন। ফলে বীমা পলিসির নীতি ভঙ্গ হয়েছে। অথচ আমার স্বামীর ডান পায়ের সমস্যা ছিলো। তিনি পায়ের রোগে মারা যাননি। কিডনী জনিত রোগে মারা গেছেন। যার সকল কাগজপত্র আমাদের কাছে আছে। সে সময় মাঠকর্মী রিজিয়া খাতুন বিষয়টি জেনেছিলেন এবং এজেন্সি ম্যানেজার মোড়ল কামরুজ্জামানকেও অবগত করিয়েছেন। এমনকি সে সময় তারা আমার স্বামীর মেডিকেল চেকআপ করিয়েছিলেন। তাদের কোম্পানির নিয়ম হচ্ছে ইন্সুরেন্স করাতে হলে অবশ্যই মেডিকেল চেক আপ করতে হবে। যদি সমস্যা ছিলো তাহলে সে সময় কেন তারা ইন্সুরেন্স করালেন। আর তাছাড়া আমার স্বামী ২০২১ সালের মার্চ মাসের ৩০ তারিখে অসুস্থ হওয়ার পরে আমরা জানতে পারি তিনি কিডনী রোগে আক্রান্ত। আমার স্বামী এমন মারাত্মক অসুস্থ্যও ছিলেন না। তিনি ২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারীতে পৌরসভা নির্বাচনে ১নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনও করেছিলেন। তিনি মারাত্মক অসুস্থ্য হলে নির্বাচনে কখনোই অংশ নিতেন না। আসল কাগজপত্র নিয়ে গেলেও এখন আর কোন সহযোগিতা তো দূরের কথা। এজেন্সি মোড়ল কামরুজ্জামান ও তার মাঠকর্মী রিজিয়া খাতুন এবিষয়টি পুরোপুরি এড়িয়ে যাচ্ছেন। এমনকি কাগজপত্র গুলোর ফটোকপিও দিচ্ছেন না। তারা এখন শুধু মাত্র আমার স্বামীর জমাকৃত টাকা টাই ফেরত দিতে চান। লাইফ ইন্সুরেন্স যে কারনে করা হয় বা মানুষ করে। মৃত্যু ঝুঁকি। সেই ঝুঁকির টাকা দিতে চান না। আমি বর্তমানে স্বামীকে হারিয়ে সন্তানদের মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমাদের মানসিক প্রতিবন্ধী একমাত্র ছেলেকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
এই সংকটকালে তিনি স্বামীর লাইফ ইন্সুরেন্সের মৃত্যু ঝুঁকির টাকা পেতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এসময় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
